ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা মাদকাসক্ত কিনা তা পরীক্ষা করার কথা ভাবা হচ্ছে। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে ড্রাগ টেস্ট করে শিক্ষার্থী ভর্তি করার বিষয়ে ভাবছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) প্রশাসন। বললেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম।
বৃহস্পতিবার নবীন শিক্ষার্থীদের বরণে প্রবেশিকা অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় একথা বলেন তিনি।
অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বলেন, আমাদের প্রধান মেডিকেল কর্মকর্তা আমাকে একটি ভয়ংকর তথ্য জানিয়েছেন। রাতের বেলা মাদক নিয়ে চিকিৎসাকেন্দ্রে অনেক এমন শিক্ষার্থী আসে যারা ওখানে ভাংচুর করতে চায়, ডাক্তারদের মারতে চায়। একারণে আমাদের পার্টটাইম ডাক্তাররা রাতের বেলা এখন আর ডিউটি করতে চান না। নারী ডাক্তারদের তো দেয়া সম্ভবই না।
ভিসি বলেন, একটা ছেলে মেধাবী, ভাল রেজাল্ট নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেল তারপর ড্রাগ টেস্টে বাদ পড়ে গেল। নাকি ভর্তি নিয়ে পরে আমরা তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেব! কোনটা বেশি মানবিক হবে? এ কারণে এ বিষয়ে আমরা তড়িঘড়ি করছি না, আরও ভাবছি। তোমরাও ভাব, কোনটা ভালো হয়।
উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান চর্চার স্বাধীন উন্মুক্ত পরিবেশ। এর মানে এই না যে তোমরা রাত ৩টা পর্যন্ত সুপারিতলায় বসে আড্ডা দেবা। সুপারিতলায় কোনও জ্ঞান চর্চা হয় না। ওখানে কোনও পড়ালেখা হয় না। পড়ালেখা হলে হলের মধ্যেই হয়। ওখানে যা হয় তা তোমাদের ফ্যামিলি বাবা-মা কখনই মেনে নেবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা তোমাদের বাবা-মায়ের মতই। আমরাও মেনে নিতে পারি না। শৃঙ্খলা সবসময় শৃঙ্খল নয়।
এদিকে পূর্বঘোষিত সিন্ধান্ত থেকে সরে এসে প্রবেশিকা অনুষ্ঠান প্রতিহত না করে বর্জন করেছে উপাচার্য বিরোধী ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’ এর একাংশ। তবে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি প্রশাসনিক ভবন অবরোধ অব্যাহত রাখেন তারা এবং দুপুরে কর্মসূচি সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলন করেন শিক্ষকরা।
বেলা ১১ টায় প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি এবং সভাপতির উপস্থিতিতে প্রবেশিকা অনুষ্ঠান শুরু হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিষ্ট্রার রহিমা কানিজ প্রত্যেক অনুষদের নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিতে স্ব-স্ব অনুষদের ডীনবৃন্দকে আহ্বান জানান। এরপর স্ব-স্ব অনুষদের ডীনবৃন্দ নবীন শিক্ষার্থীদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে সাধরে বরণ করে নেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান। আরও বক্তব্য রাখেন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শেখ মঞ্জুরুল হক, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক বশির আহমেদ, প্রক্টর শিকদার মো. জুলকারনাইন, ছাত্রকল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. রাশেদা আখতার।