ফিলিস্তিনের যুদ্ধ বিধ্বস্থ এলাকা গাজায় অমানবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি এবং তা সামাল দিতে জাতিসংঘের অসহায়ত্বের কথা প্রকাশ করার সময় কান্নায় ভেঙে পড়েছেন সংস্থাটির এক কর্মকর্তা।
সংস্থাটির মুখপাত্র ক্রিস গুনেস জানান, ইউএনআরডব্লিউএ তাদের শিবিরগুলোতে শরণার্থীর ঢল সামলাতে এবং তাদের মানবিক চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে। সময় এমনও হয়, যখন চোখের পানি মুখের ভাষার চেয়ও স্পষ্ট ভাব প্রকাশ করে। গাজায় ইউএনআরডব্লিউএ হিমশিম খাচ্ছে, আমাদের সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। আমাদের কর্মীদেরকে হত্যা করা হচ্ছে, অশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে মানুষের জায়গা হচ্ছে না।
গুনেস প্রশ্ন করে বলেন, “এই পরিস্থিতির শেষ কোথায়?”। তিনি বলেন, গাজায় ৮৬টি শরণার্থী শিবিরে এখন দুই লাখ ২৫ হাজার ১৭৮ জন বাস্তুহারা আশ্রয় নিয়েছে। কিন্তু ইতোমধ্যেই গাজা প্রায়ই ধ্বংস হয়ে গেছে। তাহলে এই ঘরবাড়ি হারা মানুষগুলো কোথায় যাবে? যুদ্ধেরই বা শেষ হবে কবে?”
বুধবার ভোরে গাজার জাবালিয়ায় জাতিসংঘের একটি বালিকা স্কুলে স্থাপিত আশ্রয়কেন্দ্রে কামানের গোলা ছুড়ে ইসরায়েলি সেনারা। এতে নারী-শিশুসহ সেখানে ঘুমিয়ে থাকা ১৫ শরণার্থীর মৃত্যু হয়। যুদ্ধ শুরুর পর তিন হাজার মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে শেষ আশ্রয় হিসেবে ওই স্কুলটিতে এসেছিল। তবে সেখানে হামলার পর এখন তারা পুরোপুরি আশ্রয়হীন।
গাজার কর্মকর্তারা জানান, ইসরাইলি অভিযানে তাদের ১ হাজার ৩৭০ জন নিহত হয়েছেন যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। যুদ্ধে ইসরায়েলেরও ৫৬ জন সেনা সদস্য নিহত হয়।
এদিকে যুদ্ধের কারণে গাজার মোট জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি মানুষ জরুরি সাহায্যের মুখাপেক্ষি হয়েছে। তাদের প্রয়োজন মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে সেচ্ছাসেবকরা।
বৃহস্পতিবার গাজার জন্য ১৮৭ মিলিয়ন ডলার সাহায্য চেয়েছে ইউএনআরডব্লিউএ। সেখানে রাতে ঘুমানোর জন্য বিছানা ও অন্যান্য মৌলিক আসবাবপত্র সরবরাহ করা প্রয়োজন বলে জানায় সংস্থাটির কর্মকর্তারা।
দক্ষিণ গাজার রাফাহ শরণার্থী শিবিরের জন্য জরুরি ওষুধ ও কীটনাশক প্রয়োজন। এছাড়া অন্যান্য শরণার্থী শিবিরগুলোতে উকুন ও খোস পাঁচড়ার মতো রোগ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।