বিশুদ্ধ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত যে, আল্লাহ হাসেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ এমন দুই ব্যক্তির দিকে তাকিয়ে হাসেন যাদের একজন অপরজনকে হত্যা করবে, অথচ উভয়েই জান্নাতে প্রবেশ করবে। ’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৪৭৮৬)
অন্য বর্ণনায় এসেছে, আল্লাহ যখন সর্বশেষ জাহান্নামি ব্যক্তিকে জান্নাতে প্রবেশ করতে বলবেন এবং তাকে ১০টি পৃথিবীর সমান জান্নাত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেবেন, তখন সে বলবে, আপনি আমার সঙ্গে ঠাট্টা করছেন অথবা হাসি-কৌতুক করছেন? (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৩৪৯)
ইমাম শাফেয়ি (রহ.) বলেন, আল্লাহর কিছু নাম ও গুণাবলি কোরআনে বর্ণিত হয়েছে এবং আল্লাহর নবী (সা.) উম্মতকে এই বিষয়ে অবগত করেছেন। যেমন …আল্লাহ তাঁর পথে শহীদ বান্দার সঙ্গে হাসেন।
হাদিসে এসেছে, ‘আল্লাহ তিন ব্যক্তির সঙ্গে হাসেন : এক. ব্যক্তি যখন রাতে (তাহাজ্জুদ) নামাজে দাঁড়ায়, দুই. যখন একদল মানুষ নামাজের জন্য কাতারবদ্ধ হয়, তিন. যখন একদল মানুষ শত্রুর সঙ্গে যুদ্ধ করতে সারিবদ্ধ হয়। (মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস : ১২২৮)
আল্লামা ইবনে খুজাইমা (রহ.) বলেন, আল্লাহ হাসেন তা প্রমাণিত। তবে সেই হাসি তাঁর সত্তা ও গুণাবলির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। কোনো মানুষের সঙ্গে তা বর্ণনা করা বা চিত্রিত করা সম্ভব নয়। কোনো সৃষ্টির হাসির সঙ্গেও তার কোনো সাদৃশ্য নেই। বরং আমরা শুধু বিশ্বাস করব আল্লাহ হাসেন। ঠিক যেমনটি তাঁর নবী আমাদের অবগত করেছেন। আর আমরা বিরত থাকব তার কোনো বিবরণ তুলে ধরা থেকে। (আত-তাওহিদ : ২/৫৬৩)
আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের বৈশিষ্ট্য হলো, নবী (সা.) আল্লাহর ব্যাপারে যে সংবাদ দিয়েছেন তারা তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং নিঃসংকোচে গ্রহণ করে। তবে তার তুলনা করা এবং ব্যাখ্যা করা থেকে বিরত থাকে। এ সংক্রান্ত জ্ঞানকে তারা আল্লাহর সঙ্গে সম্পৃক্ত করে। যেমন জ্ঞানে সুগভীর পাণ্ডিত্বের অধিকারীদের ব্যাপারে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা জ্ঞানে সুগভীর তারা বলে, আমরা এই বিশ্বাস করি, সবই আমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আগত এবং বোধশক্তিসম্পন্নরা ছাড়া আর কেউ শিক্ষা গ্রহণ করে না। ’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ৭)
আল-মাউসুয়াতুল আকাদিয়া