ফ্যাশনের ধারা পাল্টাচ্ছে। এ সময়ে পাঞ্জাবি ফ্যাশনে এসেছে লম্বা, সেমি লম্বা, শর্ট, ঢিলেঢালা, আঁটোসাঁটো। আবার অন্যদিকে কাপড়ে কাজ করা, প্লেন স্টাইল, মোটিফ ডিজাইন, মিনার মোটিফ এরকম নানা ডিজাইন যুক্ত হচ্ছে। শাড়ির ডিজাইনে এসেছে বেচিত্র্য।
ঈদে আরাম আর উজ্জ্বল রংটাকে মাথায় রেখে রঙ-এর ডিজাইনার বিপ্লব সাহা বললেন, “গরমে সুতি শাড়ি-পাঞ্জাবি প্রাধান্য পাচ্ছে। দিনের ঈদে নামাজের সময় আরামদায়ক সুতি ব্যবহৃত হয়েছে। রঙের ক্ষেত্রে নীল, সবুজ, ছাই, মেরুন, কালো। আবার রাতে ফিরোজা, হলুদ, লাল ছাড়াও যার যেমন পছন্দ উজ্জ্বল রং নিতে পারবে।”
“তবে রাতের কাপড়টা হবে সিল্ক ভেলভেট, এন্ডি সিল্ক। পাঞ্জাবির ডিজাইনগুলো এক্সক্লুসিভ হলে মসজিদ মিনার, আরবি ক্যালিগ্রাফি, স্ট্রাক চারুল ড্রইং মোটিফযুক্ত ডিজাইনে পাওয়া যাবে রঙের সবক’টা শাখাতেই। সবগুলো পাঞ্জাবিই সেমি লম্বা, শর্ট ছাড়াও বয়স্কদের জন্য লম্বায় পাওয়া যাবে।”
সাদা কালোর মোঃ মশিউর জানালেন, ব্লক, হাতের কাজযুক্ত এবং সাদাসিধে আরামদায়ক পাঞ্জাবি থাকছে তাদের শাখাগুলোতে। এসব পাঞ্জাবির প্রায় সবই সেমি লং কাটের। কাপড়ের ক্ষেত্রে মসলিন, সুতি, সিল্ক, হাফসিল্ক, জুট কটন, তাঁত এন্ডি কটন ব্যবহৃত হয়েছে। আর রং তো চিরসবুজ সাদা কালোই।
দেশালের শপ ইনচার্জ আশকাফ আহমেদ জানালেন, সাধরণত খাদি এবং সুতি কাপড়ই আমরা ব্যবহার করি। সাদা, হলুদ, আকাশি টাইডাই, চেক, কাজ ছাড়া প্লেন ডিজাইন এসব পাঞ্জাবি ও ব্যাপারী ফাতুয়া পাওয়া যাবে ঢাকাসহ বাংলাদেশের যে কোনো আউটলেটে।
বিবিআনার ডিজাইনার লিপি খন্দকারের ভাষায় ঋতুকে মাথায় রেখে প্রধানত তরুণদের জন্য চেকের পাঞ্জাবি এনেছি আমরা। বয়স্কদের জন্য কটনের ওপর হাল্কা হাতের কাজের পাঞ্জাবি রয়েছে আমাদের কাছে।
তবে বয়স্কদের জন্য সাদা রং ছাড়াও উজ্জ্বল এবং হাল্কা রংও ব্যবহার করা হয়েছে। সব পাঞ্জাবিই সুতি এন্ডি সিল্ক, ধুলিয়ান কটনের মধ্যে। বিবিয়ানার এক্সক্লুসিভ পাঞ্জাবি পাবেন সেলফ কাঁথা প্রিন্টেড প্যাটার্নে। হাইনেক বুক পকেটের চওড়া ও সরু কলারযুক্ত ডিজাইনে। চুড়িদার, পায়জামা, ধুতি, আলীবাড়ি দিয়ে পাঞ্জাবিগুলো পরা যাবে। রংগুলো নীল, মেরুন ছাই, বিস্কিট ও গ্রিনের মধ্যে।
দরদাম- ছোটদের পাঞ্জাবি পাবেন ৩৫০ থেকে ৩০০০ টাকার মধ্যে, বড়দের পাঞ্জাবি ৫০০ থেকে ৬০০০ টাকার মধ্যে, দেশীয় ফ্যাশনগুলোতে আপনার পছন্দের পাঞ্জাবি পেতে এখনই ঢুঁ মেরে আসতে পারেন।
শাড়ি
নারীদের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পোশাকটি ডিজাইন করতে গিয়ে আষাঢ়ে গরমের ঈদে ডিজাইনাররা অল্পস্বল্প হিমশিম খেয়েছেন।
ডিজাইনার লিপি খন্দকার জানালেন, এবারের ঈদ সংগ্রহে দেশীয় জামদানি নিয়ে তিনি রীতিমতো নিরীক্ষা চালিয়েছেন! তাই ঈদে গাঢ় জামদানি কাজ আর বর্ণিল সমাহার দেখা গেছে শাড়ি ভাণ্ডারে।
এছাড়া ব্লকপ্রিন্ট, এপ্লিক ওয়ার্ক এবং হাতের কাজের অপূর্ব অব ডিজাইনার কালেকশন থাকবে বিবিয়ানায়। রংগুলো হবে হলুদ, গোলাপি, কমলা, সবুজ, নেভি ব্ল–, লাল, বেগুনি। এক্সক্লুসিভ ডিজাইনকৃত শাড়ি হল সিল্কের ওপর এপ্লিকের কাজ করা।
রঙের ডিজাইনার বিপ্লব সাহা জানালেন, তাদের শাড়িগুলো সুতি, হাফ সিল্ক, দুপিয়ান, এন্ডি কটন ও সিল্কের ওপর তৈরি। এগুলোতে টাইডাই প্রিন্ট, এপ্লিক, হ্যান্ড এম্ব্রয়ডারি ও ব্ল্যাক টাইডাইয়ের ডিজাইন করা হয়েছে।
তবে বেশি স্টাইলিশ ও এক্সক্লুসিভ সংগ্রহে আছে হাতের কাজ ও এক্সক্লুসিভ ডিপ ওয়ার্কে। রংয়ের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে- পেস্ট, ইয়োলো, পিংক ছাড়াও হাল্কা সব বাহারি।
দেশালের ডিজাইনার ইশরাত বলেন, “ঈদের জন্য হালকা সব সুদিং রং রেখেছেন মেয়েদের শাড়িতে। আর রাতের জাঁকালো ঈদ পার্টিতে রঙিন ও বর্ণিল রংগুলো রেখেছেন। কফি রং, হলুদ, কমলা, লাল ছাড়াও বেশ কটি রং মিলবে দেশালের শোরুমগুলোতে।”
ফ্যাশন হাউসগুলোতে ঈদের শাড়ি সংগ্রহে মসলিন, হাফসিল্ক, তাঁত, রাজশাহী সিল্কের মধ্যে পাওয়া যাবে চিরসবুজ রং সাদা এবং কালো রংগুলোতে। ঈদের এ শাড়িগুলো হবে ব্লক, ফেব্রিক্স, হাতের কাজ ও সিকুইনের কাজ করাতে।
এছাড়া আরামদায়ক সুতি, মসলিন, এন্ডিসিল্ক ও রাজশাহী সিল্কের এ শাড়িগুলোতে গ্লাস পিট, বাটিক, হ্যান্ডলুম, নকশি কাজ, কারচুপি ও নেট পেস ওয়ার্কের ডিজাইন করা হয়েছে। তবে কটন বেজড শাড়িগুলো ব্লক প্রিন্ট, স্কিন প্রিন্ট, মোম বাটিকের ওপর ডিজাইন করা হয়েছে।