নড়াইলের লোহাগড়ায় নিজ ছেলে ও ছেলের বৌ মিলে নির্যাতন করে বৃদ্ধ মা শেফালী রাণী রায়(৮২) কে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। ওই মা আশ্রয় নিয়েছিলেন বাড়ির পাশর্^বর্তী মন্দিরে। মঙ্গলবার(২৮মে) পোদ্দারপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। অসহায় শেফালী রাণীর স্বামী মৃত চিত্ত রঞ্জন রায়।
গ্রামবাসীরা জানায়, পোদ্দারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সাবেক কৃষি ব্যাংক ম্যানেজার বিত্তশালী শংকর কুমার রায় অকারনে নিজ মা শেফালী রাণী রায় কে মারপিট করতেন। শংকর রায়ের স্ত্রী কণা রাণীও শ^াশুড়িকে মারপিট করতেন। রাতভর নির্যাতনের পরে মঙ্গলবার(২৮ মে) ভোরে শংকর রায় ও তার স্ত্রী বৃদ্ধা মা শেফালীকে ঘর থেকে বের করে দেন। উপায়ন্তর না পেয়ে অসহায় মা আশ্রয় নেন পোদ্দারপাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরে। সরাদিনই শেফালীর দিন কেটেছে মন্দিরে। আস্তে আস্তে বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক জানাজানি হয়ে যায়। এক পর্যায়ে সাংবাদিকেরাও খবর পেয়ে ছুটে যান ওই মন্দিরে। সেখানে দেখেন অসহায় মা শেফালী এক বুক যন্ত্রণা নিয়ে মন্দিরের মেঝেতে শুয়ে আছেন। তিনি ছেলে ও ছেলের বৌ এর নির্যাতনের কথা স্বীকার করেন।
পোদ্দারপাড়া এলাকার কালু জানান, শেফালী রাণীর দুই ছেলে। বড় ছেলে শংকর রায় কৃষি ব্যাংক ফরিদপুর এলাকায় ম্যানেজার হিসাবে চাকুরি করেছেন। বর্তমানে অবসরে আছেন। অপর ছেলে বিশ^নাথ রায় যশোরে মোটর পার্টেসের ব্যবসা করেন। শেফালী রাণীর চার মেয়ে। কনিকা রায়, মিনতি রায়, মনিকা রায় ও ছবি রাণী রায়। মেয়েদের সকলেরই ভাল পাত্রস্থ হয়েছে। শংকর রায় পিতার রেখে যাওয়া প্রায় কোটি টাকা দামের পোদ্দারপাড়াস্থ দোতলা বাড়িতে বসবাস করেন। কিন্তু সেই কোটি টাকার বাড়িতে একটু আশ্রয় মেলেনি মা শেফালীর।
লোহাগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিকদার নজরুল ইসলাম জানান, শংকর সাহা নিজ মাকে মারপিট করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। ভোর থেকেই ওই মা মন্দিরে আশ্রয় নেয়।
শংকর রায় সাংবাদিকদের বলেন, মা রাগ করে বাড়ি থেকে বের হয়ে এসেছেন। আমি মাকে নিতে এসেছি। স্থানীরা বলছে, শংকর রায় নির্যাতন অব্যাহত রাখবেনে।
লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোঃ মোকাররম হোসেন বলেন, কোন অভিযোগ পাইনি। তবে, বিষয়টি যেহেতু মানবিক। অবশ্যই খোঁজ-খবর নিয়ে সঠিক তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নড়াইল প্রতিনিধি :
ইকবাল হাসান