পরিবেশ দূষণের কারণে বাংলাদেশে বছরে ৬.৫ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হচ্ছে। যা দেশীয় মুদ্রায় প্রায় ৫২ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশের দূষণ নিয়ে বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক মূল্যায়ন প্রতিবেদনে এ তথ্য ওঠে এসেছে। আজ রাজধানীর সোনারগাঁ হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ‘ইনহ্যান্সিং অপারচুনিটিজ ফর ক্লিন অ্যান্ড রেসিলেন্ট গ্রোথ ইন আরবান বাংলাদেশ, কান্ট্রি এনভায়রমেন্ট অ্যানালাইসিস ২০১৮’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বাংলাদেশে প্রতি বছর শহর অঞ্চলে যেসব মানুষ মারা যায় তার ২৮ শতাংশই মারা যায় পরিবেশ দূষণের কারণে। আর সারাবিশ্বের হিসেবে ১৬ শতাংশ। প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর রাজশ্রী পারালকার।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পরিবেশ দূষণে বাংলাদেশে অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ কারণে বাংলাদেশে প্রতিবছর ৫২ হাজার কোটি টাকা (৬.৫ বিলিয়ন ডলার) ক্ষতি হচ্ছে।যা ২০১৫ সালে বাংলাদেশের অর্জিত জিডিপির প্রায় ৩ দশমিক ৪ শতাংশের সমান।
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, বিপদজনক হারে বাংলাদেশে পরিবেশ দূষণ বাড়ছে। বাংলাদেশে বছরে যেসব মানুষ মারা যায় তার ২৮ শতাংশই পরিবেশ দূষণের কারণে। অথচ সারা বিশ্বে এই হার ১৬ শতাংশ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০১৫ সালে বাংলাদেশের শহর অঞ্চলে ৮০ হাজার মানুষ পরিবেশ দূষণের কারণে মারা যান।
অনুষ্ঠানে রাজশ্রী পারালকার বলেন, পরিবেশ দূষণের কারণে শহরগুলো অত্যন্ত ঝুঁকিতে রয়েছে। এই জন্য চরম মূল্য দিতে হচ্ছে। দূষণরোধে পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, এই দূষণ থেকে মুক্তি পেতে সঠিক নীতিমালা প্রণয়নের পাশাপাশি সচেতনতা বাড়াতে হবে।
অনুষ্ঠানে বন ও পরিবেশ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, আমরা পরিবেশ দূষণ নিয়ে সচেতন। এ বিষয়ের ২১০০ সালের ডেল্টা প্লান হাতে নিয়েছি। আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে কিন্তু ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য পরিবেশ সৃষ্টির কথা মনে রাখতে হবে। তিনি বলেন, লাইসেন্স না নিয়েই অনেকে ইটভাটা তৈরি করছে। পরিবেশ দূষণের জন্য ইটভাটা অনেকাংশে দায়ী। ঢাকা শহরের বায়ূ দূষণের ৫৮ শতাংশ হয় ইট ভাটা থেকে। মন্ত্রী বলেন, আমরা একটি পরিবেশ আইন করতে যাচ্ছি। সেটি বাস্তবায়ন হলে ইটভাটা এভাবে আর গড়ে উঠতে পারবে না। তবে আইনের বাইরেও জনসাধারণকে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে বলে জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশ্ব ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।