মাহে রমজানে ইফতারের অন্যতম প্রধান অনুসঙ্গ মুড়ি। আর এ মুড়ির চাহিদা ব্যাপক হওয়ায় বৃহত্তর দিনাজপুরে এক শ্রেণির অসাধু মুড়ি ব্যবসায়ী বিষাক্ত হাইড্রোজ মিশিয়ে তৈরি করছে মুড়ি।
ব্যবসায়ীরা বলেছেন, বর্তমানে কারখানার তৈরি হাইড্রোজ মেশানো সাদা মুড়ির বাজার দখল করায় বাধ্য হয়ে তারাও মুড়িতে হাইড্রোজ ব্যবহার করছেন।
সাদা ভেজাল মুড়ি তৈরি করে জেলার হাটবাজারে দেদারছে করছে বাজারজাত। হাইড্রোজ মেশানো মুড়ি কিনে প্রতারিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এই মুড়ি খেয়ে মানব দেহে উচ্চ রক্তচাপ, আলসার, ক্যান্সারসহ নানান রোগের ঝুঁকি বাড়ছে।
মুড়ির চাল উৎপাদনের অন্যতম ক্ষেত্র দিনাজপুর। জেলা শহরের রাজবাটী, মাতা সাগর, পুলহাট, ফুলবাড়ী উপজেলার আলাদীপুর, দাসপাড়া, পাকাপান ও বাড়াই গ্রামের শতাধিক পরিবার মুড়ি উৎপাদন ও ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
এরা এক সময় বিশুদ্ধ মুড়ি তৈরি করলেও বাজারে টিকে থাকতে এখন বেছে নিয়েছে হাইড্রোজসহ ক্ষতিকর রাসায়নিক মেশানোর পথ। এসব মহিলারাই মুড়ি তৈরি থেকে শুরু করে বিক্রির কাজও করেন। তারা মুড়িতে হাইড্রোজ মেশানোর কথা স্বীকার করছেন।
দিনাজপুর রেলবাজার হাটের মুড়ি বিক্রেতা অমিতা বালা বলেন, ”হামার করার কিছুই নাই। ভালো, সাদা ফট ফটে দেখা না গেইলে মাইনষে মুড়ি নেয় না। এ জইন্যে হামরা মুড়িত হাইড্রোস দেই।”
তিনি জানান, এর ফলে দেখতে সাদা ও সুন্দর হওয়ায় ক্রেতারা আকৃষ্ট হচ্ছেন হাইড্রোজ মেশানো মুড়িতে।
ক্রেতারা না জেনেই কিনছেন হাইড্রোজ মেশানো বিষাক্ত মুড়ি। আর এসব মুড়ি মানব দেহে যে কি প্রভাব ফেলছে তা অনেকের অজানা।
মুড়ি কিনতে আসা ক্রেতা আবু সাঈদ বলেন, ”আমরা তো আর ইচ্ছে করে এসব মুড়ি নেই না। কোনটা ভালো, কোনটা খারাব আমরা তো আর জানি না।”
দিনাজপুর জেলার ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মাসতুরা বেগম জানান, হাইড্রোজ মিশ্রিত মুড়ি খেয়ে মানুষ উচ্চ রক্তচাপ, আলসার ছাড়াও মরণ ব্যাধী ক্যান্সারেও আক্রান্ত হচ্ছে।
এসব মহিলারাই মুড়ি তৈরি থেকে শুরু করে বিক্রির কাজও করেন। তারা মুড়িতে হাইড্রোজ মেশানোর কথা স্বীকার করছেন।
সাদা মুড়ির চাহিদা রয়েছে বাজারে। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার জন্য মুড়ি ব্যাবসায়ীরা রাসায়নিক সার, সোডাসহ হাইড্রোজ মেশাচ্ছেন মুড়িতে।
হাইড্রোজ মিশ্রিত মুড়ি তৈরি ও বাজারজাত করণে প্রতিরোধ গড়তে কঠোর হস্তক্ষেপ দেয়ার কথা জানিয়েছেন দিনাজপুর জেলা প্রশাসক আহমদ শামীম আল রাজী। তিনি বলেন, ”আমরা শীঘ্রই এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নিবো।”