টানা বৃষ্টি, পাহাড়ি ঢল ও পূর্ণিমার অস্বাভাবিক জোয়ারে উত্তরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। পানি বন্দী হয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ।
নদীর পানি বাড়তে থাকায় নতুন করে প্লাবিত হয়েছে অনেক গ্রাম। তলিয়ে গেছে ফসলি জমি। ভাঙ্গা বেড়িবাঁধ মেরামত না করায় বন্যা পরিস্থিতির এতোটা অবনতি হচ্ছে বলে মনে করছেন এলাকাবাসীরা।
কুড়িগ্রাম
কুড়িগ্রামে টানা বৃষ্টিতে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। এতে শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। সদর উপজেলাসহ ৯টি ইউনিয়নের প্রায় ৫৮টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এখন পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে নদীগুলোর অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি। এতে বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গাইবান্ধা
উজান থেকে নেমে আসা ঢলে গাইবান্ধার নদ-নদীগুলোতে হঠাৎ করে পানি বাড়তে শুরু করেছে। এতে বন্যার আতঙ্ক বাড়ছে নদী তীরবর্তী জনপদগুলোতে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৫২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে ফুলছড়ি পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদ সীমার ৭৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রায় ৪ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। এতে করে জমির রোপা আমন ধান ও বিভিন্ন সবজিখেত পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি বন্দি এলাকাগুলোতে বিশুদ্ধ পানি, শুকনো খাবার না থাকায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
লালমনিরহাট
লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পের পার্শ্ববর্তী এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। জেলার ১৬টি ইউনিয়নের অন্তত ৮০টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে। ভারত থেকে অতিরিক্ত পানি প্রবেশ করায় ধরলা ও তিস্তার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যার পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ফেনী
টানা বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলের তোড়ে ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার মুহুরী নদী ও কহুয়া নদীর বেড়ী বাঁধের কয়েকটি স্থানে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। এতে অন্তত ২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া ফুলগাজী উপজেলা পরিষদের সামনের ফেনী-পরশুরাম সড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের উত্তর শ্রীপুর, দক্ষিন শ্রীপুর, নিলক্ষী, দেড়পাড়া, বাসুরা, উত্তর দৌলতপুর, দক্ষিন দৌলতপুর, বিজয়পুর, বসন্তপুর, ঘোষাইপুর, বরইয়া, বৈরাগপুর, কমুয়া, বালুয়া, চানপর গ্রাম পানিতে প্লবিত হয়েছে। এতে গ্রামীন সড়কগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে। পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। সদ্য মাঠে লাগানো আমন ফসলও তলিয়ে গেছে পানিতে।