মুন্সিগঞ্জে প্রকাশক শাহজাহান বাচ্চু হত্যার প্রধান আসামি আবদুর রহমান ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। গ্রেপ্তারের দুদিন পর গতকাল বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে সিরাজদিখান উপজেলার খাসমহল বালুচর এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটে। মুন্সিগঞ্জ জেলার গোয়েন্দা শাখার কর্মকর্তা (ডিআই-১) মো. নজরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ২৪ জুন পুলিশের কয়েকটি টিম একত্রে অভিযান চালিয়ে গাজীপুর থেকে আবদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে। তাঁর অন্য সহযোগীদের ধরার জন্য ২৭ জুন রাত একটার দিকে সিরাজদিখান খাসমহল বালুচর এলাকায় আবদুর রহমানের ভাড়া বাসায় তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তাঁর সহযোগীরা পালিয়ে যায়। আবদুর রহমানকে নিয়ে ফেরার সময় তাঁর সহযোগীরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। পুলিশ পাল্টা গুলি ছুড়লে আবদুর রহমান ঘটনাস্থলেই নিহত হন। এ সময় সিরাজদিখান থানার তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। তাঁরা হলেন উপপরিদর্শক (এসআই) মো. দেলওয়ার হোসেন, মো. হাসান ও কনস্টেবল মোশাররফ হোসেন।
পুলিশের ভাষ্য, দুই মাস ধরে বালুচর এলাকায় আবদুর রহমান ও তাঁর সহযোগীরা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি হ্যান্ড গ্রেনেড, একটি আগ্নেয়াস্ত্র ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।
১১ জুন সন্ধ্যায় মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার কাকলদি গ্রামে আড্ডা দেওয়ার সময় শাহজাহান বাচ্চুকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তিনি মুন্সিগঞ্জ জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক। বিশাখা প্রকাশনী নামে যে প্রকাশনা সংস্থা চালাতেন, সেখান থেকে অন্তত ৬০০ কবিতার বই বের করেছেন। ফেসবুকে লিখে তিনি নিজের মতাদর্শ প্রকাশ করতেন।
ঘটনার পরদিন শাহজাহান বাচ্চুর স্ত্রী আফসানা জাহান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা চারজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় ২৪ জুন আবদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় পুলিশ জঙ্গিদের সন্দেহ করছিল। (http://www. prothomalo. com/bangladesh/article/ 1508636 /) ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর লেখালেখির ধরন বা প্রোফাইল থেকে ধারণা করা যায়, আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের বা আনসার আল ইসলামের লক্ষ্যবস্তু হতে পারেন তিনি। তবে আনসারুল্লাহ জঙ্গিরা সাধারণত হত্যার ক্ষেত্রে ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করে। হামলায় আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার ও ব্যবহৃত হাতে তৈরি গ্রেনেডের (আইইডি) ধরন দেখে মনে হচ্ছে, এটা জেএমবির (পুরোনো) কাজ। বিষয়টি নিয়ে এখনো ধন্দে রয়েছেন তাঁরা। তবে এটাকে জঙ্গিদের কাজ বলেই ভাবছেন তাঁরা।