প্রতিরক্ষা ব্যয়ের বিশদ তথ্য ভবিষ্যতে পাওয়া যাবে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জাতীয় সংসদকে এ তথ্য জানিয়ে বলেছেন, ‘প্রতিরক্ষা বাজেট সম্পর্কে তেমন কিছু বলা হয় না। আমাদের দেশে ক্ষমতার অবৈধ দখলের কারণে এটা প্রথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা খুব সুস্থ প্রথা হয়নি।’
সরকারের শরিক জাসদের সাংসদ মঈন উদ্দীন খান বাদল প্রতিরক্ষা বাজেটের তথ্য প্রকাশের দাবি তোলায় অর্থমন্ত্রী গতকাল সোমবার সংসদকে এ কথা জানান।
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে গতকাল ২০১৩-১৪ অর্থবছরের বাজেটের সম্পূরক বরাদ্দ অনুমোদন হয়। অর্থমন্ত্রী দেশের আর্থিক খাতে বিভিন্ন কেলেঙ্কারির ওপর শ্বেতপত্র প্রকাশ করবেন বলে সংসদকে জানিয়েছেন।
অর্থমন্ত্রী প্রতিরক্ষা ব্যয় প্রকাশের দাবির কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমি পাঁচ বছর ধরে এই প্রথা সংস্কারের চেষ্টা করছি। আশা করছি, এই মেয়াদেই সংস্কার করতে পারব। আশা করি ভবিষ্যতে প্রতিরক্ষা বাজেট সম্পর্কে বিস্তারিত পাবেন।’
পরে স্বতন্ত্র সদস্য রুস্তম আলী প্রতিরক্ষা খাতে সম্পূরক বাজেট বরাদ্দের বিরোধিতা করেন। তিনি বিস্তারিত তথ্য প্রকাশের দাবি করে বলেন, প্রতিরক্ষা খাতে সমরাস্ত্র কেনা, সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর কার জন্য কী কিনতে কত টাকা লাগে, বেতন-ভাতায় কত টাকা খরচ হয়, তার তথ্য দিতে হবে। তিনি বলেন, দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনী বিজাতীয় নয়, ঔপনিবেশিক নয়।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফ হোসেন এর জবাব দেন। তিনি বলেন, প্রত্যেক দেশেই এখন প্রতিরক্ষা বাজেট স্বচ্ছ করার আলোচনা চলছে। বাংলাদেশও সেখানে আলোচনার স্বাক্ষরকারী। প্রতিরক্ষা বাজেট গোপন রাখার কারণে অনেক সময় ভুল বোঝাবুঝি হয়, এক দেশের সঙ্গে অন্য দেশের সংঘর্ষ হয়। আওয়ামী লীগ সরকার এ বিষয়ে স্বচ্ছতা আনতে চায়। সামরিক সরকারগুলো এগুলো গোপন রাখে। প্রকাশ করে না। এরপর তিনি প্রতিরক্ষা খাতে অতিরিক্ত বরাদ্দের দাবিটি সংসদে উত্থাপন করলে কণ্ঠভোটে তা পাস হয়।
বাজেট পেশের পর প্রতিরক্ষা বাজেটের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রথম আলোতে একাধিক লেখা প্রকাশ করা হয়েছে। এর পরই সংসদে গতকাল এ নিয়ে আলোচনা হলো। সরকারও প্রতিরক্ষা বাজেটের বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে বলে জানাল। যোগাযোগ করা হলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, এটা ইতিবাচক। অনেক দিন ধরেই এই দাবি করা হচ্ছে। প্রতিরক্ষা বাহিনী জনগণের অর্থে, জনগণের স্বার্থে নিরাপত্তা দেয়। ফলে জনগণ তাদের ব্যয়ের তথ্য জানতে পারে। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে কেন, সদিচ্ছা থাকলে যে বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে তার আলোচনাতেই এ তথ্য আসতে পারে। প্রক্রিয়াটা চর্চা করা শুরু হতে পারে৷ তিনি আরও বলেন, জনগণ প্রতিরক্ষা বাজেট সম্পর্কে যত বেশি জানতে পারবে, তত েবশি তাদের আস্থা বৃদ্ধি পাবে। স্বচ্ছতার মাধ্যমেই জনগণের আস্থা বাড়ানো যাবে।
সংসদে অর্থমন্ত্রী বেসিক ব্যাংক, হল-মার্ক কেলেঙ্কারি, শেয়ারবাজারে উত্থান-পতন নিয়ে আলোচনার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আর্থিক খাতের কেলেঙ্কারি আমার মন্ত্রণালয়ের জন্য লজ্জাকর, দুঃখজনক। জাতির জন্যও দুঃখজনক।’ এ পর্যায়ে তিনি আর্থিক খাতের কেলেঙ্কারির ওপর শ্বেতপত্র প্রকাশ করবেন বলে জানান।
আর শেয়ারবাজার সম্পর্কে তিনি বলেন, ঐতিহাসিকভাবেই বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে উত্থান-পতন হয়। তবে ডিমিউচুয়ালাইজেশনের পর বাজার আরও খারাপ হয়েছে, জাতীয় পার্টির সাংসদ কাজী ফিরোজ রশীদের এমন বক্তব্যকে তিনি নাকচ করে দেন। বলেন, সঠিক সময়ে এটা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ শেয়ারবাজারকে গুরুত্ব দিয়েছে। কেননা ব্যাংকের অর্থে শিল্প হবে না। দীর্ঘ সময়ের জন্য অর্থ আসবে এই পুঁিজবাজার থেকে।
এর আগে কাজী ফিরোজ রশীদ সম্পূরক বাজেটের আলোচনায় বলেন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ৪৪০ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ চাচ্ছে। কিন্তু, অর্থমন্ত্রী কি বলবেন, দিনদুপুরে একেকটা ব্যাংক ডাকাতি হচ্ছে। আজও প্রথম আলোতে ছাপা হয়েছে, বেসিক ব্যাংকে লুটপাটের জন্য পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিতে বাংলাদেশ ব্যাংক সুপারিশ করলেও তা করা হচ্ছে না। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনেও ছাপা হয়েছে বেসিক ব্যাংকে যা হয়েছে, তা ডাকাতি। হল-মার্ক গ্রুপ, বিসমিল্লাহ গ্রুপ টাকা নিয়ে গেল। বাংলাদেশ ব্যাংক তদারকি করছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের