টাইব্রেকারের জন্য আলাদা ছকই কষে রেখেছিলেন হল্যান্ডের কোচ লুইস ফন গাল। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের পর অতিরিক্ত সময়েও গোল না পাওয়ায় তিনি মাঠে নামান টিম ক্রালকে। হল্যান্ডের এই বদলি গোলরক্ষক বিশেষভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন পেনাল্টি শুটআউটের জন্যই। সেটার প্রমাণও পাওয়া গেল হাতেনাতেই। দুইটি শট ঠেকিয়ে এই বদলি গোলরক্ষকই হল্যান্ডকে এনে দিলেন সেমিফাইনালের টিকিট। টাইব্রেকারে ৪-৩ ব্যবধানের জয় দিয়ে শেষ চারে পা রাখল ডাচরা।
বিশ্বকাপের ইতিহাসে টাইব্রেকারে জয়ের রেকর্ড হল্যান্ডের ছিল না। ১৯৯৮ সালে সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছিল ব্রাজিলের কাছে হেরে। আজ প্রথমবারের মতো তারা এই বাধা পেরিয়েছে বদলি গোলরক্ষক ক্রালের বিশ্বস্ত হাতের ওপর ভর করে।
অথচ টাইব্রেকারে হল্যান্ডের হার মোটেই অপ্রত্যাশিত ছিল না। শেষ ষোলোর ম্যাচেও গ্রিসকে পেনাল্টি শুটআউটে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে এসেছিল কোস্টারিকা। সেই ম্যাচে পাঁচটি শট থেকেই গোল করেছিলেন কোস্টারিকার খেলোয়াড়েরা। গোলরক্ষক কেইলর নাভাসও পুরো টুর্নামেন্টে বেশ সুনাম কুড়িয়েছিলেন ভালো পারফরম্যান্স দেখিয়ে। কিন্তু আজ একটি শটও ঠেকাতে পারেননি নাভাস। হল্যান্ডের পক্ষে গোল করেছেন ফন পার্সি, রোবেন, স্নেইডার ও ডার্ক কাউট।
এর আগে নির্ধারিত ৯০ মিনিট ও অতিরিক্ত সময়ের খেলা দেখেও মনে হয়েছিল যে আজ একটা অঘটনই ঘটতে যাচ্ছে হল্যান্ডের সঙ্গে। ভাগ্যদেবীও যেন কোস্টারিকার মাথায় রেখেছিলেন আশির্বাদের হাত। ৮২ মিনিটে ও অতিরিক্ত সময়ের শেষমুহূর্তে ওয়েসলি স্নেইডারের দুইটি শট ফিরে এসেছিল কোস্টারিকার গোলপোস্টে লেগে। ৮৮ মিনিটে অবিশ্বাস্যভাবে একটি গোলের সুযোগ নষ্ট করেছিলেন ফন পার্সি। গোলপোস্টের একেবারে সামনে বলে পা ছোঁয়াতে পারেননি ডাচ অধিনায়ক। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা শেষ হওয়ার ঠিক আগমুহূর্তে ফন পার্সির আরেকটি গোল প্রচেষ্টা নস্যাত্ হয়েছে গোলপোস্টে লেগে।
প্রথমার্ধে, ২২ মিনিটের মাথায় প্রথম সুযোগটি পেয়েছিল হল্যান্ড। কিন্তু ফন পার্সি ও স্নেইডারের দুইটি শট পরপর ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন নাভাস। ৩৯ মিনিটে স্নেইডারের আরেকটি ফ্রি-কিকও দুর্দান্ত দক্ষতায় রুখে দিয়েছিলেন কোস্টারিকার গোলরক্ষক।
অপরদিকে কোস্টারিকা গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি বললেই চলে। পুরো খেলায় তারা কর্নার পেয়েছে মাত্র একবার। প্রথম থেকেই গোল করার চেয়ে গোল ঠেকানোর দিকেই বেশি মনোযোগ দিয়েছিলেন কোস্টারিকার খেলোয়াড়েরা। ৬৫ মিনিটে একবারই এসেছিল কোস্টারিকার সুবর্ণ সুযোগ। ক্রিস্টিয়ান বোলানসের ক্রস থেকে দারুনভাবে হেড করেছিলেন জিয়ানকার্লো গঞ্জালেস। কিন্তু তাঁর হেড চলে যায় গোলপোস্টের সামান্য ওপর দিয়ে।