শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণে সরকারের আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। কোটা আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর ভর করে সরকার হটানোর অপচেষ্টা করা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।শুক্রবার (০৩ আগস্ট) সকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সম্পাদকমণ্ডলীর সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনতে সরকারের কোনো গাফিলতি নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অনুপ্রবেশ করে বিএনপি ও তার সাম্প্রদায়িক দোসররা সরকার হটানোর নিরাপদ পথ খুঁজছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নিয়ে তা কার্যকরেও সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছে উল্লেখ করে তাদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ারও আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের উদ্বেগ হচ্ছে, আজকে নিরাপদ সড়কের আন্দোলনের মধ্যে বিএনপি এবং তার সাম্প্রদায়িক দোসররা সরকার হটানোর নিরাপদ সড়ক খুঁজছে।’ তিনি বলেন, ‘এই বিষয়টাকে নিয়ে নোংরা রাজনীতি করবেন না।’
শোকের মাসে দলীয় কার্যক্রম যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে পালনে বিভিন্ন নির্দেশনা দিতেই দলের মহানগর ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের নিয়ে আয়োজন করা হয় এই যৌথ সভা। পরে সংবাদ সম্মেলনে বারবারই উঠে আসে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গ। তাদের সব দাবি মেনে নিয়ে সরকার তা কার্যকরেও পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছে বলে জানান কাদের।
তিনি বলেন, ‘আমাদের নেত্রীর নির্দেশে কোনো প্রভোকেশনে কেউ যেন ফাঁদে না পড়ে, সে ব্যাপারে আমাদের নেতাকর্মীদের সতর্ক করে দিয়েছি। শুধু তারা লাখ রাখবে কারা কারা এই আন্দোলনের মধ্যে অনুপ্রবেশ করছে এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চক্রান্ত করছে।’
এই আন্দোলনে বহিরাগতরা যে প্রবেশ করেছে, গেল কয়েক দিনে নোংরা স্লোগান ও অনেককে হেনস্তার মাধ্যমে তার প্রমাণ মিলেছে বলেও জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে রাজনীতি প্রবেশ না করানোর অনুরোধ জানিয়ে নিজ দলের নেতাকর্মীদের শান্ত থাকার নির্দেশ দেন তিনি।
দাবি আদায় হয়ে যাওয়া ও জনদুর্ভোগের কথা মাথায় রেখে শিক্ষার্থীদেরও ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।
গত ২৯ জুলাই রাজধানীর কুর্মিটোলার বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের বাসের চাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী নিহত হয়। এ ছাড়া আহত হয় বেশ কয়েকজন। নিহত শিক্ষার্থীরা হলো শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী দিয়া খানম মিম ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম রাজীব।
এ ঘটনার পর রাজধানীসহ সারা দেশে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে। তারা নিরাপদ সড়কসহ নয় দফা দাবি তুলে করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব দাবি মেনে নিয়ে বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছেন।
এরই মধ্যে কুর্মিটোলায় নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে ২০ লাখ টাকার অনুদান দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাসচাপায় সহপাঠীদের মৃত্যুর পর রাস্তায় বিক্ষোভে ফেটে পড়ে শিক্ষার্থীরা। এরপর থেকে ঢাকার অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোয় বাস চলাচল একেবারেই কমে যায়। এমনকি আন্তঃজেলা বাস চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়।
তবে, আজ পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা সারা দেশে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে।