বিশ্বকাপ আসর সামনে রেখে ব্যবসা জমেছে ক্রীড়া সামগ্রী প্রস্তুতকারকদেরও। এ লড়াইয়ে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাডিডাস ও নাইকি। এবার নাইকির তুলনায় এগিয়ে অ্যাডিডাস। ১৯৭০ সাল থেকে বিশ্বকাপের বল সরবরাহ করছে অ্যাডিডাস। ২০৩০ সাল পর্যন্ত বিশ্ব ফুটবল সংস্থার (ফিফা) সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ তারা। এবারের বিশ্বকাপের স্পন্সরও জার্মান এই প্রতিষ্ঠান।তবু ব্রাজিলে ২০১৪’র বিশ্বকাপে মার্কিন প্রতিষ্ঠান নাইকির কাছে হেরে গিয়েছিল অ্যাডিডাস। অংশগ্রহণকারী দেশগুলো জার্সি বানানোর ক্ষেত্রে নাইকিকেই বেশি পছন্দ করেছিল। তবে এবার ৩২ দলের মধ্যে ১২টি অ্যাডিডাসের জার্সি গায়ে তুলছে। যাদের মধ্যে রয়েছে জার্মানি, স্পেন, আর্জেন্টিনা ও রাশিয়া। আর নাইকি পেয়েছে ১০টি দলের দায়িত্ব। ব্রাজিল, ফ্রান্স ও ইংল্যান্ড আছে এদের মধ্যে।
২০১৪ বিশ্বকাপে ১ কোটি ৪০ লাখ বল বিক্রি করেছিল অ্যাডিডাস। আর জার্সি ৮০ লাখ। এবার নাইকিকে পেছনে ফেললেও ২০১৪’র আসরের মতো লাভের আশা করছে না অ্যাডিডাস। প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী ক্যাসপার রস্টেড বলেন, ‘আর্থিক দিক থেকে রাশিয়া বিশ্বকাপ চার বছর আগের ব্রাজিল বিশ্বকাপের মতো লাভজনক হবে না। তবু আমরা এর অপেক্ষায় আছি। বিশ্বজুড়ে আমাদের ব্র্যান্ডের পরিচিতি বাড়ানোর দারুণ উপায় এটা।’ জার্সির যুদ্ধে পিছিয়ে গেলেও হাল ছাড়ছে না নাইকি। নাইকির প্রধান নির্বাহী মার্ক পার্কার বলেন, বিশ্বকাপ খেলার জগতে অনেক শক্তিশালী একটা ঘটনা। আমরা চাইছি এটা আরেকটু বাড়াতে। নাইকি সে আশা করতেই পারে। এবারের বিশ্বকাপে ফুটবলারদের ৬০ ভাগই পায়ে দেবেন নাইকির বুট। সবার আগেই আছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। নেইমারও পায়ে দেবেন নাইকির বুট। আর্জেন্টাইন তারকা লিওনেল মেসি আবার অ্যাডিডাসের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। জার্মানি ও স্পেন দলের জার্সি অ্যাডিডাসের হলেও অর্ধেকের বেশি খেলোয়াড়ই পায়ে দেবেন নাইকির বুট। শুধুমাত্র ইরান দলের কাউকেই মজাতে পারেনি নাইকি। পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন পদক্ষেপে খেপেছে ইরান।
তাই ইরান দল নাইকির ক্রীড়া সামগ্রী ছাড়াই বিশ্বকাপে যাচ্ছে। ২০১৪ বিশ্বকাপে ফুটবল-পণ্য বিক্রি করে ২১০ কোটি ইউরো (২০ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা) আয় করেছিল অ্যাডিডাস। ২০১৬ সালে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপকে ঘিরে জার্মান প্রতিষ্ঠানের আয় ২৫০ কোটি ডলার ছুঁয়েছিল। নাইকিও ফুটবল থেকে ২০০ কোটি ডলার আয় করেছে গত আসরে। কিন্তু তাদের প্রবৃদ্ধিটা প্রতিষ্ঠানের মূল আয়ের তুলনায় অনেক কম। এবারের বিশ্বকাপ থেকে তাই ২০১৪ সালের মতো কিছু আশা করছে না দুই প্রতিষ্ঠানই। সে তুলনায় মাত্র ৪টি (২০১৪ সালে ছিল ৮টি) দলের জার্সি বানিয়েও তৃপ্ত অপর জার্মান প্রতিষ্ঠান পিউমা। আর পাইরাল দাধানিয়া নামক এক বিশ্লেষক বলেন, ‘প্রতিযোগিতা চলার সময় কিংবা শেষ হওয়ার পর বিক্রি বাড়া কমা পুরোটাই নির্ভর করে কোন দল বিশ্বকাপে কত দূর গিয়েছিল তার ওপর।’ ২০১৪’র বিশ্বকাপে অ্যাডিডাসের আয়ে চ্যাম্পিয়ন জার্মানির ৩০ লাখ জার্সি বিক্রি বড় ভূমিকা রেখেছিল।