মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের অনুমোদন পেল বঙ্গভ্যাক্স

দেশি কম্পানি গ্লোব বায়োটেকের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা ‘বঙ্গভ্যাক্স’ মানুষের শরীরে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬০ জনের ওপর প্রথম পর্যায়ে প্রয়োগ করা হবে এই টিকা। গতকাল রবিবার বঙ্গভ্যাক্সকে চিঠি দিয়ে অনুমোদনের বিষয়ে জানিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।

গতকাল গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক (কোয়ালিটি অ্যান্ড রেগুলেটরি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বিষয়টি কালের কণ্ঠকে নিশ্চিত করে বলেন, ‘আজ (গতকাল) ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর গ্লোব বায়োটেকের বঙ্গভ্যাক্স মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছে।

অধিদপ্তরের পরিচালক আইয়ুব হোসেন বলেন, ‘তারা আমাদের কাছে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য যে প্রটোকল জমা দিয়েছিল, তা অনুমোদন হয়েছে। তাদের বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছি। এখন তারা এই টিকার ফার্স্ট ফেজ ট্রায়াল করতে পারবে। ’

ট্রায়াল পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের প্রধান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল বলেন, ‘এখন কাঁচামাল আমদানি করে টিকা তৈরি হবে। টিকা তৈরির প্রক্রিয়ার মধ্যেই টিকা প্রয়োগের জন্য স্বেচ্ছাসেবক বাছাই করা হবে। টিকা প্রয়োগ করা হবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে। ৬০ জনকে দুই গ্রুপে ভাগ করা হবে। একটি গ্রুপ হচ্ছে ১৮ থেকে ৫৫ বছর এবং আরেকটি গ্রুপ ৫৫ বছরের বেশি। তাদের ওপর ট্রায়াল হবে। প্রত্যেকে টিকার দুটি ডোজ পাবেন। ফেজ ওয়ান যদি সেফ এবং কার্যকর প্রমাণিত হয় তাহলে আমরা দ্বিতীয় ফেজের জন্য অ্যাপ্লাই করব। ’

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে কভিড-১৯ চীনে ধরা পড়ার পর মহামারি আকারে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া কভিড-১৯-এর টিকা উদ্ভাবনের পর ২০২১ সাল থেকেই প্রয়োগ শুরু হয়।

২০২০ সালের ২ জুলাই দেশে প্রথমবারের মতো করোনার টিকা আবিষ্কারের ঘোষণা দেয় গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিষ্ঠান। এর প্রায় সাড়ে তিন মাসের মাথায় ১৫ অক্টোবর গ্লোব বায়োটেকের তিনটি টিকাকে অনুমোদনপ্রার্থী তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এরপর গত বছরের ১৭ জানুয়ারি বঙ্গভ্যাক্সের প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের নীতিগত পরীক্ষার জন্য বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিলের (বিএমআরসি) কাছে প্রটোকল জমা দেওয়া হয়। এরপর বিএমআরসির চাহিদা অনুযায়ী সংশোধিত প্রটোকল জমা দেওয়া হয় ১৭ ফেব্রুয়ারি।

২০২১ সালের ২২ জুন বিএমআরসি মানবদেহে বঙ্গভ্যাক্সের পরীক্ষা চালানোর অনুমতি দেয়। যদিও এর আগে বানর বা শিম্পাঞ্জির দেহে পরীক্ষা করার শর্ত দেওয়া হয়। গত বছরের ১ আগস্ট প্রতিষ্ঠানটি বানরের দেহে ট্রায়াল শুরু করে, যা শেষ হয় ২১ অক্টোবর। বানরের দেহে টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগে ‘ভালো’ ফল পাওয়ার কথা জানিয়ে গত ১ নভেম্বর বিএমআরসিতে প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল গ্লোব বায়োটেক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *