মর্টেন লুন্ড৷ ডেনমার্কের এই উদ্যোক্তার অনেক পরিচয় থাকলেও স্কাইপের সহবিনিয়োগকারী হিসেবে বেশি পরিচিত। তিনি শতাধিক সফল ব্যবসায় উদ্যোগের শুরুর দিকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত আছেন৷ মূলত ইন্টারনেট, টেলিযোগাযোগ, স্বাস্থ্য ও বিকল্প শক্তি খাতে তিনি বিনিয়োগ করে থাকেন৷ রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ৪ থেকে ৭ জুন অনুষ্ঠিত ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড ২০১৪ মেলায় যোগ দিতে তিনি ঢাকা এসেছিলেন৷ সেখানেই ৬ জুন কথা হয় তাঁর সঙ্গে৷
সহজ কোনো পথ বেছে না নিয়ে উদ্যোক্তা হয়ে উঠলেন কেন?
মর্টেন লুন্ড: আসলে উদ্যোক্তা হওয়াই আমার কাছে সবচেয়ে সহজ ছিল, কারণ অন্য কোনো কাজ আমি পারব না। আমি বিপণনে ভালো ছিলাম৷ আমাকে শুধু আমার পরিকল্পনাগুলো সঠিক মানুষের সামনে উপস্থাপন করতে হয়েছে৷
শতাধিক সফল স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও মানুষ কিন্তু স্কাইপের কথা বেশি জানে৷ স্কাইপের শুরুর কথা একুট বলুন…
মর্টেন লুন্ড: আমি স্কাইপের পরিকল্পনাকারী নয়, সেই দলেও ছিলাম না৷ আমাকে যখন এর উদ্যোক্তারা বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তখন সত্যি বলতে আমি তাঁদের সেই উদ্যোগ পছন্দ করিনি৷ সে সময় মাইক্রোসফটের মেসেঞ্জার বাজার দখল করে ছিল, তাদের মতো বড় খেলুড়ের সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকা মোটামুটি অসম্ভব ছিল। কিন্তু আমি এর উদ্যোক্তাদের আবেগ দেখেছিলাম, তাঁদের অধ্যবসায়, তাঁদের প্রচেষ্টায় মুগ্ধ হয়েছিলাম। কোথাও বিনিয়োগ করার আগে আমি এর পেছনের মানুষদের দেখি, তাঁদের নিষ্ঠা, তাঁদের সততা দেখি৷
আপনার চোখে বাংলাদেশের তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য সবচেয়ে বড় বাধা কোথায়?
মর্টেন লুন্ড: বাধা যেমন পৃথিবীর এই প্রান্তে আছে, তেমনই অপর প্রান্তেও আছে৷ বাংলাদেশের তরুণদের আলাদা করে দেখার সুযোগ নেই। আপনার একটি নিখাদ আইডিয়া থাকতে হবে৷ এটাই মূল কথা।
সফলতা ছাড়া আপনার ব্যর্থতার কোনো কাহিিন আছে?
মর্টেন লুন্ড: প্রতি দশটার মধ্যে আমার ছয়টি উদ্যোগই ব্যর্থ হয়েছে৷ হয়তো পরিকল্পনা সঠিক ছিল না, হয়তো পেছনের মানুষগুলোকে চিনতে ভুল হয়েছে, হয়তো মানুষের চাহিদায় পরিবর্তন এসেছে—আমরা দ্রুত পদক্ষেপ নিতে পারিনি। কিন্তু তাই বলে কি আমি থেমে ছিলাম?
বাংলাদেশে এসে কী মনে হচ্ছে?
মর্টেন লুন্ড: এত তরুণ একসঙ্গে এখানে এসেছে, তাদের এই আগ্রহ আমাকে অভিভূত করেছে। তাদের জন্য সঠিক কাজের ব্যবস্থা করতে পারলে এই দেশের উন্নতিতে কোনো বাধা টিকবে না।
আপনার অনুপ্রেরণা কী? কিংবা সাফল্যের চাবিকাঠি?
মর্টেন লুন্ড: আমার চার সন্তান আমার অনুপ্রেরণা৷ দিনশেষে যখন তাদের মুখ দেখি, তখন আরেকটি দিন শুরুর শক্তি পাই। আর আমি তা-ই করি, যা করতে আমি ভালোবাসি। —সাক্ষাৎকার: মেহেদী হাসান