সাধারণ পণ্যবাহী জাহাজ রপ্তানি করে এই খাতে রপ্তানির যাত্রা শুরু হয়েছিল। এরপর যাত্রীবাহী জাহাজ, ফেরিসহ নানা ধরনের জাহাজ রপ্তানি হয়েছে।এবার এই খাতে যুক্ত হয়েছে উচ্চ প্রযুক্তির জাহাজ। কেনিয়ার মৎস্য মন্ত্রণালয়ের জন্য এ ধরনের একটি জাহাজ নির্মাণ করবে চট্টগ্রামের ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড।
‘অফশোর পেট্রোল ভেসেল’ হিসেবে পরিচিত বিশেষায়িত এই জাহাজ ঘণ্টায় চলবে ৩৫ নটিক্যাল মাইল গতিতে। সড়কের গতির সঙ্গে তুলনা করলে এই গতিবেগ দাঁড়ায় ঘণ্টায় প্রায় ৬৫ কিলোমিটার। এই জাহাজে স্থাপন করা হবে দ্রুতগতির ‘ওয়াটারজেট’ ইঞ্জিন। মূল ইঞ্জিনসহ ইঞ্জিনের ক্ষমতা দাঁড়াবে ১০ হাজার ৭২০ কিলোওয়াট। সাধারণ পণ্যবাহী জাহাজের ঘণ্টায় গতিবেগ থাকে ১২ নটিক্যাল মাইল।
জানা গেছে, দরপত্রের মাধ্যমে জাহাজটি কেনার কার্যাদেশ পায় ডেনমার্কের জেজিএইচ মেরিন এ/এস কোম্পানি। ডেনমার্কের এই কোম্পানি ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড থেকে জাহাজটি তৈরি করে কেনিয়ার কাছে হস্তান্তর করবে। এ জন্য কোম্পানিটির সঙ্গে ওয়েস্টার্ন মেরিনের ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ১৫৬ কোটি টাকার চুক্তি হয়েছে। এর আগে সাধারণত পণ্যবাহী জাহাজগুলোর চুক্তিমূল্য ছিল প্রায় ৮০ কোটি টাকা।
জানতে চাইলে ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আগামীকাল মঙ্গলবার এই জাহাজের নির্মাণকাজ শুরু হবে। বাংলাদেশে উচ্চ প্রযুক্তির জাহাজ নির্মাণের ঘটনা এটিই প্রথম। দেশীয় জাহাজনির্মাণ শিল্পগুলো এ ধরনের জাহাজ রপ্তানির আদেশ পেলে দ্রুত প্রসার হবে এ শিল্পের। কারণ, এ ধরনের জাহাজ নির্মাণে জায়গা লাগে কম, তবে রপ্তানিমূল্য বেশি।
জানা গেছে, এই জাহাজটি মূলত কেনিয়ার সমুদ্র এলাকায় মাছ ধরার ট্রলারগুলোতে নিরাপত্তা তদারকিতে ব্যবহৃত হবে। এই জাহাজটিতে থাকবে হেলিকপ্টার নামানোর ব্যবস্থা। আবার জাহাজ থেকে জলদস্যুদের বহনকারী বা নিরাপত্তা বিঘ্নিতকারী জলযান নিয়ন্ত্রণ করার প্রযুক্তিও বসানো হবে। ২০১৬ সালে এই জাহাজটির নির্মাণ শেষ হবে। জাহাজটির দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ৫৪ মিটার। প্রস্থ সাড়ে আট মিটার। এতে ৩৫ জন নাবিক থাকার ব্যবস্থা রাখা হবে।