এডিস মশা নির্মূলে দুই সিটি করপোরেশনকে দিয়ে বিশেষ ব্যবস্থায় দেশের বাইরে থেকে উন্নতমানের কার্যকর ওষুধ আনার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে সংকট মোকাবিলায় সম্ভব হলে সরকারকে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ওষুধ আমদানি করে দুই সিটি করপোরেশনসহ সকল সিটি করপোরেশন, পৌরসভাসহ দেশব্যাপী সরবরাহ করতে বলা হয়েছে। বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ার্দীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল এই আদেশ দেন। সিটি করপোরেশনের আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে আদালত বলেন, ওষুধ আনতে সিটি করপোরেশনের ব্যর্থ হওয়ার কোন সুযোগ নেই। কারণ সরকার বলেছে ওষুধ সিটি করপোরেশনকেই আনতে হবে। অতএব সকল দায়-দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের।
এর আগে দেশের বাইরে থেকে ওষুধ আনা নিয়ে সিটি করপোরেশন ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা আদালতে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দেন।
বক্তব্যের প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের আহ্বানে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ হেলালুদ্দীন আহমেদ উপস্থিত হয়ে আদালতকে জানান, বিদেশে সরকারিভাবে মশা নির্মূলের ওষুধ উৎপাদন হয় না। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো এর উৎপাদন করে থাকে। ফলে জি-টু-জি পদ্ধতিতে দ্রুত ওষুধ আমদানিতে জটিলতা রয়েছে। আইন অনুসরণ করে সিটি করপোরেশন এই ওষুধ আনবে। এক্ষেত্রে তাদেরকে কর্তৃত্ব দেয়া হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগ এজন্য সব ধরনের সহযোগিতা করবে সিটি করপোরেশনকে। আদালত বলেন, আপনারা (স্থানীয় সরকার বিভাগ) বলছেন সিটি করপোরেশন আনবে, আবার সিটি করপোরেশন বলছে সরকার আনবে। এভাবে চললে ডেডলক সিচুয়েশনের সৃষ্টি হবে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আইনজীবী তৌফিক ইনাম টিপু বলেন, মশা নিধনে যে ওষুধ নির্ধারন করা হয়েছে সেটার স্যাম্পল চায়না থেকে ডিএইচএল কুরিয়ারে ঢাকায় আসবে। মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর কিনা সেই পরীক্ষা সম্পন্নের পর ওষুধ আসতে ১৪ কার্যদিবস লাগতে পারে। আদালত বলেন, নতুন ওষুধ লাগবে।
হাসপাতালে সার্বক্ষনিক চিকিৎসক রাখার নির্দেশ
ঢাকার সব সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা তত্ত্বাবধান করতে সহযোগী অধ্যাপকের নিচে নয় এমন একজন চিকিৎসককে সার্বক্ষণিক দায়িত্বে নিয়োজিত রাখতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালগুলোকেও মানবিক দিকে বিবেচনা করে যতটুকু সম্ভব এই আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলেছে আদালত। একইসঙ্গে ডেঙ্গু চিকিৎসার জন্য হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত বেডের ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছে। আদালত বলেন, একজন রোগীও যেন বিনা চিকিৎসায় ফিরে না যায় তা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া প্রাথমিকভাবে ডেঙ্গু সনাক্তকরণে টেস্ট কিট পর্যাপ্ত পরিমাণে আমদানি করে সারাদেশের হাসপাতালগুলোতে সরবরাহ করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে। যাতে নাগরিকরা এটা সহজে পেতে পারে। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান, দক্ষিণ সিটির পক্ষে সাঈদ আহমেদ রাজা ও উত্তর সিটির পক্ষে তৌফিক ইমাম টিপু শুনানি করেন।