প্রশাসনে রদবদলের ঢালাও প্রস্তাব ইসি গ্রহণ করবে না: হেলালুদ্দীন

নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেছেন, প্রশাসনে রদবদলের মতো ঢালাও প্রস্তাব ইসি গ্রহণ করবে না। প্রত্যেকটি বিষয়ে কার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ, তা সুনির্দিষ্টভাবে বলতে হবে। তখন ইসি বিষয়টি তদন্ত করব, কী কারণে তার বদলি চায়। সবকিছু বিবেচনা করে ইসি সেভাবে সিদ্ধান্ত নেবে।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে হেলালুদ্দীন আহমদ এ কথা বলেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনে ‘লেভেলে প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরির অন্তরায় হিসেবে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে আজ মঙ্গলবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ইসিতে পাঁচটি চিঠি পাঠান। এসব চিঠিতে ইসি সচিব হেলালুদ্দীনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ ছিল বিএনপির।

হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ইসির কর্মকর্তারা জনপ্রশাসনের কর্মকর্তা, প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা। নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসলে নির্বাচন কমিশন বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

নির্বাচন কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গিয়ে দেখা করেছেন, এ বিষয়ে জানতে চাইলে হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, এ বিষয়ে আমরা অবহিত নই। যেহেতু একটি অভিযোগ এসেছে, আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পারি।

বিএনপি ইসি সচিবসহ কয়েকজন কর্মকর্তার বিচার চেয়েছে, এ বিষয়ে হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ইসির যেসব সিদ্ধান্ত হয়, সেই সিদ্ধান্তগুলো পালন এবং তা জানানোর জন্য মুখপাত্র হিসেবে সচিব সকল ধরনের কাজ করে থাকে। এখানে ইসি সচিবের আলাদা কোনো সত্তা নেই। ইতিমধ্যে যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছে, তার সবই ইসির। আর ইসির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দায়িত্ব সরকারের।

নির্বাচন কমিশন কেন রেফারির দায়িত্ব পালন করতে পারছে না, বাধাটা কী, এমন প্রশ্নের জবাবে হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ইসি একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। এখন পর্যন্ত যতগুলো সিদ্ধান্ত নিয়েছে, প্রত্যেকটি সিদ্ধান্ত কমিশন নিয়েছেন। এখানে কারও চাপে বা কারও সিদ্ধান্তে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ৮ নভেম্বর ৪৫টি জেলাতে ৪৫ জন সরকারি কর্মকর্তা এবং অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের মেন্টর নিয়োগ করা হয়েছিল। ১৩ নভেম্বর এই মেন্টর নিয়োগের আদেশটি স্থগিত করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এ বিষয়টি অনেক আগে থেকে প্রচলিত। এটি যেহেতু স্থগিত হয়ে গেছে, তাই এটি নিয়ে কথা বলার কিছু নেই। তিনি বলেন, ইসি এটি নিয়ে অবহিত ছিল না।

জনপ্রতিনিধিদের নিজ পদে বহাল থেকে নির্বাচন করার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, আইনগুলো নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব আইন নয়। স্থানীয় সরকার বিভাগের আইন। সেখানে উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা, জেলা পরিষদ এ সংক্রান্ত কোনো সুস্পষ্ট বিধান নেই যে একজন জনপ্রতিনিধি স্বপদে থেকে নির্বাচন করতে পারবে, না পদত্যাগ করে নির্বাচন করতে পারবেন। তিনি বলেন, যেমন সিটি করপোরেশনের মেয়রের বিষয়ে সুস্পষ্ট উল্লেখ আছে। সিটি করপোরেশন মেয়র যখন নির্বাচন করবেন, তখন তাকে পদত্যাগ করতে হবে। পদত্যাগ করে তাকে নির্বাচন করতে হবে। পৌরসভার মেয়রেরও পদত্যাগ করে নির্বাচন করার কথা। কিন্তু হাইকোর্টের একটি রায়ের কারণে স্বপদে থেকে পৌরসভা মেয়রেরা নির্বাচন করতে পারবে। অন্যান্য বিষয়ে আদালতের কোনো নির্দেশনা নেই, কোনো বিধানও নেই। যার কারণে আইন অনুবিভাগ থেকে একটি মত চাওয়া হয়েছে। এরপর ইসি সিদ্ধান্ত নেবে।

ইভিএম বিষয়ে ইসি কোনো সিদ্ধান্ত নিয়েছে কিনা, এ বিষয়ে জানতে চাইলে হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, এমন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *