দূরপাল্লার শীতাতপনিয়ন্ত্রিত (এসি) বাসের ঈদের আগাম টিকিটের গলাকাটা দাম নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। তাঁরা বলছেন, সব পরিবহন কোম্পানিই ঈদ সামনে রেখে কম-বেশি ভাড়া বাড়িয়েছেন। আর কিছুসংখ্যক পরিবহন স্বাভাবিক দামের প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছে। ঢাকার বিভিন্ন শীতাতপনিয়ন্ত্রিত পরিবহনের কাউন্টার ঘুরে এ প্রতিবেদক অভিযোগের সত্যতাও পেয়েছেন।
হানিফ এন্টারপ্রাইজের রংপুর গন্তব্যের এসি বাসের ভাড়া ৮০০ টাকা। ঈদের জন্য এখন নেওয়া হচ্ছে প্রায় দ্বিগুণ, এক হাজার ৫০০ টাকা। হানিফের খুলনার টিকিট অন্য সময় এক হাজার ২০০ টাকা। এখন নেওয়া হচ্ছে এক হাজার ৮০০ টাকা।
কল্যাণপুরে হানিফ পরিবহনের কর্মী মো. মিজানের কাছে খুলনার টিকিট কিনছিলেন ব্যাংক কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান খান। তিনি বলেন, ‘ঈদের সময় এলেই আমরা পরিবহনগুলোর কাছে জিম্মি হয়ে পড়ি। তাঁরা গলাকাটা দাম রাখে।…যোগাযোগমন্ত্রী তো খুব বললেন, টিকিটের অতিরিক্ত দাম নিলে কঠোর শাস্তি হবে।’
বেশি ভাড়া নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে হানিফ এন্টারপ্রাইজের মহাব্যবস্থাপক আবদুস সামাদ বলেন, ‘শীতাতপনিয়ন্ত্রিত বাসে অনেক খরচ। যেহেতু ঈদে বাস খালি ফেরত আসবে তাই বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।’
ঈদের আগাম টিকিট দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রায় প্রতিটি শীতাতপনিয়ন্ত্রিত বাস কোম্পানিই ভাড়া বাড়িয়েছে। দক্ষিণবঙ্গ গন্তব্যের ঈগল পরিবহনে খুলনার টিকিট সাধারণ সময়ে এক হাজার ১০০ টাকা। কিন্তু ঈদের অগ্রিম টিকিটের দাম নেওয়া হচ্ছে এক হাজার ৬০০ টাকা। কল্যাণপুরের ঈগল কাউন্টার থেকে টিকিট কেনার পর কথা হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী গোলাম মোস্তফার সঙ্গে। তিনি জানান, আগে একই বাসে যশোর নামলে যশোরের ভাড়াই নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন যশোর গেলে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে খুলনা পর্যন্ত। এ বিষয়ে কাউন্টার ব্যবস্থাপক ইব্রাহীম আক্তারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি অতিরিক্ত ভাড়া ও যশোরের যাত্রীর জন্য খুলনা পর্যন্ত ভাড়া নেওয়ার কথা স্বীকার করেন।
লালমনিরহাট গন্তব্যের শাহ আলী পরিবহন ৭৫০ টাকার টিকিট ঈদ উপলক্ষে নিচ্ছে এক হাজার ১০০ টাকা। একই গন্তব্যের বাস শুভ বসুন্ধরা ৭০০-৭৫০ টাকার স্থানে নিচ্ছে এক হাজার ১০০ টাকা।
কল্যাণপুরে আগমনী এক্সপ্রেস কাউন্টারে দেখা গেল, এক ক্রেতার সঙ্গে টিকিটের দাম নিয়ে বিক্রেতা গোলাম মোস্তফার তর্ক চলছে। বিক্রেতার সাফ কথা: আপনার কাছে এ নিয়ে জবাবদিহি করতে পারব না। মালিকের সঙ্গে কথা বলেন।
সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে গোলাম মোস্তফা এই প্রতিবেদককেও মালিকের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে মালিকের ফোন নম্বর চাইলে তিনি বলেন, নম্বর দেওয়া নিষেধ।