রপ্তানি বাজারে বাংলাদেশের চামড়া শিল্পের বিপুল সম্ভাবনা কাজে লাগাতে একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে ‘চামড়া শিল্পনগরী, ঢাকায় ট্যানারি কারখানার চামড়া উৎপাদন পরিস্থিতি ও টেকসই উন্নয়নে প্রস্তাবনা’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে এই টাস্ক ফোর্স গঠন করা হবে।
“এ টাস্কফোর্স প্রতি সপ্তাহে চামড়া শিল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা করে এর উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে।”
সেমিনারটি বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ) এবং লেদার সেক্টর বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল (এলএসবিপিসি) যৌথভাবে আয়োজন করে।
সেমিনারে মন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, “সম্পূর্ণ দেশিয় কাঁচামালনির্ভর চামড়া শিল্পের অপার সম্ভাবনা থাকলেও এখনও তা পুরোপুরি কাজে লাগানো যায়নি। সরকার ইতোমধ্যে হাজারীবাগ থেকে সাভারের পরিবেশবান্ধব শিল্পনগরীতে ট্যানারি স্থানান্তরে সক্ষম হয়েছে। চামড়া শিল্পনগরীতে সিইটিপি স্থাপন, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
“টাস্কফোর্সের সিদ্ধান্তের আলোকে অবশিষ্ট কাজগুলোও বাস্তবায়ন করা হবে। এ লক্ষ্যে শিল্প মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিয়ে টিমওয়ার্কের ভিত্তিতে কাজ করছে।”
অচিরেই চামড়া শিল্পখাতে পাঁচ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) চেয়ারম্যান মো. শাহীন আহমেদের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ এবং শিল্পসচিব মো. আবদুল হালিম।
চামড়া শিল্প খাতে ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে মন্তব্য করে আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ অগ্রগতির ধারাকে আরও অনেক দূর এগিয়ে নিতে হবে। বিশেষ করে, পাদুকা ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানির বিশাল সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।
“এজন্য টাস্ক ফোর্স গঠনের পাশাপাশি দেশিয় চামড়া কাজে লাগাতে উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে দু’টি চামড়া শিল্পনগরী স্থাপনের বিষয়ে সরকার কাজ করছে।”
শিল্প সচিব মো.আবদুল হালিম বলেন, দেশিয় ট্যানারি শিল্পকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী গড়ে তুলতে মন্ত্রণালয় কাজ করছে। এজন্য মন্ত্রণালয় ও বিসিক চামড়া শিল্প উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা দিয়ে আসছে। চামড়া শিল্পের উন্নয়নে ইতোমধ্যে একটি নীতিমালা তৈরি করে তা মন্ত্রিসভায় বিবেচনার জন্য পাঠানো হয়েছে।
পাশাপাশি সিইটিপি পরিচালনার জন্য একটি কোম্পানি গঠন করা হয়েছে। এ কোম্পানি পরিচালনায় কোনো ধরণের কারিগরি সহায়তা ও প্রশিক্ষণ প্রয়োজন হলে শিল্প মন্ত্রণালয় তা দিতে প্রস্তুত বলে তিনি মন্তব্য করেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের সাবেক চেয়ারম্যান এম আবু ইউসুফ।
এছাড়াও সেমিনারে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলাম, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ কে এম রফিক আহমেদ, সিপিডির গবেষণা পরিচালক গোলাম মোয়াজ্জেম, এনবিআরের সদস্য সুলতান আহমেদ ইকবাল আলোচনায় অংশ নেন।