মেঘনায় লঞ্চ ডুবিতে ১৪ যাত্রীর লাশ উদ্ধার, লঞ্চ শনাক্ত

image_84676.munshiganj0মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় মেঘনা নদীতে ঝড়ের তোড়ে এমভি মিরাজ- ৪ নামের লঞ্চ ডুবির ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে পাঁচজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। বাকীদের পরিচয় এখনও জানা যায়নি। নিহতরা হচ্ছেন শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার পাঁচগাও গ্রামের জামাল হোসেন সিকদার (৫০), তার ছেলে আবিদ হোসেন সিকদার (২৮) টুম্পা বেগম (৩০), সেতারা বেগম (৫০) ও আরিফ হোসেন (১১)। এ দুর্ঘনায় নিখোঁজ রয়েছেন লিটনের আট বছরের মেয়ে সুমনা ও ছয় বছরের ছেলে মাহিম। এ দুর্ঘটনায় শতাধিক যাত্রী এখনো নিখোঁজ রয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী উদ্ধার হওয়া যাত্রীরা জানিয়েছেন।
মিরাজ লঞ্চের উদ্ধার হওয়া যাত্রী লিটন জানান, বৃস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে ঢাকার সদর ঘাট থেকে শরীয়তপুরের সুরেশ্বর যাবার পথে মিরাজ লঞ্চটি বিকেল সোয়া তিনটার দিকে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার দৌলতপুরের ষোলআনা নামক স্থানে মেঘনা নদীতে হঠাৎ কাল বৈখাশীর ঝড়ের কবলে পড়ে। মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই লঞ্চটি মেঘনার বুকে ডুবে যায়। এ সময় লঞ্চটিতে প্রায় আড়াই থেকে ৩ শতাধিক যাত্রী ছিল। লঞ্চ ডুবির সাথে সাথে অনেক যাত্রী নদী থেকে সাতার কেটে তীরে উঠতে সক্ষম হলেও শতাধিক যাত্রী এখনও নিখোঁজ রয়েছে বলে দাবি করেছে লিটন।
অপর যাত্রী আব্দুল রাজ্জাক জানিয়েছেন, লঞ্চের সারেংয়ের বুদ্ধিমত্তার অভাবে অনেক যাত্রীকেই প্রান দিতে হলো। একটু বুদ্ধি করে সাংরেং লঞ্চটিকে ঘটনাস্থলের কাছাকাছি মেঘনার শাখা নদীতে নিয়ে গেলে হয়তো এতো যাত্রীর প্রানহানি ঘটতো না।
এ ঘটনার পর পরই মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক সাইফুল হাসান বাদল, ভারপ্রপ্ত পুলিশ সুপার জাকির হোসেন মজুমদার, এএসপি (সদর সার্কেল) এমদাদ হোসেন, এডিশনাল ডিআইজি (অপরাধ) শফিকুর রহমান ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়ে স্থানীয়ভাবে ৪০-৫০টি ট্রলার সিবোট দিয়ে উদ্ধার তত্পরতা শুরু করে। উদ্ধার কাজে যোগ দেয় ফায়ার সার্ভিস, নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড সদস্যরা।
সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে বিআইডাব্লিউটিএর উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যায় ও দুর্বার দুর্ঘটনা স্থলে এসে পৌঁছে লঞ্চটি শনাক্ত করার কাজ শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাত লঞ্চটি শনাক্ত করতে পেরেছে উদ্ধারকারী জাহাজ।
নৌপরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান ঢাকা থেকে ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে সন্ধ্যায় মেঘনায় পৌঁছেছেন। লঞ্চ থেকে বেঁচে যাওয়া প্রায় ২৮ জন যাত্রীকে নিরাপত্তা দিয়ে তাদের থাকার ব্যবস্থা করতে তিনি স্থানীয় প্রশাসনকে দির্দেশ দিয়েছেন। তাছাড়া স্বজনের খোঁজে যারা মেঘনা পাড়ে এসেছেন তাদেরকেও নিরাপত্তা ও থাকার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। দুর্ঘটনা তদন্তে ৭ সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন।
মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক সাইফুল হাসান বাদল এ পর্যন্ত ১২টি লাশ উদ্ধারের কথা নিশ্চিত করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *