কাল রাতে লন্ডন থেকে রওনা দিয়ে সাকিব আল হাসানের ঢাকায় পৌঁছানোর কথা আজ সকালে। পৌঁছে সম্ভবত বিকেলেই মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের অনুশীলনে যোগ দেবেন।
সাকিবকে নিয়ে সর্বশেষ বিতর্ক, বিসিবির অনাপত্তিপত্র না নিয়েই তিনি চলে গেছেন ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (সিপিএল) খেলতে। যদিও অনাপত্তিপত্র পাওয়ার আশ্বাসসহ ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খানের মৌখিক সম্মতি নিয়েই তিনি দেশ ছেড়েছিলেন। আকরাম নিজেও কাল টেলিফোনে বলছিলেন, ‘সাকিবের সঙ্গে আমার বেশ কয়েকবারই কথা হয়েছে। আমি বলেছি ওকে সিপিএলে যেতে।’ ক্রিকেটারদের এসব বিষয় ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগই দেখাশোনা করে থাকে। সেই বিভাগের প্রধানের সম্মতি পাওয়ার পর সাকিব হয়তো ধরেই নিয়েছেন যে অনাপত্তিপত্র তিনি পাচ্ছেন।
আর সাকিবের এ মুহূর্তে সিপিএলে খেলতে যাওয়া যে বোর্ড বা কোচ চাইছেন না, সেটা খোদ আকরাম খানই না জানলে সাকিবের তো জানার প্রশ্নই আসে না। তা-ও তিনি সেটা জেনেছেন গত বুধবার বিমানবন্দরে পৌঁছার পর, ফ্লাইটের ঘণ্টা খানেক আগে। সাকিব তার আগের দিনই অনাপত্তিপত্র পাওয়ার জন্য আবেদন করলেও বিসিবির পক্ষ থেকে ‘হ্যাঁ-না’ কিছুই বলা হয়নি। সমস্যাটা তাই সাকিবের শৃঙ্খলা মানায় নাকি বিসিবির পেশাদারির, সে প্রশ্ন থাকছেই।
বোর্ড সূত্রে অবশ্য জানা গেছে, শুধু সিপিএল প্রসঙ্গ নয়, এই যাত্রা সাকিবকে ধরার জন্য বেশ লম্বা তালিকা নিয়েই বসছে বিসিবি। তার মধ্যে আছে ভারত সিরিজের সময় স্ত্রীকে উত্ত্যক্ত করায় বখাটে দর্শকের সঙ্গে লেগে যাওয়া, ওই সিরিজ চলাকালেই টিম ম্যানেজমেন্টকে না জানিয়ে হোটেল রুম বদলানো এবং সিপিএলে যাওয়া নিয়ে কোচের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় করা।
বখাটে দর্শকের সঙ্গে মারামারি এবং হোটেল রুম পরিবর্তনের দায় নিতে হবে দুর্বল টিম ম্যানেজমেন্টকেও। দলে কোচ, টিম ম্যানেজারের উপস্থিতি সত্ত্বেও সাকিব কীভাবে ম্যাচ চলাকালে গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডে চলে যান, কীভাবে হোটেলের রুম পরিবর্তন করেন, সেসবের জবাবদিহি ব্যর্থ টিম ম্যানেজমেন্টের কাছেও চাওয়া উচিত বলে মনে করছেন অনেক বোর্ড পরিচালক। আন্তর্জাতিক সিরিজ চলাকালে ক্রিকেটারদের হোটেল রুম নির্দিষ্ট করা থাকে। সেটা কেউ বদলাতে চাইলে ম্যানেজারের মাধ্যমেই তা করতে হয়। সাকিবের ক্ষেত্রে কীভাবে ম্যানেজার খালেদ মাহমুদের অগোচরে ব্যাপারটা ঘটল, সেটাও বড় একটা প্রশ্ন। আগামীকালের বোর্ড সভায় আলোচনায় আসতে পারে এসব বিষয়ও।
এ ছাড়া সিপিএল খেলতে দেশ ছাড়ার আগে কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সঙ্গে টেলিফোনে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় এবং বাংলাদেশের হয়ে টেস্ট-ওয়ানডে না খেলার হুমকির বিষয়টিও আছে সাকিবের বিরুদ্ধে অভিযোগের তালিকায়। বিষয়টা কোচ বোর্ডকে ই-মেইলে জানালেও শুধু সেটির ওপর নির্ভর করেই কিছু বলতে চান না বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে হাথুরুসিংহে-সাকিব দুজনের সঙ্গেই কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।