লিচু
লিচুর আদি নিবাস চীনে হলেও এটি এখন আমাদের নিজস্ব ফল হয়েই দাঁড়িয়েছে। আমাদের দেশের রাজশাহী ও দিনাজপুরে প্রচুর পরিমাণে লিচুর চাষ হয়ে থাকে।বাজারে মাত্রই লিচু ওঠা শুরু হয়েছে। ফলটি দেখতে যেমন সুন্দর, খেতে তেমনই সুস্বাদু। লিচু খেতে পছন্দ করেন না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার।
লিচুর রয়েছে অবাক করা সব পুষ্টিগুণ। লিচুতে আছে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, রিবোফ্লাবিন, নিয়াসিন ইত্যাদি। রিবোফ্লাবিন মুখ ও জিহ্বার ঘা সারাতে দারুণভাবে সাহায্য করে। আর শরীরের হাড়, দাঁত, চুল, নখের জন্য লিচুতে আছে যথেষ্ট পরিমাণে ক্যালসিয়াম। নিয়াসিন জিহ্বার রোগ, শরীরের জ্বালাপোড়া ও দুর্বলতাকে দূরে রাখবে। ভিটামিন এ দেবে রাতকানা রোগ থেকে মুক্তি। ত্বকের লাবণ্য বাড়াতে লিচুর উপাদান বেশ কার্যকর। যারা বয়সের ছাপ গোপন রাখতে চান তারা লিচুর ওপর ভরসা রাখতে পারেন। এটি বয়সের বলিরেখা মুছে দিতে কার্যকরী।
লিচু বাজারে থাকেও খুব অল্প কয়েকদিন। তাই আগেভাগেই চেখে দেখতে পারেন। তবে এত গুণাগুণ জেনে আবার একসঙ্গে পেট ভরে লিচু খাওয়া যাবে না। এতে পেট খারাপের আশংকা আছে। যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের একটু দেখেশুনে লিচু খাওয়া ভালো। কারণ লিচুতে থাকা সুগার আপনার ডায়াবেটিসের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে।
জামরুল
ঢাকাইয়া ভাষায় আমরুজ বলুন আর সাদা জাম বলুন, আপনাকে স্বীকার করতেই হবে, জামরুলের মতো নিরীহ-সাধাসিধে ফল খুব কমই আছে। ক্রান্তীয় অঞ্চলের ফল জামরুল। ভারত, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলংকা, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ডে প্রচুর জামরুল হয়। আমাদের দেশেও এখন বাণিজ্যিকভাবে জামরুলের চাষ হচ্ছে।
সাধারণত মাঘ মাস থেকে চৈত্র মাসের মধ্যে গাছে ফুল আসে আর চৈত্র থেকে জ্যৈষ্ঠ মাসের মধ্যে পাকা জামরুল পাওয়া যায়। ডায়াবেটিক রোগীর জন্য খুবই উপকারি এই জামরুল। যারা ওজন কমানোর চেষ্টায় আছেন, তারা এই ফলটিকে পথ্য হিসেবে নিতে পারেন। যতই খাবেন পেট ভরবে কিন্তু খুব বেশি মোটা হওয়ার ভয় থাকবে না।
দেখতে ছোট ফল হলেও কাজ করে সাইজে বড় ফলের সমান! এতে আছে তরমুজ ও আনারসের সমান খনিজ পদার্থ। আম ও কমলার চেয়ে তিনগুণ! ক্যালসিয়াম ধারণের দিক থেকেও আঙুরকে হার মানিয়েছে জামরুল। একটি লিচুর সমান ক্যালসিয়াম পাবেন আপনি একটি জামরুলে।
এখানেই শেষ নয়, জামরুলে আছে পেঁপে ও কাঁঠালের চেয়ে বেশি আয়রন এবং আম, কমলা ও আঙুরের চেয়ে বেশি ফসফরাস। তাই দেখতে ছোটখাটো হলেও জামরুলকে হেলাফেলায় নেয়ার কোনো কারণ নেই।