স্যার ফজলে হাসান আবেদের মৃত্যুতে তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছে ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ ফাউন্ডেশন। এতে বলা হয়েছে, স্যার ফজলে হাসান আবেদ মানব ইতিহাসে দারিদ্র্য হ্রাসের একটি উত্তম সময়ে অত্যবশ্যকীয় অবদান রেখেছেন। তিনি ছিলেন অসংখ্য মানুষের কাছে উৎসাহ, বিশেষ করে নারীদের কাছে। ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ লরিয়েটস এবং ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ পরিষদের পক্ষ থেকে এ শ্রদ্ধা জানানো হয়। এতে স্যার ফজলে হাসান আবেদের স্ত্রী সৈয়দা সারওয়াত আবেদ, পরিবার, বন্ধুবান্ধব ও ব্র্যাকে তার সহকর্মীদের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করা হয়। স্যার ফজলে হাসান আবেদ ২০১৫ সালে ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ পুরস্কারে ভূষিত হন। উন্নয়ন সংগঠন হিসেবে ব্যতিক্রমী প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক গড়ে তেলার মাধ্যমে অতুলনীয় অর্জনের জন্য তাকে এই সম্মানে ভূষিত করা হয়। তার এই প্রতিষ্ঠান বিশ্বে দারিদ্র্য দূরীকরণে সবচেয়ে কার্যকর প্রতিষ্ঠানের অন্যতম বলে প্রশংসিত হয়।
এ বিষয়ে ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট, রাষ্ট্রদূত কেনেথ এম কুইন শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন স্যার ফজলে হাসান আবেদের প্রতি। এতে তিনি আরো বলেছেন, ব্র্যাকের মাধ্যমে নারী ও মেয়েরা ক্ষমতায়িত হয়েছেন। স্যার ফজলে হাসান আবেদের স্মৃতি বেঁচে থাকবে বাংলাদেশ ও সারা বিশ্বের হাজার হাজার পরিবারে, যারা তার ও তার ব্র্যাকের প্রচেষ্টা থেকে সুবিধা পেয়েছেন। তার স্মৃতি বেঁচে থাকবে যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়া রাজ্যের দেস মোইনসে ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ হলে।
এ বিষয়ে ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ বিবৃতি দিয়ে স্যার ফজলে হাসান আবেদের কর্মপরিধির কিছুটা অংশ তুলে ধরেছে। তাতে বলা হয়েছে, ২০০৯ সালে বৃটিশ ক্রাউন কর্তৃক নাইট উপাধিতে ভূষিত হন ফজলে হাসান আবেদ। তিনি বিশ্বের সবচেয়ে বড় বেসরকারি সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলেছেন ব্র্যাক। এই প্রতিষ্ঠান বিশ্বজুড়ে প্রায় ১৫ কোটি মানুষকে তাদের জীবনমানের উন্নতি ঘটানোর সুযোগ করে দিয়েছে। এতে উন্নত হয়েছে খাদ্য নিরাপত্তা এবং দারিদ্র্য দূরীকরণের পথ তৈরি করেছে। বাংলাদেশ ও আর দশটি দেশে ব্র্যাকের কর্মপরিধি ও তার প্রভাব অপ্রত্যাশিত পর্যায়ের।
বিবৃতিতে বলা হয়, তিনি উন্নয়নের একটি নতুন পথপ্রদর্শক, যা ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের মধ্যে আন্তঃসংযুক্তিকে কার্যকরভাবে এবং টেকসইভাবে সমাধান করেছে। এই প্রেক্ষাপটে, স্যার ফজলে হাসান আবেদ নতুন এক ক্ষেত্র সৃষ্টি করেছেন। এক্ষেত্রে তিনি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে উন্নয়ন মডেল, বিজ্ঞানভিত্তিক উদ্ভাবনী এবং সামাজিক অংশগ্রহণকে ব্যবহার করেছেন দারিদ্র, ক্ষুধা ও ক্ষমতাহীনদের জটিল সমস্যা সমাধানে।
২০১৫ সালে পুরস্কার গ্রহণ করে তিনি মন্তব্য করেছিলেন, ২০১৫ ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজের জন্য নির্বাচিত হওয়া বড় এক সম্মানের। আমি এই সম্মানকে ব্র্যাকের কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বিবেচনা করি, গত ৪৩ বছরেরও বেশি সময় আমি যেখানে নেতৃত্ব দিয়ে এসেছি। আমার এই কাহিনীর মূল হিরোরা হলেন দরিদ্ররা, বিশেষ করে দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াইরত নারীরা।
আপনার মতামত দিন
নাম