প্রথম ম্যাচে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন স্পেনকে বিধ্বস্ত করা নেদারল্যান্ডস পরের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছে ঘাম ঝরিয়ে। ৩-২ গোলের এই জয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়াটা প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেল গতবারের রানার্সআপদের।
টানা দুই ম্যাচ জিতে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ‘বি’ গ্রুপের শীর্ষে আছে নেদারল্যান্ডস। দুই ম্যাচের দুটিতেই হেরে বিদায় প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছে অস্ট্রেলিয়ার।
বুধবার দারুণ এই জয়ের পরও কিছুটা হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে ডাচদের। পরপর দুই ম্যাচে হলুদ কার্ড পাওয়ায় গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে খেলতে পারবেন না ফরোয়ার্ড রবিন ফন পের্সি। একই কারণে স্পেনের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার শেষ ম্যাচে খেলতে পারবেন না ফরোয়ার্ড টিম ক্যাহিলও।
ফুটবল ইতিহাস আর ঐতিহ্যে সকারুদের চেয়ে ডাচরা যোজন যোজন এগিয়ে থাকলেও আগের তিন মুখোমুখি লড়াইয়ে ছিল ভিন্ন অবস্থান। অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর সুখস্মৃতি ছিল না ‘টোটাল ফুটবলের’ জনক নেদারল্যান্ডসের। একবার জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া, বাকি দুটি হয়েছে ড্র।
বুধবার পোর্তো আলেগ্রের স্তাদিও বেইরা-রিওতেও ম্যাচের শুরুতে অস্ট্রেলীয়দের আধিপত্য ছিল। প্রথম ২০ মিনিটে নিশ্চিত কোনো সুযোগ তৈরি করতে না পারলেও ডাচদের সীমানায় বল রাখে অস্ট্রেলিয়া। ওই সময় ছন্দ খুঁজে পেতেই ব্যস্ত ছিল প্রথম ম্যাচে স্পেনকে ৫-১ গোলে বিপর্যস্ত করা নেদারল্যান্ডস।
তবে এরপরই ‘রবেন ঝলকানি’তে এগিয়ে যায় নেদারল্যান্ডস। মাঝ মাঠ থেকে বল পায়ে ক্ষিপ্ত গতিতে ছুটে গিয়ে ডি বক্সের মাঝে বাঁ দিক থেকে কোনাকুনি শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন তিনি।
বিশ্বকাপে বায়ার্ন মিউনিখের এই ফরোয়ার্ডের এটা তৃতীয় গোল। স্পেনের বিপক্ষে আগের ম্যাচে জোড়া গোল করেন তিনি।
তবে ডাচ সমর্থকদের উল্লাস মিনিটখানেকও স্থায়ী হয়নি। ডান দিক থেকে দারুণ একটা ক্রস পেয়ে ডি বক্সের মাঝ থেকে দুর্দান্ত ভলিতে দলকে সমতায় ফেরান অস্ট্রেলিয়ার ফরোয়ার্ড টিম ক্যাহিল।
এক মিনিটের ব্যবধানে ডাচদের ফের চমকে দেওয়ার ভালো দুটি সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। ৩০তম মিনিটে মিডফিল্ডার মার্ক ব্রেসিয়ানো জোরালো একটি ভলি ক্রসবারের উপর দিয়ে চলে যায়। আর ৩১তম মিনিটে জ্যাসন ডেভিডসনের শটটি ঠেকিয়ে দেন ডাচ গোলরক্ষক।
প্রথমার্ধের মতো দ্বিতীয়ার্ধেও মাঠ দখলের লড়াইয়ে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে আক্রমণের পর আক্রমণ করতে থাকে অস্ট্রেলিয়া। ৫৪তম মিনিটে ম্যাচে প্রথমবারের মতো এগিয়েও যায় তারা। অলিভিয়ের বোজানিচের ক্রস ডাচ ডিফেন্ডার ডারিল ইয়ানমাতের হাতে লাগলে পেনাল্টি দেন রেফারি। তা থেকেই লক্ষ্যভেদ করেন অধিনায়ক মাইল জেডিনাক।
তবে সকারুরা এগিয়ে ছিল মাত্র চার মিনিট। রক্ষণের ভুলে ডি বক্সের মধ্যে ফাঁকায় বল পেয়ে যান ফরোয়ার্ড রবিন ফন পের্সি। গোলরক্ষককে পরাস্ত করে স্কোরবোর্ডে ২-২ সমতা ফেরাতে কোনো ভুল করেননি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের এই তারকা।
সতীর্থ রবেনের মতো এই বিশ্বকাপে ফরোয়ার্ড পেসিরও এটা তৃতীয় গোল। স্পেনের বিপক্ষে তিনিও জোড়া গোল করেছিলেন
এরপর আর প্রতিপক্ষকে বেধে রাখতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। ৬৮তম মিনিটে ২৫ গজ দূর থেকে অতর্কিত জোরালো এক শটে নেদারল্যান্ডসকে এগিয়ে দেন ফরোয়ার্ড মেমফিস ডিপাই। তার দুর্দান্ত শটটি বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়েও ঠেকাতে পারেন নি অস্ট্রেলিয়ার গোলরক্ষক ম্যাট রায়ান।