1. ccadminrafi@gmail.com : Writer Admin : Writer Admin
  2. 123junayedahmed@gmail.com : জুনায়েদ আহমেদ, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর : জুনায়েদ আহমেদ, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর
  3. swadesh.tv24@gmail.com : Newsdesk ,স্বদেশ নিউজ২৪.কম : Newsdesk ,স্বদেশ নিউজ২৪.কম
  4. swadeshnews24@gmail.com : নিউজ ডেস্ক, স্বদেশ নিউজ২৪.কম, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর: : নিউজ ডেস্ক, স্বদেশ নিউজ২৪.কম, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর:
  5. hamim_ovi@gmail.com : Rj Rafi, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান : Rj Rafi, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান
  6. skhshadi@gmail.com : শেখ সাদি, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান: : শেখ সাদি, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান:
  7. srahmanbd@gmail.com : এডমিন, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান : এডমিন, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান
  8. sumaiyaislamtisha19@gmail.com : তিশা, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান : তিশা, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান
হাসিনা-মোদি বৈঠক পাঁচ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর - Swadeshnews24.com
শিরোনাম
সোনার দাম আরও কমল রাজধানীতে পানি, স্যালাইন ও শরবত বিতরণ বিএনপির জায়েদ খানের এফডিসিতে ফেরা হবে কিনা, জানালেন ডিপজল কক্সবাজার জেলায় কত রোহিঙ্গা ভোটার, তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট সিনেমা হলে দেওয়া হচ্ছে টিকিটের সঙ্গে ফ্রি বিরিয়ানি ঢাকায় বড় জমায়েত করতে চায় বিএনপি ১৫ বছর পর নতুন গানে জেনস সুমন যশোরে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে জমি দখলের অভিযোগ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে মিশা-ডিপজল প্যানেলের জয়লাভ গোবিন্দগঞ্জে অটোচালক দুলা হত্যার মূল আসামি আটক চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু পলাশবাড়ীতে উপজেলা নির্বাচনে অনলাইন মনোনয়নপত্র দাখিলের বিষয়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিলেই বিএনপি বলে বিরোধীদল দমন’ এবার বুবলী-শাকিবের ‘কোয়ালিটি টাইম’ নিয়ে মুখ খুললেন অপু বাংলাদেশের সফলতা চোখে পড়ার মতো: সিপিডির রেহমান সোবহান

হাসিনা-মোদি বৈঠক পাঁচ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর

  • Update Time : রবিবার, ২৮ মার্চ, ২০২১
  • ২২৪ Time View

ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে ব্যস্ত কর্মসূচিতে কাটিয়ে বহুল আলোচিত দু’দিনের বাংলাদেশ সফরের সমাপ্তি টানলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সফরের দ্বিতীয় দিনে গতকাল তার সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ কর্মসূচি ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক। দ্বিপক্ষীয় ওই শীর্ষ বৈঠকে ৫টি সমঝোতা সই হয়েছে। উদ্বোধন হয়েছে ৯টি প্রকল্প। বাংলাদেশ সফর এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক বিষয়ে মোদি এক টুইট বার্তায় বলেন, আমার সফরকালে বাংলাদেশের জনগণ যে আন্তরিকতা দেখিয়েছে তার জন্য আমি তাঁদেরকে ধন্যবাদ জানাই। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাঁর উষ্ণ আতিথেয়তার জন্য ধন্যবাদ জানাই। আমার বিশ্বাস, এই সফর আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ ফলপ্রসূ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের সকল বিষয়ে বিস্তৃত পর্যালোচনা করেছি এবং ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংযোগ আরও গভীর করার উপায়গুলো নিয়েও আলোচনা করেছি।

বৈঠক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন জানিয়েছেন- তিস্তা সমস্যা সমাধানে বিশেষ উদ্যোগ নিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে এ ব্যাপারে কোনো ধরনের মন্তব্য করেননি নরেন্দ্র মোদি। সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রথমে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী একান্ত বৈঠকে বসেন। এরপর দুই দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসেন। দুইদেশের সরকার প্রধানের উপস্থিতিতে বাণিজ্যে অশুল্ক বাধা দূর, তথ্য-যোগাযোগ সহায়তা ও দুর্যোগ মোকাবিলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়। সমঝোতা স্মারক সই ছাড়াও দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে ভার্চ্যুয়ালি বেশ কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়। সমঝোতা স্মারকগুলো হলো-

১. দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, অভিযোজন ও প্রশমনের ক্ষেত্রে সহযোগিতা ২. বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি) এবং ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর অব ইন্ডিয়ার (আইএনসিসি) মধ্যে সহযোগিতা ৩. বাণিজ্য বিকাশে অশুল্ক বাধা দূর করতে সহযোগিতার ফ্রেমওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করা ৪. বাংলাদেশ-ভারত ডিজিটাল সার্ভিস অ্যান্ড এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিং (বিজিএসটি) সেন্টারের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি সরঞ্জাম, কোর্সওয়্যার ও রেফারেন্স বই সরবরাহ এবং প্রশিক্ষণ সহযোগিতা ৫. রাজশাহী কলেজ মাঠের উন্নয়নে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন। ভার্চ্যুয়ালি যে ক’টি প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয় তার মধ্যে রয়েছে- ঢাকা ও নিউ জলপাইগুড়ির মধ্যে যাত্রীবাহী ট্রেন সার্ভিস, বাংলাদেশ-ভারত স্বাধীনতা সড়ক। মুক্তিযুদ্ধে যেসব ভারতীয় সৈন্য আত্মাহুতি দিয়েছেন তাদের স্মরণে আশুগঞ্জে একটি সমাধিসৌধ উদ্বোধন করা। এছাড়া কুষ্টিয়ার শিলাইদহে কুঠিবাড়ীতে ভারতের অর্থায়নে যে সংস্কার কাজ হয়েছে তার উদ্বোধন করা হয়। ৩টি সীমান্তহাট এবং স্মারক ডাকটিকিটের মোড়ক উন্মোচনও করা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বানানো একটি করে সোনা ও রুপার কয়েন মোদিকে উপহার দেন শেখ হাসিনা। এছাড়া ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে সাজানো একটি রুপার কয়েন দিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে বাংলাদেশকে ভারত সরকারের দেয়া করোনা প্রতিরোধক ১২ লাখ ডোজ টিকা উপহারের প্রতীক বঙ্গবন্ধু কন্যার হাতে তুলে দেন মোদি। এছাড়া শেখ হাসিনার হাতে ১০৯টি অ্যাম্বুলেন্সের প্রতীকী চাবি দিয়েছেন তিনি। সফরের দ্বিতীয় দিনে মোদি ঢাকার বাইরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মস্থান টুঙ্গিপাড়া সফর করেছেন। বিশ্বের কোনো সরকার বা রাষ্ট্র প্রধানের এটাই ছিল প্রথম টুঙ্গিপাড়া দর্শন। বঙ্গবন্ধু তনয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা মোদিকে তাদের পৈতৃক ভিটায় স্বাগত জানান। সেখানে জাতির পিতার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মোদি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দি যান। সেখানে মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রাণপুরুষ হরিচাঁদ ঠাকুরের বাড়িতে তিনি মতবিনিমিয় সভায় মিলিত হন। ভারতের পশ্চিমবঙ্গসহ দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে প্রায় ৩ কোটি মতুয়া সম্প্রদায়ের বাস। সমালোচনা রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচনে মতুয়া মন জয় করতেই নাকি মোদি তাদের তীর্থস্থান পরিদর্শনে গেছেন। তবে সেখানে দেয়া বক্তৃতায় মোদি পশ্চিমবঙ্গ বিধান সভা নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা বলেননি বরং তিনি মতুয়া সম্প্রদায়ের জীবন-মান উন্নয়ন বিশেষতঃ ওড়াকান্দিতে মেয়েদের শিক্ষা এবং শিশুদের জন্য প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় ভারতে সরকারের সহায়তার অঙ্গীকার করেছেন। প্রধানমন্ত্রী তার সফর বিষয়ে এদিন বাংলা ভাষাতেই একের পর এক টুইট করেছেন। তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ড থেকে প্রচারিত মতুয়া দর্শন বিষয়ক টুইটে বলা হয়- ‘ওড়াকান্দি ঠাকুরবাড়ি দর্শনের অভিজ্ঞতা আমি আজীবন মনে রাখব। এই অত্যন্ত পবিত্র স্থানটি মহান মতুয়া সম্প্রদায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। সংসদে আমার সহকর্মী শ্রী শান্তনু ঠাকুর শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরজীর মহান বাণী ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য প্রশংসনীয়ভাবে প্রয়াস করছেন। ওড়াকান্দিতে শান্তনুজী এবং মতুয়া সম্প্রদায়ের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়েছে।’ বঙ্গবন্ধুর জন্মস্থান পরিদর্শন বিষয়ে তিনি তার টুইট বার্তায় লিখেনÑ ‘ টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছি। আজ সকালে টুঙ্গিপাড়ায় বিশেষভাবে উপস্থিত থাকার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাজী এবং শেখ রেহানাজীকে ধন্যবাদ জানাই। তার আগে সাতক্ষীরার যশোরেশ্বরী কালী মন্দির পরিদর্শন করেন মোদি। সেখানে পূজা দেন। এ বিষয় টুইটে মোদি লিখেন- ‘আমি সমগ্র পৃথিবীর মঙ্গল কামনা করে মা কালীর কাছে প্রার্থনা করেছি। সর্বত্র শান্তি ও আনন্দ বিরাজ করুক। উল্লেখ্য, রাতে ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার আগে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদের সঙ্গে বৈঠক করে গেছেন তিনি।

সীমান্তে একজন বাংলাদেশিও যেনো বিএসএফ কর্তৃক নিহত না হয়, তা নিশ্চিতের জোরালো দাবি প্রধানমন্ত্রীর

এদিকে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠিত প্রধানমন্ত্রী মোদির সফর বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন লিখিত বক্তব্যে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অত্যন্ত হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশে আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। সেখানে বহুমাত্রিক ও বিস্তৃত পরিসরে দুই পক্ষের মধ্যে অর্থবহ আলোচনা হয়েছে। ফলশ্রুতিতে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরো বেগবান ও জোরদার হবে আশা করে মন্ত্রী বলেন, সীমান্তে যাতে আর একজন বাংলাদেশিও কোনো কারণে বিএসএফ কর্তৃক নিহত না হন, সেটি নিশ্চিত করার জোরালো দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী। সীমান্তে শান্তি, সম্প্রীতি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখার লক্ষ্যে কম্প্রিহেনসিভ বর্ডার ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানের আওতায় বিজিবি ও বিএসএফকে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করে যাবার নির্দেশনা দিয়েছেন দুই প্রধানমন্ত্রী। ঝুঁকিপূর্ণ চলাফেরা পরিহার করতে সীমান্তবর্তী এলাকার নাগরিকদেরকে সচেতন করে তোলার কার্যক্রম পরিচালনারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। মন্ত্রী জানান, যৌথ নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার ওপর বাংলাদেশের অলংঘনীয় অধিকারের বিষয়টি বরাবরের মতোই জোরালোভাবে উত্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি তিস্তার পানি বণ্টনের “অন্তর্বর্তী চুক্তি” দ্রুত সম্পাদনের জোর দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, মনু, মুহুরী, খোয়াই, গোমতী, ধরলা ও দুধকুমার-এই ছয়টি যৌথ নদীর পানি বণ্টনের অন্তর্বর্তী চুক্তির ফ্রেমওয়ার্ক চূড়ান্তকরণের কাজ দ্রুত এগিয়ে নিতে দুই দেশের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সুরমা-কুশিয়ারা সেচ প্রকল্পে কুশিয়ারা নদীর পানি ব্যবহারের উদ্দেশ্যে রহিমপুর খালের অবশিষ্টাংশ খননের আবশ্যকতার ওপর গুরুত্বারোপ করে এ সংক্রান্ত সমঝোতা স্বাক্ষরে ভারতের দ্রুত সম্মতি কামনা করেছে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীদের জন্য এক হাজার স্কলারশিপের ঘোষণা দিয়েছে ভারত। তারা রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থানকে সমর্থন জানিয়েছে। মানবসম্পদ ও ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়ন, দারিদ্র্যবিমোচন, সন্ত্রাসবাদের অবসান ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর প্রগতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্জিত অভূতপূর্ব সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। বাংলাদেশ-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উৎসব যৌথভাবে উদ্যাপনের বিভিন্ন পরিকল্পনাও তাদের আলোচনায় স্থান পায়। এ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীকে ২০২২ সালে ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভারত স্বাধীন বাংলাদেশকে কূটনৈতিক স্বীকৃতি প্রদান করেছিল ৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১। দিনটিকে “মৈত্রী দিবস” হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ঐতিহাসিক মুজিবনগর-নদীয়া সড়কটিকে “স্বাধীনতা সড়ক” নামকরণে বাংলাদেশের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে ভারত। পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট ব্যস্ততা ও সময়-স্বল্পতার কারণে এখনই সড়কটি উদ্বোধন করা না গেলেও, ভারতীয় পক্ষের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্নের পর যৌথ উদ্যাপনের অংশ হিসেবে অচিরেই এটি উদ্বোধন করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক ভারসাম্য বাংলাদেশের অনুকূলে আনা এবং বাণিজ্য অবারিত করার উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন মেজার নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। উভয় পক্ষ ট্যারিফ এবং নন-ট্যারিফ ব্যারিয়ার অপসারণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। বাংলাদেশ থেকে পাটজাত পণ্য রপ্তানির ওপর ২০১৭ সাল থেকে ভারত কর্তৃক আরোপিত এন্টি ডাম্পিং ডিউটিগুলো প্রত্যাহারের অনুরোধ জানানো হয়েছে। স্থলবন্দরগুলোর অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সুযোগ-সুবিধা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে একযোগে কাজ করার ওপরও দুই প্রধানমন্ত্রী জোর দেন। এ ছাড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রে বর্ধিত হারে ভারতীয় বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বিস্তৃত আঞ্চলিক কানেক্টিভিটির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন দুই নেতা। সড়ক, রেল ও নৌপথে মাল্টিমোডাল কানেক্টিভিটির মাধ্যমে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী উদ্যোগসমূহের প্রশংসা করেছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী। “ভারত-মিয়ানমার-থাইল্যান্ড ট্রাইলেটারাল হাইওয়ে প্রকল্পে যুক্ত হতে বাংলাদেশের আগ্রহের কথা ভারতকে জানানো হয়েছে। বিবিআইএন এগ্রিমেন্ট বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের মধ্যে এমওইউ দ্রুত স্বাক্ষরের প্রয়োজনীয়তার ওপর দুই নেতা বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। ভারতীয় ভূখ- ব্যবহার করে নেপাল ও ভুটানে আরো বৃহত্তর পরিসরে একসেস চেয়েছে বাংলাদেশ। এজন্য বাংলাদেশ নতুন কিছু রুট অনুমোদনের জন্য ভারতকে অনুরোধ জানিয়েছে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ থেকে নেপালে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে দূরত্ব, সময় ও ব্যয় বহুলাংশে হ্রাস পাবে এবং বাংলাদেশের রপ্তানি সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ক্ষেত্রে দু’দেশের মধ্যে বিদ্যমান সহযোগিতা, বিশেষতঃ নেপাল ও ভুটানকে সঙ্গে নিয়ে উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। নেপাল ও ভুটানে উৎপাদিত জলবিদ্যুৎ ব্যবহারে আগ্রহী বাংলাদেশ। ভুটানের সঙ্গে সদ্য সম্পাদিত যৌথ বিবৃতি বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতার প্রসঙ্গটি উঠে এসেছে। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এনার্জি ডেফিসিট এলাকায় বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে চাই। লাইন অব ক্রেডেটির আওতাধীন প্রকল্পগুলোকে আরো বেগবান করার ব্যাপারেও দুই প্রধানমন্ত্রী আলোচনা করেছেন। নিরাপত্তা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতার বিষয়ে উভয় নেতা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নিরাপত্তা বিধানে বাংলাদেশের অকুণ্ঠ সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছে ভারত। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে “বঙ্গবন্ধু চেয়ার” স্থাপনের ঘোষণাও দিয়েছে ভারত। চিরায়ত সাংস্কৃতিক ও ভৌগোলিক নৈকট্য এবং ঐতিহাসিক মেলবন্ধনের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ-ভারত বহুমুখী অংশীদারিত্ব বিগত অর্ধশতাব্দী ধরে বিবর্তিত, বিকশিত ও সমৃদ্ধ হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, দ্বিপক্ষীয় কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘মডেল’ হিসেবে বিবেচ্য আমাদের এই অকৃত্রিম বন্ধুত্বকে অনবদ্য দ্যোতনা প্রদান করেছে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর এই সফর।

অধিকারের জন্যে বাংলাদেশের মানুষের সংগ্রামের চিত্রই বঙ্গবন্ধুর জীবনের প্রতিলিপি: মোদি

ওদিকে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ভিজিটর বুকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লিখেনÑ ‘অধিকার, সংস্কৃতি ও নিজস্ব পরিচয়ের জন্যে বাংলাদেশের মানুষের সংগ্রামের চিত্রই বঙ্গবন্ধুর জীবনের প্রতিলিপি।’ শনিবার টুঙ্গিপাড়ায় জাতির জনকের সমাধিতে ফুল দিয়ে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান তিনি। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছান। বাসস জানায়, বঙ্গবন্ধু এবং ১৫ই আগস্টের হত্যাকা-ের ঘটনায় অন্যান্য শহীদদের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। এ সময় সেখানে শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা সমাধি সৌধের বিভিন্ন অংশ ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে ঘুরে দেখান। এর আগে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে শেখ রেহানা ফুলের তোড়া দিয়ে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল কমপ্লেক্সে নরেন্দ্র মোদিকে অভ্যর্থনা জানান। তিনি সেখানে একটি গাছের চারা রোপণ করেন। টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর তিনি ঠাকুরবাড়ী মন্দিরে গিয়ে পূজা দেন। এখন সেখানে মতুয়া সম্প্রদায়ের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন নরেন্দ্র মোদি।

যশোরেশ্বরী কালী মন্দিরে কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ করে দেবে ভারত: মোদি

ওদিকে সাতক্ষীরার ঐতিহ্যবাহী যশোরেশ্বরী কালী মন্দিরে পূজা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি সাতক্ষীরায় একটি কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণের আগ্রহ প্রকাশ করেন। শনিবার সকাল ১০টা ১৫ মিনিটের দিকে সাতক্ষীরার যশোরেশ্বরী কালী মন্দিরে পৌঁছান নরেন্দ্র মোদি। তাকে স্বাগত জানান মন্দিরের সেবায়েত পরিবারের সদস্য জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় এবং কৃষ্ণা চট্টোপাধ্যায় (জয়তি চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী)। এ সময় তাকে ঐতিহ্যবাহী ঢাক-ঢোল এবং শঙ্খধ্বনি বাজিয়ে বরণ করে নেয়া হয়। সেখানে মোদি বলেন, ‘যশোরেশ্বরী কালী মন্দিরে এসে মা কালীর আশীর্বাদ নিতে পারার সুযোগ পেয়ে আমি খুশি।’ সকালে জেলার শ্যামনগর উপজেলার ঈশ্বরীপুর গ্রামে শতবর্ষের পুরাতন যশোরেশ্বরী কালী মন্দির পরিদর্শন করেন। প্রচলিত রীতি ও ঐতিহ্য অনুযায়ী তাকে মন্দিরে অভ্যর্থনা জানানো হয়। মন্দিরের ভেতরে মোদি মাস্ক পরে ছিলেন এবং তিনি মন্দিরের মেঝেতে বসে প্রার্থনায় অংশ নেন। এ সময় পুরোহিত দিলীপ মুখার্জি তাদের ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ করছিলেন। নরেন্দ্র মোদি এ সময় কালীমাতাকে সোনার মুকুট, লালগুজরাটি শাড়ি, ফল ও মিষ্টি নিবেদন করেন। পরে তিনি মন্দির থেকে বেরিয়ে আসেন এবং ভক্তদের সঙ্গে ফটোসেশন করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দু’দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে শুক্রবার সকালে মোদি ঢাকায় এসেছিলেন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2020 SwadeshNews24
Site Customized By NewsTech.Com