রমরমিয়ে ফিরছে ক্যাসেট

image_82878_0প্রযুক্তির প্রয়োজনে ফিরে আসতে চলেছে কালের স্রোতে হারিয়ে যাওয়া একদা বহুল জনপ্রিয় এক চরিত্র। ব্রাত্যজনের অবহেলিত কোণ ছেড়ে ফের প্রাসঙ্গিকতার পাদপ্রদীপের আলোয় প্রত্যাবর্তন ঘটতে চলেছে ম্যাগনেটিক টেপযুক্ত ক্যাসেটের।

সে একটা সময় ছিল। শহরের নামী দোকান থেকে শুরু করে পাড়ার গলির ঝুপড়ি, সর্বত্রই বিরাজমান ছিল সে। বাড়ির সুদৃশ্য ড্রয়িংরুম, দূরপাল্লার বাসের স্টিরিও, পিকনিকের আসর, যেকোনো মজলিশ জমাতে তার উপস্থিতি ছিল অনিবার্য। গান শোনাই হোক, বা ঘরে বসে সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করা– নিরঙ্কুশ আধিপত্য বিস্তার করেছিল ক্যাসেট। ভিনিল রেকর্ডিং ডিস্ককে ইতিহাসের পাতায় দ্রুত জায়গা করে দেওয়া ম্যাগনেটিক টেপ বা চৌম্বিক ফিতেওয়ালা প্লাস্টিকের খোলযুক্ত অডিও ও ভিডিও ক্যাসেট নিয়ে মেতে উঠেছিল বিশ্ব।

কিন্তু নব্বইয়ের শেষের দিকে কমপ্যাক্ট ডিস্কের আবির্ভাবের সঙ্গে সঙ্গেই জনপ্রিয়তা হারাতে শুরু করে ক্যাসেট। ফিতে জড়িয়ে বা তাতে জলকণা জমে বহুমূল্য গানের সংগ্রহ নষ্ট হওয়ার যাবতীয় সম্ভাবনা দূর হয় বাজারে রূপোলি চাকতির চলনে। আর সে কারণেই দ্রুত তামাদি হয়ে যায় ক্যাসেট। সত্যি বলতে কি, এক সময় এই ক্যাসেটই যে যুবমানসের হৃদয়ের তাজ ছিল, তা আজকের ছেলে-মেয়েদের কাছে রীতিমতো অবিশ্বাস্য ঠেকে।এরপর ক্যাসেটের ঠাঁই হয় সে কালের যুবা, হালে মধ্যবয়সীদের স্মৃতির সিন্দুকে।

কিন্তু এ হেন ক্যাসেটই ফিরে আসতে চলেছে বাজারে। অবাক করার মতো এই সম্ভাবনার কথা সম্প্রতি শুনিয়েছে বিশ্বের অন্যতম সেরা প্রযুক্তি বিপণন সংস্থা সোনি। অতীতে কম্পিউটারে রক্ষিত অসংখ্য তথ্য পাকাপাকি ভাবে সঞ্চয় করতেও ম্যাগনেটিক টেপ বা চৌম্বিক ফিতের উপরই ভরসা করা হত। বর্তমানে আবার সেই প্রযুক্তির উপরই নির্ভর করার কথা ভাবছে সংস্থা। জানা গিয়েছে, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে এক বর্গ ইঞ্চি ফিতেয় মোট ১৪৮ জিবি তথ্য সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে। আর ক্যাসেট ভর্তি টেপে তুলে রাখা যাবে ১৮৫ টেট্রাবাইট তথ্য, যা ৩,৭০০ ব্লু-রে ডিস্কে বা ৫ লক্ষ সিডি-তে ধরে।

তাই আগামী দিনে তথ্য সংরক্ষণের কারণে ফের প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠতে চলেছে বিস্মৃতির আড়ালে চলে যাওয়া ক্যাসেট।- ওয়েবসাইট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *