শুধু অলঙ্কার হিসেবে নয় বরং নিরাপদ সঞ্চয় হিসেবেও স্বর্ণ কিনে রাখেন ভারতীয়রা। সোনার অলঙ্কার কেনাকে ধর্মীয় উৎসব হিসেবেও দেখেন তারা। তাই যে কোনো উৎসবের আগে ধুম পড়ে যায় স্বর্ণ কেনার।
ভারতে চলছে স্বর্ণ কেনার হিড়িক
সুব্রত আচার্য
কালীপূজার আগে হওয়া এই ধর্মীয় উৎসবটির নাম ধনতেরাস। ‘ধন’ মানে সম্পদ এবং তেরাস অর্থ হচ্ছে কৃষ্ণপক্ষের ত্রয়োদশ দিন। ঐতিহ্যগতভাবে এ সময় পালিত হয় উৎসবটি। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, দিনটিতে ধনসম্পদের দেবতা লক্ষ্মী ও কুবের তাদের ভক্তদের বাড়িতে যান। আর সে কারণেই এদিনটিতে ধাতু কিনতে হয়।
এখন থেকে প্রায় এক দেড় দশক আগেও এই উৎসব ভারতীয় অবাঙালিদের মধ্যে দেখা গেলেও সম্প্রতি ধনতেরাস উৎসবে বাঙালিদের অংশগ্রহণ বেড়েছে চোখে পড়ার মতো। মূল্যবান ধাতু স্বর্ণ ও রুপা কেনার দৌড়ে অবাঙালিদের ছাপিয়ে গেছেন পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিরাও। আর এই উৎসবকেই এখন ভারতের সবচেয়ে বড় স্বর্ণ কেনার উৎসব হিসাবেও দেখা হয়।
গত কয়েক বছরে হুহু করে বেড়েছে স্বর্ণের দাম। ছিল করোনা মহামারির মতো সমস্যাও। তারপরও বাঙালি কিংবা অবাঙালি ভারতীয়রা স্বর্ণ কিনতে পিছপা হননি। কেনো স্বর্ণ কেনার প্রতি ভারতীয়দের আগ্রহ বাড়ছে- তা জানতে ভারতের অন্যতম বৃহত্তম স্বর্ণের বাজার কলকাতার বউবাজার এলাকায় যায় সময় টিভি। সেখানে দেখা যায়, ধনতেরাস উপলক্ষে স্বর্ণ কিনতে লম্বা লাইন দিয়ে দাঁড়িয়েছেন ভারতীয়রা। ক্রেতা কিংবা বিক্রেতা উভয়পক্ষই বলছেন, স্বর্ণ শুধু অলঙ্কারই নয় এখন নিরাপদ বিনিয়োগও।
উৎসবে যোগ দিয়ে একজন বলেন, ধনতেরাসে মানুষ নানা রকম জিনিস কেনে তবে এবার আমি এখানে স্বর্ণ কিনতে এসেছি। আরেকজন বলেন, স্বর্ণ অনেক মূল্যবান ধাতু, সে জন্য স্বর্ণটাই কেনা হয়। এটা নারীদের জন্য একটা সম্পদ।
আরেকজন বলেন, এখন জমিজমা কেনার চেয়ে স্বর্ণ কেনা ভালো। একজন বিক্রেতা বলেন, স্বর্ণ এমন একটা জিনিস, যা বিপদের সময় সবচেয়ে বেশি কাজে লাগে। প্রয়োজনে সহজে বিক্রিও করা যায় এটি। করোনার সময় বিক্রি কম হলেও এবার আশা করা যাচ্ছে বিক্রি বেশি হবে।
একটি বেসরকারি পরিসংখ্যানে জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে ভারতের স্বর্ণ মজুত ছিল ৭৪৩ দশমিক ৮৩ মেট্রিক টন। বিশ্বের সেরা দশটি মজুদকারী দেশের মধ্যে ভারতের স্থান নবম। ভারতের যদিও ছোট আকারে চারটি স্বর্ণের খনি রয়েছে। তবে মোট চাহিদার প্রায় ৮০ শতাংশ স্বর্ণ আনা হয় অন্য দেশ থেকে।