ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে ভোলায় ভোর রাত থেকে প্রচন্ড গতিতে ধমকা হাওয়া বয়ে যায়। সঙ্গে মুষুলধারে বৃষ্টি। ব্যাপক কোন ক্ষয় ক্ষতির পরিমান না পাওয়া গেলেও চরফ্যাশন উপজেলার ঢালচর, মনপুরা উপজেলার চরমোজাম্মেল কলাতলির চর ও তজুমুদ্দিন উপজেলার চর জহিরুদ্দিনের নিন্মাঞ্চল রাত ৪ টার দিকে প্লাবিত হয়। নেই মোবাইলের নেটওয়ার্ক। লালমোহন ও চরফ্যাসন উপজেলায় ঝড়ো বাতাসে অর্ধশতাধিক ঘর বিধ্বস্ত হয়। আহত হয়েছেন ১৮ জন।
শনিবার রাত ৯টার দিকে লালমোহনের পশ্চিম চর উমেদ ও লর্ডহাডিঞ্জ ইউনিয়ন এবং চরফ্যাসনের ওসমানগঞ্জ ও এওয়াজপুর ইউনিয়নের এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন, পশ্চিম চর উমেদ ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আব্দুর রশিদ মাল, তার ছেলে ইমরান ও তিশান। একই উপজেলার লর্ডহাডিঞ্জ ইউনিয়নের চর পেয়ারীমোহন গ্রামের সাজেদা বেগম, তারেক, আরিফ, শরিফ ও মোস্তফিজ।
এদের মধ্যে তারেকের অবস্থা অশংকাজনক বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। এদের কয়েকজনকে চরফ্যাসন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
লালমোহন উপজেলার পশ্চিম চর উমেদ ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. ইব্রাহীম জানান, রাত ৯টার দিকে বাহিরে বিকট আওয়াজ শুনতে পান। মুহুর্তের মধ্যে ঘর্ণিঝড়ে ওই এলাকার রশিদ মালসহ একই বাড়ির আরও দুইটি ঘরের চাল উড়িয়ে নিয়ে যায়। এসময় বাড়ির গাছপালাও উপড়ে পরে।
তিনি আরও জানান, একই সময়ে ওই ইউনিয়নের পাশের এলাকা চরফ্যাসনের ওসমানগঞ্জ ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের আব্দুল মোতালেব ও তার ছেলে মামুন ও বিল্লালের ঘরগুলোও বিধ্বস্ত হয়েছে এবং পাশের আরেকটি বাড়ির আব্দুল মুনাফের বসত ঘরটিও বিধ্বস্ত হয়। এসময় ওই এলাকার রাস্তার গাছপালাও উপড়ে পরেছে বলে জানান তিনি।
লালমোহন উপজেলার লর্ডহাডিঞ্জ ইউনিয়নের বাসিন্দা সাংবাদিক আনোয়ার রাব্বি জানান, একই সময়ে ইউনিয়নের চর পেয়ারীমোহন গ্রামে ঘুর্ণিঝড়ে ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে প্রায় ১৫ জন আহত হয়েছে। বিধ্বস্ত হয় ৮ থেকে ১০টি ঘর।
এছাড়াও চরফ্যাসন উপজেলার এওয়াজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহবুব আলম খোকন জানান, রাত ৯টার দিকে ওই ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৭নং ওয়ার্ডের সাতটি ঘর ল-ভ- হয়েছে। এসময় এলাকার রাস্তাঘাটের অনেক গাছপালা উপরে পরে বলেও জানান তিনি।
লালমোহন উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাবিবুর হাসান রুমি জানান, আমরা লর্ডহাডিঞ্জ ইউনিয়নের রায়চাঁদ এলাকায় গাছ পড়ে এক জন আহত হওয়ার খবর পেয়েছি। এদিকে লালমোহনের আহত একজনকে ভোলা সদর হাসপাতালে আনা হয়েছে।
সর্বশেষ পাওয়া তথ্যে প্রচণ্ড বেগে ঝড় বইছে ভোলায়। কালো মেঘে ছেয়ে রয়েছে পুরো এলাকা। ভোলার দুপুরের জোয়ারের সঙ্গে পানি ঢুকে প্লাবিত হওয়ার আশংকায় রয়েছেন তারা।