১২ বছরের কিশোরের মহৎ কীর্তি…

30511_yearমানুষ মানুষের জন্যে, জীবন জীবনের জন্যে। প্রয়াত কিংবদন্তী সংগীতজ্ঞ ভূপেন হাজারিকার গানের সেই কথাগুলো আজও মুখে মুখে ফেরে। কিন্তু, সহানুভূতির সেই জায়গাটা কি সবার মধ্যে জাগ্রত! তা যদি হতো, তাহলে আজও অনাহারে, অর্ধাহারে, রোগে জর্জরিত হয়ে মানুষকে মরতে হতো না। যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যের মাত্র ১২ বছর বয়সী এক কিশোরের কীর্তিতে বড়দেরকেও লজ্জা পেতে হয়। মাথার ওপর যাদের কোন ছাদ নেই, তাদের জন্য রবিন হুডের ভূমিকায় নেমেছে রবি এলমার্স। লাইনে দাঁড়িয়ে রবির কাছ থেকে খাবার সংগ্রহ করছেন গৃহহীনরা। রবির সঙ্গে তার দাদী ও স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যের সবচেয়ে জনবহুল শহর ডেট্রয়েটের একটি এলাকায় এ চিত্র নিয়মিত। এ খবর দিয়েছে অনলাইন মিড-ডে। ৩ বছর আগে রবি এলমার্সের পিতার মৃত্যু হয়। ৮ বছর বয়সে একটি আশ্রয়কেন্দ্রে দাদীর সঙ্গে একবার কাপড় বিতরণ করতে গিয়ে ঠিকানাবিহীন মানুষের দুর্দশার চিত্র গভীরভাবে রেখাপাত করে রবির মনে। সেই মুহূর্ত থেকে রবি প্রতিজ্ঞা করে গৃহবিহীনদের সাহায্য এবং তাদের সমস্যা সমাধান করার। বাস্তুচ্যুত মানুষদের জন্য ডেট্রয়েটে টিউমেইনি নামে যে আশ্রয়কেন্দ্র আছে, সেখানে প্রতি শনি ও রোববার দাদীর সঙ্গে যায় রবি। সেখানে লম্বা একটি টেবিলে বহু খাবার রেখে তা সবার মধ্যে বিতরণ করে। গৃহহীনদের সম্পর্কে রবি বলে, এনারা আমার বন্ধু। রবি তাদের সঙ্গে হ্যান্ড শেক করে, সবার সঙ্গে কথা বলে, গল্প করে ও তাদের খোঁজ খবর নেয়। ১২ বছরের এই কিশোর যে অর্থ খাবার কেনার পেছনে ব্যয় করে, সে তহবিলটা আসে তার জন্মদিন আর বড়দিনে জমানো টাকা থেকে। দাদীও তাকে অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করেন। এতোদিন যে মানুষগুলো উপেক্ষিত ছিলেন, তাদের জন্য কিশোর বয়সী রবি এখন আশা-ভরসার নাম। ডেট্রয়েটে গৃহহীন মানুষের সংখ্যা ২০ হাজার। কিন্তু, আশ্রয়কেন্দ্রের বেডের সংখ্যা মাত্র ১ হাজার ৯০০টি। এ সমস্যাও ভাবিয়ে তুলেছে রবিকে। ভবিষ্যতে তাদের জন্য আরও বড় পরিসরে কিছু করার স্বপ্ন দেখে রবি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *