ঈদের পর সরকার পতনের আন্দোলনে নামার প্রত্যয় পূনর্ব্যক্ত করে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, ঈদের পরে বিএনপি নিয়মাতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করবে। ক্ষমতাসীনরা অনিয়মতান্ত্রিকভাবে সেই আন্দোলনে বাধা দিলে এর পাল্টা জবাব দেওয়া হবে।
বুধবার রাজধানীর সংসদ ভবনের এলডি হল চত্বরে ঢাকা মহানগর বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
খালেদা জিয়া বলেন, আন্দোলন মানে ভাঙ্গচুর, জ্বালাও পোড়াও নয়। বিএনপি জ্বালাও পোড়াও রাজনীতিতে বিশ্বাস করেনা। এটা আওয়ামী লীগের কাজ। বিএনপি শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক ভাবেই আন্দোলন করবে। এ আন্দোলনে সরকার অগণতান্ত্রিকভাবে বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে আমরা বসে থাকব না।
এ সময় তিনি বিএনপির রাজনৈতিক আন্দোলনকে র্যাব-পুলিশ বাদ দিয়ে গণতান্ত্রিক ভাবে মোকাবেলা করার প্রস্তুতি নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
সরকারের মন্ত্রী ও নেতাদের বক্তব্যের সমালোচন করে খালেদা জিয়া বলেন, তারা নাকি কেয়ামত পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবে। তাদেরকে সরানো যাবেনা। তাদের পাপ এতোই বেশি হয়ে গেছে যে, কেয়ামতের আগে তাদের মৃত্যু নেই।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ শান্তিতে নেই। নির্যাতন, খুন-খারাপি, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নামে মামলা দেয়া হচ্ছে। দ্রব্যমূল্য আকাশচুম্বী, রাস্তাঘাটের বেহাল দশা। এ অবস্থা চলতে পারেনা। আওয়ামী লীগ যতদিন ক্ষমতায় থাকবে ততদিন দেশের পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে। তাই এদেরকে বিদায় করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে এমন পরিস্থিতি হবেই। মানুষ আজ অতীষ্ঠ, তাই প্রতিবাদ করার সময় এসেছে। কাজেই রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটাতে হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
দেশ ‘রক্ষায়’ আন্দোলনে নামার আগে সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ করে নতুন ধারার প্রবর্তন করতে চান খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, ‘নতুন ধারার আন্দোলন করতে হবে। যেখানে নিজেদের স্বার্থের পরিবর্তে দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করা যাবে।
সরকারকে দ্রুত নির্বাচন দেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দ্রুত সব দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন করুন। অন্যথায় আমরা বসে থাকবো না। মানুষ আর চোখের পানি ফেলবে না। ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করে দাবি আদায় করবে।
এ সময় তিনি দ্রুত ঢাকা মহানগরের নতুন আহ্বায়ক কমিটির দেওয়ার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘শিগগিরই ঢাকা মহানগরের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে। তারা নির্বাচনের মাধ্যমে এ শাখার প্রতিটি ইউনিটের নতুন কমিটি করবে।
ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক উল হক, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আর এ গণি, এম কে আনোয়ার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র অধ্যাপক আবদুল মান্নান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরীসহ ঢাকা মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দ।
ইফতার মাহফিলে ২০ দলীয় জোটের নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য ড. রেদওয়ান উল্লাহ শাহেদী, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ নেজামী প্রমুখ।