বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর গুডস হিলের বাসায় তান্ডব চালিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগ নেতা আবু সাদাত সায়েমের নেতৃত্বে শতাধিক ছাত্রলীগ নেতাকর্মী লাঠি, রড, কিরিচ ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বুধবার রাত ৮টার দিকে এ হামলা চালায়। এ সময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বিভিন্ন মডেলের ৮-৯ টি গাড়ী এবং বাসার দরজা জনালা কাঁচসহ মুল্যবান জিনিসপত্র ভাঙচুর ও তছনছ করে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছে। এতে বাঁধা দেওয়ায় নিরাপত্তাকর্মীদেরও বেদম মারধর করে। গুডস হিলের নিরাপত্তা কর্মী মুজিবর রহমান জানান, রাত আটটার দিকে প্রায় দেড়শ ছাত্রলীগ কর্মী জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে বাড়ীর গেইট ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে। গেইট পোস্টে থাকা টেলিফোন এবং তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনটি ভেঙ্গে ফেলে।টেলিফোন এবং তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনটি ভেঙ্গে ফেলে।
টেলিফোন এবং তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনটি ভেঙ্গে ফেলে।
বাধা দিলে হামলাকারীরা তাকে মারধর করে। এরপর তারা পাহাড়ের উপরে গিয়ে বাসার সামনে পার্কিং করে রাখা বিভিন্ন মডেলের ৮-৯ টি গাড়ী, বাসার দরজা জানালা, মুল্যবান জিনিসপত্র ভাঙচুর করে। বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে ছাত্রলীগ কর্মীরা বাসার নিরাপত্তায় থাকা নুরুল আফছার, ইকরাম, জাহেদকেও মারধর করে। নুরুল আফছার জানান, ছাত্রলীগ কর্মীরা লাঠি, রড, কিরিচ ও হকিস্টিকসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এ হামলা চালায়। এসময় তারা বেশ কিছু মুল্যবান কাগজ পত্র পুড়িয়ে দেয়। ভাঙচুর, কাগজপত্র পুড়ানোর সময় তারা জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে উৎসব করে। নিরাপত্তা কর্মী জাহেদ বলেন, ঘটনার সময় চকবজার থানা ও কোতোয়ালী থানার টহল পুলিশের কাছে ফোন করে সাহায্য চাইলেও তারা এগিয়ে আসেনি। রাত দশটার পর কোতোয়ালী থানার কয়েকজন পুলিশ বাড়ির সামনে দিয়ে গাড়ি নিয়ে টহল দিয়ে চলে যায়। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কোতোয়ালী থানার ওসি মো. মহসীন বলেন, হামলার খবর শুনেছি। তবে ওদের কেউ থানায় কিছুই জানায়নি। কেউ অভিযোগও করেনি। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগ নেতা আবু সাদাত সায়েম এ প্রসঙ্গে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দিয়ে বক্তব্য রাখার প্রতিবাদে বুধবার রাতে গুডস হিলের পাস দিয়ে মিছিল করে যাওয়ার সময় সাকা-গিকার বাড়ী থেকে ইটপাটকেল মারে। এতে ছাত্ররা উত্তেজিত হয়ে গুডস হিলে ভাঙচুর করেছে। উল্লেখ্য, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩৭তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে চট্টগ্রামের ফটিকছিড়িতে স্থানীয় বিএনপির আয়োজিত আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী। গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, শেখ মুজিবের মৃত্যুর পর ইন্নালিল্লাহ পড়ার লোক ছিলনা। বর্তমান শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের অবস্থা তার চেয়েও ভয়াবহ হবে। ক্রস ফায়ারের নামে এত মানুষ হত্যার দায় তাকে নিতে হবে। এ ঘটনার পর বুধবার সন্ধ্যায় ফটিকছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জামাল উদ্দিন বাদি হয়ে গিয়াস কাদেরসহ ৬০-৭০জন বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন। এ নিয়ে ফটিকছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করছেন। আর এ জের ধরে বুধবার রাতে নগরীর গুডস হিলেও হামলা চালায় ছাত্রলীগ। তবে ফটিকছড়ি উপজেলা বিএনপির দাবী, মিডিয়ায় গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর বক্তব্যকে বিকৃতভাবে প্রচার করা হয়েছে। তিনি কটুক্তি কিংবা হুমকিমূলক কোন বক্তব্য দেননি।