কিংবদন্তি সম্পাদক আবদুস সালাম গণতান্ত্রিক বিপ্লবের পক্ষে কাজ করেছেন। যে গণতন্ত্রে সংসদীয় গণতন্ত্র উপস্থিত থাকবে। তিনি কখনই সমাজতন্ত্রের পক্ষে কাজ করেননি। তিনি অগণতান্ত্রিক কাজের বিরোধিতা করতেন। গতকাল সাংবাদিক আবদুস সালামের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে আয়োজিত সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। সাংবাদিক আবদুস সালাম স্মৃতি পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমিরেটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিক আবদুস সালামের স্মৃতিচারণ করে বলেন, আবদুস সালাম সাংবাদিকের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠায় সবসময় কাজ করে গেছেন। তিনি অসাধারণ সুন্দর ও সময়োপযোগী সম্পাদকীয় লিখতেন। সেগুলো চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করতো। তিনি সাংবাদিকতাকে একটা মানে নিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি অত্যন্ত সাহসী মানুষ ছিলেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে বেঁচে থাকলে আবদুস সালাম পীড়িত হতেন মন্তব্য করে এই শিক্ষাবিদ বলেন, তিনি যে লেখাগুলো লিখতেন এখন আর সেগুলো লেখা হয় না। রাষ্ট্রের অগণতান্ত্রিক কাজের বিপক্ষে অবস্থান নিতেন। তিনি সাংবাদিকদের মধ্যে যে ঐক্য প্রতিষ্ঠার কাজ করেছিলেন তার চর্চা অব্যাহত থাকলে আজ যে বিতর্কিত সম্প্রচার নীতিমালা হয়েছে তা হত না। আবদুস সালামের বড় মেয়ে বেগম সেতারা মূসা পিতার স্মৃতিচারণ করে বলেন, আমার বাবা সংগ্রাম করেছেন পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে। এজন্য তাকে জেলে থাকতে হয়েছে। তার মনটা খুব নরম ছিল। বিশাল আকাশকে যেমন ধরা যায় না। তার চরিত্রকে তেমন বর্ণনা করে শেষ করা যায় না। সাংবাদিক আমানুল্লাহ কবীর বলেন, বর্তমানে সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্বের চেয়ে রাজনৈতিক কর্মীর ভূমিকায় দেখা যায় বেশি। সকল পেশা রাজনৈতিক বলয়ের ভেতরে প্রবেশ করেছে। অত্যাচার দুর্নীতিতে সমাজ ছেয়ে গেছে। ক্ষমতায় না থাকলে রাজনৈতিক দলগুলো মিডিয়াবান্ধব আচরণ করছে। আর ক্ষমতা পেলে মিডিয়ার শত্রু হয়ে যাচ্ছে। বিএনপির সাবেক নেতা মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান বলেন, সাংবাদিকদের কাজ হচ্ছে জাতির চিত্র জনগণের কাছে তুলে ধরা। বর্তমানে সে কাজ থেকে তারা দূরে সরে যাচ্ছে। অনেকেই রাজনীতির ধারক হয়ে কাজ করছে। সাংবাদিকদের উচিত নেতানেত্রীদের সুপরামর্শ দিয়ে সাহায্য করা। প্রেসক্লাব সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ তার বক্তব্যে সাংবাদিক আবদুস সালামের জীবনী সংক্ষিপ্তভাবে উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, সাংবাদিক আবদুস সালাম একজন অকুতোভয় সম্পাদক ছিলেন। তিনি গণমাধ্যমকে মুক্তভাবে দেখার জন্য কাজ করে গেছেন। তার ইংরেজি সাংবাদিকতা ছিল অতুলনীয়। আলোচনা সভায় বক্তারা তোপখানা রোডের নাম পরিবর্তন করে আবদুস সালাম সড়ক করার দাবি জানান। সেই সঙ্গে নিজ জেলা ফেনীর একটি সড়কের নামও আবদুস সালামের নামে নামকরণ করার দাবি জানানো হয়। সভায় দেশবাংলা পত্রিকার সম্পাদক ড. ফেরদৌস আহমেদ কোরায়শী, বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেসসচিব মারুফ কামাল খান সোহেল, সাংবাদিক আবদুস সালাম স্মৃতি সংসদের সভাপতি রেহানা সালাম, দৈনিক সংবাদের বার্তা সম্পাদক কাজী রফিক, দৈনিক সমকালের প্রধান প্রতিবেদক লোটন একরাম, প্রথম আলোর সাংবাদিক সেলিম জাহিদ, ফটোজার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি মীর আহম্মেদ মীরু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।