বান্দরবান জেলার লামা থানার অন্তরগত আজিজনগর এর স্থায়ী বাসিন্দা এস.ডি.জীবন। এক কথায় দক্ষিণ চট্টগ্রামের সেই ছেলেটি অনেক চড়াই উতরাই পেরিয়ে, আজ নিজের অবস্থান তৈরী করে নিয়েছে। শেখার আগ্রহ, প্রবল ইচ্ছাশক্তি ও কঠোর পরিশ্রমের ফলে যে, নিজের শক্ত অবস্থান তৈরী করা যায় তার প্রমাণ নির্মাতা এস.ডি.জীবন। চট্টগ্রামের চকবাজারস্থ তারই প্রতিষ্ঠান “জীবনপ্রিয়া প্রোডাক্শন এন্ড এ্যাড হাউস” এ বসে কথা হলে তার সাথে।
সংস্কৃতিমনা পরিবারেই আমার বেড়ে উঠা। বাবার মঞ্চে অভিনয়ের সুবাধে, মঞ্চে অভিনয়ের পথ সুগম হয়। অভিনয় করতাম মঞ্চে। বাকশক্তির জোড়ে অল্প সময়ের মধ্যেই প্রমোটর এর কাজ শুরু করি। এর পর থেকেই নির্দেশনা দিতাম, সময়টা অনেক আগের। এর পরের পথটাতো আরো কঠিন-বললেন উদিয়মান তরুন পরিচালক এস.ডি.জীবন। ২০০৫ সালে অভিনয় বিষয়ক এক কর্মশালা করতে আমি চট্টগ্রামে আসি। তখন থেকেই বদলে যায় আমার মন। অনেক কিছু শিখতে হবে। অনেক দূর যেতে হবে,হতে হবে পুরোদস্তুর পরিচালক। মনে মনে স্বপ্নকে লালন করে ২০০৭ সালে পড়াশুনা শেষ করে আমি চলে যায় ঢাকায়। হাতে কলমে কাজ শেখা শুরু করি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরুস্কারপ্রাপ্ত পরিচালক “শ্রদ্ধেয় মোস্তাফিজুর রহমান মানিকের” কাছে। তার সহকারী হিসেবে ছিলাম বেশ কিছু দিন। এর মধ্যে নির্মাণ বিষয়ক বিভিন্ন কর্মশালা ও র্কোস সম্পন্ন করি। বিজ্ঞাপন ও নাটক নির্মাণের কাজ শিখি বিশিষ্ট নির্মাতা দিপু সিকান্দার এর কাছে। ঝুলিতে আছে বেশ কিছু চলচ্চিত্র, নাটক ও বিজ্ঞাপন নির্মাণের অভিজ্ঞতা। এক প্রশ্নের জবাবে এস.ডি.জীবন বলেন-হয়তো আমরা রাজধানী ঢাকার তুলনায় প্রযুক্তিগত ভাবে অনেক পিছিয়ে আছি। কিন্তু তাই বলে মেধা ও মননে কিন্তু আমরা ও কম নই। চট্টগ্রাম মিডিয়া সম্পর্কে ঢাকা বাসীদের একটা ভ্রান্ত ধারণা আছে। তাদের ধারণা-চট্টগ্রামের নির্মাতারা নিত্য নতুন প্রযুক্তি তথা সময়ের সাথে খাপ খাইয়ে চলতে পারে না। তাইতো আমার স্বপ্ন-চট্টগ্রামে থেকেই ভালো কিছু কাজ করা, চট্টগ্রামের দৃশ্যপট বদলে দেওয়া এবং চট্টগ্রামের বিনিয়োগকারীদের সেবা দেওয়া। সেই লক্ষ্যেই আমি এবং আমার বন্ধু প্রিয়াসী মিলে ২০১৪সালের জানুয়ারীতে চট্টগ্রামে গড়ে তুলেছি- “জীবন প্রিয়া প্রোডাক্শন এন্ড এ্যাড হাউস”।
কোন ধরণের সেবা পাবে আপনার মাধ্যমে চট্টগ্রামবাসী? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন – আমার প্রোডাক্শন হাউসে আছে-হাই ডেফিনেশন ক্যামেরা(ফুল এইচ.ডি),জিবর্আম,ট্টলি,ট্টাইপড, লাইট,র্বোড সহ শুটিং সরঞ্জাম, উন্নত এডিটিং প্যানেল ও দক্ষ জনবল। যেখান থেকে নির্মাণ করা যাবে- বিজ্ঞাপনচিত্র,ডকুমেন্টারী, র্শটফ্লিম, নাটক, টেলিফ্লিম ও চলচ্চিত্র। রয়েছে দক্ষ ও অভিজ্ঞ মডেল।
এরই মধ্যে এস.ডি.জীবন, শিল্পী লুৎফর হাসান, আফরিন সুমি, রাজীব, এফ.এ সুমন, বেলাল খান, কাজী শুভ, সালমা, রাশেদ ও নিশিথা বড়–য়া সহ আরো অনেক শিল্পীর গানের মিউজিক ভিডিও নির্মাণ করেছেন। যা বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে সম্প্রচার হচ্ছে। বিজ্ঞাপনচিত্রও নির্মাণ করেছেন তিনটি। স্যাটেলাইট চ্যানেল সি.সি.এল বাংলায় সম্প্রচারিত হচ্ছে বিজ্ঞাপনচিত্র গুলো।
এ সময়ে এসে আপনার চাওয়া কি? নতুনদের জন্য আসলে প্রতিবন্ধকতা অনেক। যারা প্রযোজক ও নির্মানের সাথে জড়িত তাদের দরকার নতুদের সুযোগ দেয়া। তাহলে দেখা যাবে, প্রকৃত প্রতিভাকে বিকশিত করতে পারছে নতুনরা। আর বিনিয়োগকারীদের বলবো- আস্থা রাখুন, ভালো বাজেট রাখুন, ভালো কাজ হতে বাধ্য।
পরিশেষে- হঠাৎ করে খ্যাতি অর্জনে নয়, বরং কঠোর সাধনা আর পরিশ্রমের মাধ্যমে বিকশিত করতে চাই নিজের মেধা। এখনো শিখছি। সময় বলে দিবে কখন আসবে সফলতা। উদিয়মান তরুণ নির্মাতা এস.ডি.জীবনের যত গুণাবলী আছে, তা এখনো হযতোবা অপ্রকাশিত। সকলের সহযোগিতা আর বিনিয়োগকারীদের পৃষ্ঠপোষকতায়, সময় যখন অনুকূলে দাঁড়াবে তখন পাওয়া যাবে তার প্রকৃত গুণের পরিচয়। আমাদের পক্ষ থেকে তার জন্য রইলো শুভ কামনা।