বুধবার দুপুরের ঘটনা। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম থেকে পুলিশের একটি টহল দল আটক করলেন এক টিকিট কালোবাজারিকে। দেহ তল্লাশি করে পাওয়া গেল ২০টি টিকিট। কিন্তু পরক্ষণেই গেইটের ভিতর থেকে পুলিশকে হুমকি দিতে লাগলেন এক ব্যক্তি। পুলিশ সদস্য জানালেন, কালোবাজারিকে আটক করায় তাকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়া হচ্ছে। এগিয়ে গিয়ে আনসার সদস্যর পাশে সেই বিসিবি’র কার্ডধারি ব্যাক্তির নাম জানতে চাইতেই বলেন, ‘আমার নাম নাই। আমার নাম দিয়ে কি করবেন! মনে হয় আপনি রিপোর্টার, নিজের কাজ করেন। পুলিশই হলো বড় কালোবাজারি, তারা টিকিট আটক করে তা বিক্রি করে।’ এক কথায় পুলিশের বিপক্ষে কালোবাজারিদের পক্ষ নিয়ে অভিযোগ করেন সেই ব্যক্তি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেল বঙ্গবন্ধু বিপিএলের ফাইনাল ঘিরে তৎপর মিরপুরের বেশ কয়েকটি টিকিট কালোবাজারি গ্রুপ। অভিযোগ রয়েছে তাদের হাতে টিকিট পাচার করছে বিসিবির ভেতরের বেশ কয়েক জন। তবে তাদের নাম পরিচয় জানা যায়নি। এ বিষয়ে বিসিবির নিরাপত্তা প্রধান মেজর (অবঃ) হোসেন ইমাম দৈনিক মানবজমিনকে বলেন, ‘ঘটনাটি খুবই ভয়ানক ও বিসিবির জন্য বিব্রতকর। কেন পুলিশকে আমাদের গেইটের ভিতর থেকে বাধা দেবে তাদের কাজে! আমি এ বিষয়টি দেখবো। আর ফাইনালে যেন এমন কিছু হতে না পারে সেই জন্যও ব্যবস্থা নিবো।’
বিপিএল জুড়েই চিহ্নিত কিছু টিকিট কালোবাজারিকে মিরপুর শেরেবাংলা মাঠের এক নম্বর থেকে শুরু করে পাঁচ নম্বর গেইট পর্যন্ত তৎপর থাকতে দেখা যায়। বিসিবির এক নম্বর গেইটের টিকিট কাউন্টার থেকে মাইকিং করে দর্শকদের সতর্ক করা হলেও অনেকেই হচ্ছেন তাদের শিকার। মাঠে দর্শক না হলেও তাদের ব্যবসা কিন্তু থেমে নেই। এর মধ্যে বড় একটি চক্র ব্যস্ত টিকিট জাল করে বিক্রি করার জন্য। অনুসন্ধানে জানা যায় ফাইনালের টিকিট নিয়ে বড় ধরণের প্রস্তুতি নিয়েছে টিকিট কালোবাজারিরা। তাদের একটি গ্রুপ আসল টিকিটের সঙ্গে বাজারে নিয়ে আসছে জাল টিকিটও। আরো জানা যায় ১, ৩, ৪ ও ৫ নম্বর গেটে সবচেয়ে বেশি তৎপর কালোবাজারিরা। তারা সাধারণ দর্শকদের কাছে অনেকটা জোর করেই টিকিট বিক্রি করে থাকেন। অনেক সময় টিকিট এনে দিচ্ছি বলে টাকা নিয়ে সটকে পড়া বা জাল টিকিট দেয়ারও ঘটনা ঘটছে। অভিযোগ রয়েছে, কালোবাজারিদের বেশির ভাগই মাদকসেবি।
ফাইনাল ঘিরে কালোবাজারি ঠেকাতে কি ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে তা নিয়ে হোসেন ইমাম বলেন, ‘আমরা নিজেরাতো তৎপর আছি। সেই সঙ্গে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাকেও জানিয়েছি। তারা কালোবাজারি ঠেকাতে ব্যবস্থা নিবেন।’ কি ধরনের ব্যবস্থা সেই বিষয়ে মিরপুর থানার পিআই ও মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের নিরাপত্তা সমন্বয়ক বকশি বলেন, ‘আমরা টহল বাড়িয়ে দিয়েছি কালোবাজারিদের ধরতে। শুধু তাই নয় ফাইনালের দিন সকাল থেকে মাঠের প্রায় প্রতিটি গেটেই ও রাস্তায় ভিজিরেন্স টিম থাকবে এই সব তৎপরতা ঠেকাতে।’