নিউজ ডেস্ক, স্বদেশ নিউজ২৪.কম:
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের হাত ধরে ১৯৭২ সালে ৮ম শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় ছাত্রলীগে যোগদান করেন। বৃহত্তর ময়মনসিংহ’র বর্ষিয়ান নেতা এডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল। স্কুল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পরে সভাপতি স্কুলে ১০ম শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় ১৯৭৪ সালে জেলা ছাত্রলীগের সদস্য পদ লাভ করেন। ১৯৭৮ সালে পুনঃগঠিত জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য, ১৯৮২ সালে জেলা ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক ও আনন্দমোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন, ১৯৮৪ সালে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৮৪ সালে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন, ১৯৮৭ সালে পুনরায় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও আনন্দমোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন, ১৯৮৭ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নির্বাচিত হন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সাংগঠনিক অবস্থান :
১৯৯০ সালে ১২০ জন সাবেক ছাত্রলীগ নেতাসহ আনুষ্ঠানিক ভাবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মরহুম জিল্লুর রহমানের হাত ধরে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগে যোগদান করেন। ১৯৯২ সালে ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য, ১৯৯৬ সালে শ্রম সম্পাদক, ২০০০ সালে প্রচার সম্পাদক, ২০০৪ সালে জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য হন।
লড়াই সংগ্রাম আন্দোলন :
১৯৭৫ সালের ৩রা নভেম্বর জেল হত্যার প্রতিবাদে ৬ই নভেম্বর প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজক ছিলেন, ১৯৭৬ সালের ১৫ই আগস্ট আনন্দমোহন কলেজ চত্বরে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বাজাতে গিয়ে পুলিশের সাথে সংঘর্ষের পর আহত অবস্থায় গ্রেফতার হন ও পুলিশী নির্যাতনের শিকার হন। ১৯৭৮ সালে নৌকার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে হামলার শিকার হয়ে প্রতিবাদী ও সাহসী ভূমিকা পালন করেন। ১৯৮২ সালে স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলন ও ছাত্রলীগের অভ্যন্তরে মহান নেত্রী শেখ হাসিনার সুষ্ঠু ধারার সংগঠনিক অবস্থানকে সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে ময়মনসিংহ ছাত্রলীগের মাঝে মূখ্য ভূমিকা পালন করেন। ১৯৯০ সালে সচিবালয় ঘেরাও আন্দোলন ট্রেন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বিপুল পরিমাণ নেতা কর্মী নিয়ে সকাল ৮.৩০ ঘটিকায় ময়মনসিংহ থেকে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ এ উপস্থিত হয়ে সকাল থেকে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে সচিবালয়ের দেয়াল ভাঙ্গায় মূখ্য ভূমিকা পালন করেন। লম্বা লম্বা বাঁশ হাতে বিপুল সংখ্যক কর্মী বাহিনী নিয়ে স্বৈরাচার নিয়ন্ত্রিত নির্যাতনকারী পুলিশ বাহিনীর উপর হামলা করেন, নূর হোসেন তার কাছে অবস্থান করে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন। ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ ফেরার পর ট্রেন থেকে নেমে ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশন আগুনে জ্বালিয়ে দেন এবং ময়মনসিংহের জাতীয় পার্টির অফিস জ্বালিয়ে দেন। পরদিন এরশাদের শ্বশুরালয় সুন্দর মহল জ্বালিয়ে দেন, এসব খবর বি.বি.সি থেকে ফলাও করে প্রচার করা হয়। অত:পর জাপা সরকার প্রশাসন তাকে গ্রেফতার করতে মরিয়া হয়ে উঠে। ময়মনসিংহে শহীদ ও ফিরোজ জাহাঙ্গীর যে মিছিলে শহীদ হন সেই দিন হরতালের নেতৃত্বে দিয়ে ছিলেন।
মামলা মোকদ্দমা জেল জুলুম কারাবরণ :
১৯৭৬ সালে প্রথম কারাবরণ করেন, তারপর ১৯৭৮, ১৯৮২, ১৯৮৭, ১৯৮৮, ১৯৯০, ১৯৯৩, ২০০৩, ২০০৫ সালে গ্রেফতার হই এবং দীর্ঘ সময় কারাবরণ অব্যহত থাকে। ১৯৮৬ সালে জীবন বিপন্ন হওয়ার উপক্রম হলে মাননীয় নেত্রী শেখ হাসিনার জ্ঞাতসারে ভারতে চলে যান এবং ১১ মাস পরে ফিরে এসে মাননীয় নেত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি তত্ত্বাবধানে আদালত থেকে জামিন লাভ করে আনন্দমোহন কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে ভিপি নির্বাাচিত হন। ময়মনসিংহ জেলার সকল কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে তার নেতৃত্বে ছাত্রলীগ জয়লাভ করে। সকল কলেজের নির্বাচিত ছাত্র সংসদ নেতাদের নিয়ে বিপুল সংখ্যক ছাত্রদের বহর নিয়ে বিরোধীয় দলের নেতার বাসভবন ২৯ মিন্টু রোডে জননেত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করেন। তিনি তার প্রশংসা করে বক্তৃতা করেন।
১৯৮৪, ১৯৮৫, ১৯৮৬ সালে বি.এন.পি, জাতীয় পার্টি, ফ্রিডম পার্টির অস্ত্রধারী ক্যাডাররা তাকে বারবার হত্যা করার চেষ্টা করে, তার সাহসিকতার কারনে বারবার ব্যর্থ হয়। মরহুম আঃ রাজ্জাক সাহেবের বাকশাল কর্মীদের পক্ষ থেকেও তার উপর বারবার হামলা হয়েছিল চরম আকারের। এসব মোকাবিলায় তিনি মহান নেত্রী শেখ হাসিনার অনুপ্রেরণায় সাহসিকতার সাথে মোকাবিলা করে সাংগঠনিক শক্তিশালী ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন।
১৯৯৩ সালে তিনি আইন পেশায় যোগদান করেন। ২০০২ সালে খালেদা জিয়ার ক্লিন হার্ট অপারেশনে তাকে বাংলাদেশে সর্ব প্রথম গ্রেফতার করা হয়। তা সাহসিকতার সাথে তিনি আইনজীবী এবং মাননীয় নেত্রী শেখ হাসিনার লোক হিসাবে পরিচয় দিলে আর্মি অফিসার তাকে জিজ্ঞাসা করেন আপনি নেত্রীকে চিনেন ? উত্তরে তিনি বলেন, নেত্রীর লোক আমি, তিনি আমাকে খুব ভালভাবে চিনেন। তারপর তাকে কোন টর্চার না করে কারাগারে প্রেরণ করেন। তখন তার সাথে আনন্দমোহন কলেজের সাবেক ভিপি বর্তমান জন প্রশাসনমন্ত্রী, দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সহকারী একান্ত সচিব এ.কে.এম সাজ্জাদ জাহান শাহীন গ্রেফতার হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে এরশাদ খালেদা আমলে মোট ২৪টি মামলা হয়েছিল। কুখ্যাত এস.পি কহিনূর এর অত্যাচারের কারনে তিনি বাড়ীতে অবস্থান করতে পারেন নাই।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা মহান নেত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি তত্ত্বাবধানে সকল মামলা ও বারবার কারাবরণ থেকে মুক্তি পেয়েছেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জনসভায় প্রস্তাবনা ও বক্তৃতায় জাতীয় নেত্রীবৃন্দ তার মুক্তি এবং মামলা প্রত্যাহারে বারবার দাবী জানিয়েছেন।
বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ময়মনসিংহ জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক , বঙ্গবন্ধু পরিষদ সভাপতি, শিশু একাডেমীর জেলা সভাপতি, রেড ক্রিসেন্ট, মুসলিম ইন্সটিটিউট, জেলা নাগরিক আন্দোলন এর আজীবন সদস্য, অসিত মেমোরিয়াল ক্রিকেট ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক, সভাপতি, সুচলিয়া পাড়া হাজী শামছুদ্দিন বালিকা দাখিল মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন সংগঠনের সাথে জড়িত। সদস্য অবলুপ্ত ময়মনসিংহ জেলা আইনজীবী সমিতির সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।