ঢাকা: ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মোট ১১টি পশুর হাটের বিপরীতে সিডিউল বিক্রি হয়েছে ১১৩টি। তবে এসব সিডিউলের মধ্যে জমা পড়েছে মাত্র ৩৯টি।
মঙ্গলবার দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১১টি পশুর হাটের জন্য দরপত্র জমার আহবান করা হয়। সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ৫টি অঞ্চলসহ নগর ভবনে সংরক্ষিত টেন্ডার বাক্স এবং দু’টি বিভাগীয় কার্যালয় মিলে ৩৯টি সিডিউল জমা পড়ে। পরে বিকাল তিনটায় নগর ভবনের অডিটোরিয়ামে দরদাতাদের উপস্থিতিতে প্রথম দফার দরপত্র উন্মুক্ত করেন ডিএসসিসি’র প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. খালিদ আহম্মদ। এ সময় ডিএসসিসি’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কবির মাহমুদ ও অতুল মণ্ডল উপস্থিত ছিলেন।
ডিএসসিসি’র দেওয়া তথ্যানুযায়ী মোট ১১টি পশুর হাটের মধ্যে ঝিগাতলা হাজারীবাগ মাঠ হাটের জন্য সিডিউল বিক্রি হয়েছে ১৯টি, জমা পড়েছে একটি। রহমতগঞ্জ খেলার মাঠ পশুর হাটের জন্য সিডিউল বিক্রি হওয়া তিনটি সিডিউলই জমা পড়ে। খিলগাঁও মেরাদিয়া পশুর হাটের জন্য সিডিউল বিক্রি হয়েছে ১৩টি, জমা পড়েছে ৪টি। গোলাপবাগ মাঠের পাশের সিটি করপোরেশনের আদর্শ স্কুল মাঠ ও আশপাশের ডিসিসি’র খালি জায়গার অস্থায়ী পশুর হাটের সিডিউল বিক্রি হয়েছে ৯টি এবং জমা পড়েছে ৭টি। উত্তর শাহজাহানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজার সংলগ্ন মৈত্রী সংঘের মাঠের জন্য বিক্রি হওয়া তিনটি সিডিউলই জমা পড়েছে। ধুপখোলার ইস্ট অ্যান্ড ক্লাব মাঠের জন্য সিডিউল বিক্রি হয়েছে ১১টি, জমা পড়েছে ৩টি। কমলাপুর গোপীবাগের ব্রাদার্স ইউনিয়ন সংলগ্ন বালুর মাঠের অস্থায়ী পশুর হাটের জন্য সিডিউল বিক্রি হয়েছে ৬টি এবং জমা পড়েছে ৪টি। পোস্তগোলা শশ্মানঘাট সংলগ্ন খালি জায়গার জন্য বিক্রি হওয়া চারটি সিডিউলই জমা পড়ে। কামরাঙ্গীরচর ইসলাম চেয়ারম্যানের বাড়ির মোড় থেকে দক্ষিণ দিকে বুড়িগঙ্গা নদীর বাঁধ সংলগ্ন জায়গার পশুর হাটের জন্য সিডিউল বিক্রি হয়েছে ৭টি, জমা পড়েছে তিনটি এবং লালবাগ মরহুম হাজী দেলোয়ার হোসেন খেলার মাঠ ও সংলগ্ন বেড়ি বাঁধের খালি জায়গা ও আশপাশের এলাকার পশুর হাটটির জন্য বিক্রি হওয়া তিন সিডিউলই জমা পড়েছে।
জমা পড়া সিডিউলগুলোর মধ্যে ঝিগাতলা হাজারীবাগ মাঠ পশুর হাটের জন্য মোট ১৯টি সিডিউলের মধ্যে মো. মাসুদ রানাই সিডিউল জমা দেন। তিনি এ হাটের জন্য দর প্রস্তাব করেছেন ১১ লাখ ১১ হাজার ১০ টাকা। ২০১৩ সালে এ হাট ইজারা দেওয়া হয় ৫৫ লাখ ৩৪ হাজার ২০ টাকা দরে।
লালবাগ রহমতগঞ্জ খেলার মাঠ পশুর হাটের জন্য জমা পড়া তিনটি সিডিউলের মধ্যে ইমতিয়াজ হামিদ সবুজ দর দিয়েছেন চার লাখ টাকা, রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি দর দিয়েছে ৬ লাখ ৬৩ হাজার ২৭৪ টাকা, এস এম মাহমুদ আলী দর দিয়েছেন দুই লাখ ২০ হাজার টাকা।
মেরাদিয়া পশুর হাটের জন্য চারজন দরদাতার মধ্যে শামীম ভূঁইয়া সিডিউল ফরমে কোনো দর উল্লেখ করেননি। অন্য দরদাতাদের মধ্যে সাবা ইন্টারপ্রাইজ সর্বোচ্চ ৫৬ লাখ টাকা দর প্রস্তাব করেন। এ হাটের জন্য মো. শরীফ ৪০ লাখ ১০ হাজার টাকা, ইয়াকুব আলী ৪২ লাখ এক হাজার টাকা দরপ্রস্তাব করেন। ২০১৩ সালে এ হাট সর্বোচ্চ ২৬ লাখ এক হাজার টাকা দরে ইজারা দেওয়া হয়।
সাদেক হোসেন খোকা মাঠের বিপরীতে সিডিউল ৩৫টি বিক্রি হলেও জমা পড়েছে মাত্র ৪টি। এ হাটের জন্য সর্বোচ্চ দর প্রস্তাব করেছেন মো. আলী ৫৬ লাখ ১ হাজার টাকা। এছাড়া আনোয়ার হোসেন ৪৭ লাখ ১০ হাজার টাকা, একলাস উদ্দিন রুবাইয়াত ৩০ লাখ টাকা, বাবু ভূঁইয়া ৫৪ লাখ ৯৪ হাজার টাকা দর প্রস্তাব করেন। ২০১৩ সালে এ হাট ২৭ লাখ এক হাজার টাকা দরে ইজারা দেওয়া হয়।
গোলাপবাগ পশুর হাটের জন্য বিক্রি হওয়া ৯টি সিডিউলের মধ্যে জমা পড়েছে ৭টি। এর মধ্যে এ হাটের জন্য সর্বোচ্চ ১০ লাখ ১০ হাজার টাকা দর প্রস্তাব করেছেন মো. হামিদুল্লাহ। অন্যান্যের মধ্যে নজরুল ইসলাম নিপু দর দিয়েছেন ৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা। হাজী মো. শহিদুল্লাহ দর দিয়েছেন ৬ লাখ টাকা। আনোয়ার আলী মাতবর দর দিয়েছেন ৭ লাখ ২০ হাজার টাকা। মুক্তার হোসেন দর দিয়েছেন ৫ লাখ টাকা, মো. জাফর উল্লাহ দর দিয়েছেন ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা। জমির আলী দর দিয়েছেন ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ২০১৩ সালে এ হাটটি ৬১ লাখ ৬৬ হাজার টাকায় ইজারা দেওয়া হয়।
উত্তর শাহজাহানপুর পশুর হাটের জন্য নুরেন্নবী রাজু দর প্রস্তাব করেছেন ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা, হামিদুল হক শামীম দর দিয়েছেন ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা, কামরুজ্জামান কমল দর দিয়েছেন ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা। ২০১৩ সালে এ হাটটি ৫ লাখ ৫৫ হাজার টাকায় ইজারা দেওয়া হয়।
ধুপখোলা পশুর হাটের জন্য আনোয়ার হোসেন দর দিয়েছেন ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা, হাজী মুহাম্মদ শামসুজ্জোহা ১০ লাখ আট হাজার টাকা দর দিয়েছেন। এস এম হোসেন কাজল দর দিয়েছেন ৪ লাখ টাকা। ২০১৩ সালে এ হাট ইজারা হয় ৯ লাখ ৪৬ হাজার টাকায়।
গোপীবাগ পশুর হাটের জন্য ইলিয়াস খন্দকার দর দিয়েছেন ১৬ লাখ ৫৪ হাজার ৫০০ টাকা। শহিদউদ্দিন আহমেদ ২৫ লাখ ৭২ হাজার ৫০০ টাকা ও সুলতান মিয়া ২৩ লাখ ১৪ হাজার ৫০০ টাকা দর দিয়েছেন। ২০১৩ সালে এ হাটের জন্য সর্বোচ্চ ২১ লাখ টাকায় ইজারা দেওয়া হয়।
পোস্তগোলা পশুর হাটের জন্য হাজী মো. রুবেল দর দিয়েছেন ১০ লাখ ২০ হাজার টাকা, ঢালী মামুনুর রশীদ দর দিয়েছেন ৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা। দেলোয়ার হোসেন দুলাল ৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা ও শাহনুর রহমান গাজী ৯ লাখ টাকা দর দিয়েছেন। ২০১৩ সালে এ হাট ইজারা হয় ৯ লাখ ৬০ হাজার টাকায়।
কামরাঙ্গীরচর ইসলাম চেয়ারম্যানের বাড়ির পাশের নতুন পশুরহাটের জন্য হাজী মো. সোলাইমান কোনো দর উল্লেখ করেননি। এছাড়া হাজী মো. আবুল হোসেন সরকার দর দিয়েছেন এক লাখ দশ হাজার টাকা, মো. হোসেন দর দিয়েছেন ৭০ হাজার টাকা।
ডিএসসিসি’র নতুন আরেকটি হাট লালবাগের হাজী দেলোয়ার হোসেন খেলার মাঠের জন্য তিনজন দরপত্র জমা দেন। এ হাটের জন্য সর্বোচ্চ দর দিয়েছেন শেখ মো. আলমগীর এক কোটি এক লাখ এক হাজার ১০০ টাকা। সাকির আহমেদ দর দিয়েছেন ৮২ লাখ ৫ হাজার টাকা। ইলিয়াস রশীদ দর দিয়েছেন ৬৫ লাখ টাকা।
এ সময় প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. খালিদ আহম্মেদ বলেন, যদি কোনো হাটের দর বিগত দুই বছরের গড়ের সমান না হয় তাহলে পুনরায় দরপত্র আহ্বান করা হবে। এখনও কোনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বাধীন মূল্যায়ন কমিটি বিষয়টি চূড়ান্ত করবেন। –