‘জাহির’ (প্রকাশ্য) ও ‘বাতিন’ (গোপন) মহান আল্লাহর দুটি গুণ। বাহ্যত গুণ দুটি পরস্পর বিপরীত মনে হলেও মহান আল্লাহর গুণ হিসেবে তাতে কোনো বিরোধ নেই। কেননা বান্দা বা সৃষ্টির অক্ষমতার কারণে তার কাছে প্রকাশ ও গোপন দুটি বিপরীতমুখী গুণ বা বৈশিষ্ট্য মনে হয়। কিন্তু এই অক্ষমতা ও আপেক্ষিক বিচার আল্লাহর সত্তা ও গুণাবলির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
পবিত্র কোরআনে একই সঙ্গে আল্লাহর জাহির ও বাতিন গুণের বর্ণনা এসেছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘তিনিই আদি, তিনিই অন্ত; তিনিই ব্যক্ত, তিনিই গুপ্ত এবং তিনি সর্ববিষয়ে সম্যক অবহিত। ’ (সুরা : হাদিদ, আয়াত : ৩)
ইমাম তাবারি (রহ.) ‘জাহির বা ব্যক্ত’-এর ব্যাখ্যায় বলেছেন, ‘তিনি সব কিছুর ওপর স্পষ্ট, তাঁর চেয়ে স্পষ্ট কিছু নেই। তিনি সব কিছুর ওপর প্রবল, তার চেয়ে বেশি প্রবল কিছু নেই। ’ (তাফসিরে তাবারি : ২২/৩৮৫)
রাসুলুল্লাহ (সা.) শেখানো একটি দোয়া থেকেও ‘জাহির ও বাতিন’ গুণের ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। তিনি বলতে শেখান, হে আল্লাহ! আপনিই শুরু, আপনার আগে কোনো কিছুর অস্তিত্ব নেই এবং আপনিই শেষ, আপনার পরে কোনো কিছু নেই। আপনিই প্রকাশ, আপনার ঊর্ধ্বে কেউ নেই। আপনিই বাতিন, আপনার অগোচরে কিছু নেই। আমাদের ঋণকে আদায় করে দিন এবং অভাব থেকে আমাদেরকে সচ্ছলতা দিন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৬৭৮২)
আল্লামা ইবনুল কায়্যিম (রহ.) বলেন, ‘আল্লাহর প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য হওয়ার বৈশিষ্ট্য সব প্রকাশ্য বিষয় ও অপ্রকাশ্য বিষয়কে অতিক্রম করেছে। আল্লাহর চেয়ে কোনো বিষয় বেশি প্রকাশ্য নয় এবং কোনো বিষয় আল্লাহর চেয়ে বেশি গোপন নয়। আল্লাহর আগে কোনো কিছু নেই এবং আল্লাহর পরেও কোনো কিছু নেই। এই চারটি গুণের ক্ষেত্রেই আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়। ’ (তরিকুল হিজরাতাইনি, পৃষ্ঠা ২৭)
আল-মাউসুয়াতুল আকাদিয়া