কুমিল্লায় এক ভণ্ড কবিরাজ ক্যানসারের চিকিৎসার নামে শামীম খান নামে এক রোগীকে ৬০টি গোলাপ জল খাওয়ায়। এতে ওই রোগীর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ওই ভণ্ড কবিরাজ আবুল কালামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সোমবার রাতে জেলার চান্দিনা উপজেলার বাড়েরা ইউনিয়নের ছাতাড্ডা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শামীম খান চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ উপজেলার পাঁচঘড়িয়া গ্রামের মাহবুব খানের ছেলে এবং কথিত জ্বিনের বাদশা ও ভণ্ড কবিরাজ আবুল কামাল জেলার চান্দিনা উপজেলার ছাতাড্ডা গ্রামের আব্দুল মমিনের ছেলে।
পুলিশ ও নিহতের পরিবারের লোকজন জানান, শামীম খান দীর্ঘদিন যাবৎ ক্যান্সার আক্রান্ত ছিলেন। চিকিৎসাও নিয়েছেন বিভিন্ন স্থানে। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত ফল না পেয়ে জেলার চান্দিনার ছাতাড্ডা গ্রামের কথিত জিনের বাদশা খ্যাত কবিরাজ আবুল কালামের নিকট আসেন। শামীম ও তার পরিবারের নিকট খবর ছিল ওই কবিরাজ ক্যান্সারসহ সব রোগের চিকিৎসা করেন। রোগীরাও ভালও হয়ে যান। সোমবার সেখানে আসার পর কবিরাজের নির্দেশে ক্যান্সার আক্রান্ত শামীমকে ১০৭টি গোলাপ জল এবং ৮টি গামছা আনার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়।
পরে কবিরাজ আবুল কালামের উপস্থিতে শামীম একে একে ৬০টি গোলাপ জল খাওয়ার পর কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়েন। এসময় ওই ভণ্ড কবিরাজ সবগুলো গোলাপ জল খেতে তাকে শারীরিক নির্যাতন শুরু করেন। একপর্যায়ে রোগী শামীম অচেতন হয়ে সেখানেই মারা যান।
এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা গণধোলাই দিয়ে ওই ভণ্ড কবিরাজকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। পরে ওইদিন রাত ১০টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে নিহতের মরদেহ উদ্ধার এবং ভণ্ড কবিরাজ আবুল কালামকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
কুমিল্লা সিভিল সার্জন ডা. মো. মজিবুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, ক্যান্সার চিকিৎসায় বাংলাদেশের সফলতা অনেক, কিন্তু মানুষ এখনও এতটা অজ্ঞ হয় কিভাবে? গোলাপ জ্বলে ক্যান্সার ভালো হওয়ার মতো কোনও উপাদান চিকিৎসা শাস্ত্রে আছে বলে আমার জানা নেই।
মঙ্গলবার দুপুরে চান্দিনা থানার ওসি মুহাম্মদ শামছুল ইসলাম স্বদেশ নিউজ 24 অনলাইনকে জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের মরদেহ উদ্ধার এবং ভণ্ড কবিরাজকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। মঙ্গলবার কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী রিনা আক্তার বাদী হয়ে ভণ্ড কবিরাজের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন।