গাজায় ইসরাইলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। বাড়ছে লাশের সংখ্যা। মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩৬০। আর ইসরাইল সীমান্তে হামাসের তৈরী সব সুড়ঙ্গ ধ্বংস করার আগ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে তাদের সামরিক অভিযান। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনয়িমিন নেতানিয়াহু এ কথা জানিয়েছেন। তেল আবিবে মন্ত্রিপরিষদের একটি বৈঠকের আগে তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতি হোক বা না হোক হামলায় ব্যবহৃত যাবতীয় সুড়ঙ্গপথ ধ্বংস করতে ইসরাইল সংকল্পবদ্ধ। এর আগে ইসরাইল অতিরিক্ত ১৬ হাজার সেনা ডেকে পাঠিয়েছে। এতে যুদ্ধপ্রস্তুত মোট সেনার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৬ হাজারে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অস্ত্র গোলাবারুদ চেয়ে ইসরাইল অনুরোধ করেছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর আসে। এক মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা সিএনএনকে জানিয়েছেন, বিভিন্ন ধরনের গোলাবারুদ সরবরাহের যে অনুরোধ ইসরাইল জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র তাতে সম্মত হয়েছে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র বেসামরিক নিবাসীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ইসরাইলকে অধিক তৎপর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এদিকে গতকাল জাতিসংঘ পরিচালিত আরেকটি স্কুল ভবনের কাছে একাধিক ইসরাইলি বোমা আঘাত হানে। ক্রমবর্ধমান মৃত আর আহতের সংখ্যায় গাজার স্বাস্থ্যকর্মীরা হিমশিম খাচ্ছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল কিদরা বলেছেন, গতকাল গাজার হাসপাতালগুলোয় স্বাস্থ্যকর্মীরা কঠিন সময় পার করেছে। হাসপাতালের মর্গগুলোতে লাশ ধারণের ঠাঁই নেই। আর আহতের সংখ্যা বাড়ার কারণে হাসপাতালের ফ্লোরেও জায়গা বাকি নেই। বুধবার কামানের গোলার আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় জাবালয়া এলিমেন্টারি গার্লস স্কুল। স্কুলটিতে গৃহহীন ৩০০০ ফিলিস্তিনি অবস্থান নিয়েছিলেন। জাতিসংঘ ওই হামলার জন্য ইসরাইলের ব্যাপক নিন্দা জানিয়েছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে এতে ২০ জন নিহত হয়েছে। জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি বিষয়ক সংস্থার প্রধান পিয়েরে ক্রাহেনবুহল বলেছেন, ঘুমের মধ্যে হত্যা করা হচ্ছে শিশুদের। এটা আমাদের সকলের জন্য অসম্মানের, বিশ্বজনীন এক অবমাননার উদাহরণ। আজ পুরো বিশ্ব লজ্জায় নিমজ্জিত। বুধবারের এ হামলা নিয়ে জাতিসংঘ পরিচালিত ৬টি স্কুল ইসরাইল বোমার শিকার হলো। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জাবালায়া হামলাকে যুদ্ধাপরাধ বলে অভিহিত করেছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের পর থেকে এখন পর্যন্ত আনুমানিক ৪ লাখ ২৫ হাজার ব্যক্তি গৃহহীন হয়ে পড়েছেÑ যা গাজায় বসবাসরত নিবাসীদের ২৫ শতাংশ। ৮ই জুলাই শুরু হওয়া ইসরাইলি অভিযানে এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছে কমপক্ষে ১৩৬০ জন ফিলিস্তিনি। এর বেশির ভাগই বেসামরিক লোক। পক্ষান্তরে ইসরাইলের পক্ষে নিহত ৫৮ জনের ৫৬ জনই সেনা সদস্য।