বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালনা কমিটির সভা আজ। এই সভায় নিশ্চিত হতে পারে পাকিস্তান সফরে বাংলাদেশ দলের যাওয়া না যাওয়ার বিষয়টি। তবে নয়া জটিলতায় বিসিবি! মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনার কারণে টাইগারদের পাকিস্তান সফর নিয়ে তৈরি হতে পারে নয়া সমীকরণ। তবে এর বাইরেও আছে নানা কারণ। এছাড়াও ক্রিকেটারদের কেন্দ্রীয় চুক্তির অনুমোদন, নয়া বোলিং কোচ নিয়োগ নিয়েও আলোচনা হতে পারে সভায়। তবে আলোচনার মূল বিষয়ই হবে পাকিস্তান সফর। অন্যদিকে এই সফর নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থানও এখনো পরিষ্কার নয়। একটি সূত্রের দাবি, মুজিববর্ষের কারণে সরকার এখনো সিদ্ধান্ত জানাতে পারেনি। গতকাল বিসিবির মিডিয়া বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস বলেন, ‘হ্যাঁ, পাকিস্তান সফর নিয়ে আলোচনাতো হবেই।
তবে কি হবে সেটি আগেই বলা যাচ্ছে না। আর মধ্যপ্রাচ্যের যে উত্তেজনা সেটিও আমাদের সামনে নতুন ইস্যু। তাতো আসবে স্বাভাবিকভাবে। পাকিস্তান যাওয়ার বিষয়টিতে অন্য ইস্যুও আছে, যা আলোচনাতে আসবে। অনেকগুলো বিষয়তো আগে ছিল। নতুন করেও কিছু সামনে এসেছে।’ বিসিবির এই পরিচালকের বক্তব্যে অনেকটাই স্পষ্ট বাংলাদেশ দলের পাকিস্তান সফর এখন নয়া জটিলতায়। তবে বিসিবি সভাপতি বলেছেন, এই বোর্ড সভাতেই হ্যাঁ, বা না চূড়ান্ত করে দিতে পারেন। এখন দেখার বিষয় শেষ পর্যন্ত কোথাকার জল কোথায় গড়ায়!
মধ্যপ্রাচ্য ইস্যু ছাড়াও পাকিস্তানের বর্তমান নিরাপত্তা নিয়েও আলোচনা হবে আজকের বোর্ড সভায়। তবে সবচেয়ে বড় বিষয় বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান এখনো স্পষ্ট নয়। সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে সবুজ সংকেত এসেছে কিনা সেটি নিয়ে জালাল ইউনুস বলেন, ‘না, আমরা এখনো সরকারের কাছ থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পাইনি। আমরা বিসিবির পক্ষ থেকে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। তেমনি পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছি। আমরা আমাদের প্রক্রিয়াগুলো সেরে রেখেছি। এখন সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার বিষয়।’ শুক্রবার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উদযাপন হয়েছে। এদিনে পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে দেশে ফিরেছিলেন তিনি। আর এই অনুষ্ঠান থেকেই শুরু হয়েছে মুজিববর্ষের ক্ষণগননা। একটি সূত্রের দাবি, এমন মুহূর্তে পাকিস্তান সফরের সিদ্ধান্ত দেয়াটাও সরকারের জন্য চরম বিব্রতকর।
আজকের বোর্ড সভাতেই পাকিস্তান সফর নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে কি না তা নিয়ে বিসিবির মিডিয়া বিভাগের চেয়ারম্যান বলেন, ‘হবেই এমন বলা যাচ্ছে না। বলতেও পারি না। সব কিছু যদি ঠিক থাকে তাহলে হতেও পারে। অন্যদিকে বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজনও জানিয়েছেন, টাইগারদের পাকিস্তান সফর নিয়ে নতুন মোড় এনেছে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা। তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন এই ইস্যুটিও বিসিবিকে ভাবাচ্ছে। নিজামুদ্দিন বলেন, ‘বৈশ্বিক পরিস্থিতি একটু জটিল হয়ে গেছে। আপনারা তো জানেনই, ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যে উত্তেজনা এটা সবাইকেই ভাবাচ্ছে। ইরান পাকিস্তানের পাশেই। আজ আবার আরেকটা ঘটনা শুনলাম। এসব আমাদের ভাবাচ্ছে। একটু সময় নিতে হচ্ছে এসব কারণেও।’
বাংলাদেশ দল পাকিস্তান সফরে যাবে না তা যদিও কখনো বিসিবি বলেনি। কিন্তু তাদের প্রস্তাবটা স্বল্প সময়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলে চলে আসা। যদিও সবশেষ বিসিবি সভাপতি জানিয়েছেন পাকিস্তান টি-টোয়েন্টি নয় টেস্ট খেলতে চায়। কিন্তু সেটি হলে বিসিবির জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া কঠিন। যেমন শুধু মাত্র টি-টোয়েন্টি সিরিজ হলেই প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো পাকিস্তান সফরে যেতে রাজি আছেন। এই প্রোটিয়া সাবেক ক্রিকেটার টেস্ট হলে যাবেন না বলেই জানিয়েছেন। তিনি ছাড়া আর কোনো বিদেশি কোচই পাকিস্তান সফরে যেতে রাজি নয়। যদি বিসিবি পাকিস্তান সফরে টেস্ট খেলতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে কোনো কোচকেই পাবে না। আর দলের সিনিয়র ও অভিজ্ঞ ব্যাটিং ভরসা মুশফিকুর রহীম ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও যাবেন না। তাহলে নয়া কোচিং স্টাফ ও তরুণ ক্রিকেটারদের নিয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়ানশিপের অংশ এই গুরুত্বপূর্ণ সিরিজ খেলতে হবে।