মন্ত্রিসভায় বেতার ও টেলিভিশনের জন্য জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালার খসড়া অনুমোদন করা হয়েছে। এতে টকশোতে অসত্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন না করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে বেতার ও টিভির লাইসেন্স দেওয়ার বিধানও রাখা হয়েছে।
আজ সোমবার মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ওই অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকের পরে মন্ত্রিপরিষদের সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা বলেন, সরকারি ও বেসরকারি টিভি দুটোর ক্ষেত্রেই ওই নীতিমালা কার্যকর করা হবে। কমিশন গঠন না হওয়া পর্যন্ত সম্প্রচার নীতিমালা বাস্তবায়নের দায়িত্ব তথ্য মন্ত্রণালয় পালন করবে। টিভি, রেডিওর মাধ্যমে প্রচারিত সংবাদকে নির্দিষ্ট নীতিমালার আওতায় আনতেই এটি প্রণয়ন করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
বেসরকারি টেলিভিশনের প্রতিনিধিরা তথ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনায় সম্প্রচার মাধ্যমের স্বাধীনতা যাতে সংকুচিত না হয়, তার ওপর জোর দেন। নীতিমালার বিভিন্ন ধারা নিয়ে বেসরকারি টিভির প্রতিনিধিদের মধ্যে অস্বস্তি ছিল। এরমধ্যে রয়েছে – সশস্ত্র বাহিনী এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত কোনো বাহিনীর প্রতি কটাক্ষ বা অবমাননাকর দৃশ্য বা বক্তব্য প্রচার করা যাবে না, অপরাধীদের দণ্ড দিতে পারেন এমন সরকারি কর্মকর্তাদের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করার মতো দৃশ্য বা বক্তব্যও প্রচার করা যাবে না, জনস্বার্থ বিঘ্নিত হতে পারে এমন কোনো বিদ্রোহ, নৈরাজ্য ও হিংসাত্মক ঘটনা প্রচার করা যাবে না প্রভৃতি। তবে এসব ধারাসহই নীতিমালার খসড়াটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
নীতিমালায় আরও বলা হয়, কোনো জাতি বা জনগোষ্ঠী, দেশের মর্যাদা বা ইতিহাসের জন্য ক্ষতিকর এমন কোনোকিছু, বিদেশি রাষ্ট্রের অনুকূলে যায় এমন কিছু প্রচার বা প্রকাশ করা যাবে না। টকশোতে অসত্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন না করার কথাও নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়। সেইসঙ্গে ব্যক্তিগত বিষয়ে ক্ষতিকর কোনোকিছু প্রচার বা প্রকাশ না করার কথা বলা হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসইন ভূইঞা আরও বলেন, এই প্রথমবারের মতো পূর্ণাঙ্গ একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হলো। সংবাদিকসহ বিভিন্ন শেয়ারের অংশীদারদের সঙ্গে পরামর্শ করে এটি করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
নীতিমালায় বেতার বা টিভির লাইসেন্স কীভাবে দেওয়া হবে তাও উল্লেখ করা হয়েছে। মূল্যবোধ, ভাষা, সংস্কৃতি, ধর্মীয় অনুভূতি, রাষ্ট্র প্রশাসনের মূলনীতি ও তার নিশ্চয়তা বিধানের জন্যই নীতিমালা করা হয়েছে বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান।