ফরাসি এক ব্যবসায়ীকে বিশাল অংকের ক্ষতিপূরণ পাইয়ে দেয়ার অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল আইএমএফের প্রধান ক্রিস্টিন লগার্ডকে। ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজির সময়ে অর্থমন্ত্রী ছিলেন তিনি। অভিযোগ আছে, ওই সময় ফরাসি এক ব্যবসায়ীকে ৪০ কোটি ইউরো ক্ষতিপূরণ পাইয়ে দেয়ায় ক্রিস্টিন লগার্ডের হাত ছিল। ২০০৭ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিকোলাস সারকোজিকে সমর্থন দিয়েছিলেন বার্নার্ড তাপেই নামের ওই ব্যবসায়ী। ধারণা করা হয়, তারই প্রতিদান দিতে তাকে ওই ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে। এ অভিযোগে ক্রিস্টিন লগার্ডকে বেশ কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে ক্রিস্টিন কোন অনিয়ম করেন নি বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। ব্যবসায়ী বার্নার্ড তাপেই এক সময় স্পোর্টস সামগ্রী প্রস্তুতকারক কোম্পানি এডিডাসের বড় অংকের একজন শেয়ার হোল্ডার ছিলেন। কিন্তু ১৯৯৩ সালে ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া মিতেরাঁ সরকারের মন্ত্রী হওয়ার আশায় তিনি ওই শেয়ার বিক্রি করে দেন। পরে ফুটবলে ম্যাচ ফিক্সিং স্ক্যান্ডালে জড়িয়ে আট মাস জেল খাটেন বার্নার্ড তাপেই। উল্লেখ্য, রাজনীতিতে প্রবেশ করার আগেই তিনি কিনেছিলেন এডিডাসের শেয়ার ও অলিম্পিক মার্সেইলি ফুটবল ক্লাব। ১৯৯৩ সালে এডিডাস বিক্রিতে দুর্নীতি হয়েছে মর্মে অভিযোগ করে তিনি মামলা করেন ক্রেডিট লিওনাইস-এর বিরুদ্ধে। বলা হয়, তারা যথার্থ দামের চেয়ে কম দামে ওই প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছে। এরপরে বার্নার্ড তাপেই এর মামলাটি ক্রিস্টিন লগার্ড পাঠিয়ে দেন তিন সদস্যের একটি আরবিট্রেশন প্যানেলের কাছে। তাপেইকে ক্ষতিপূরণ অনুমোদন করে সেই প্যানেল। তদন্তকারীদের সন্দেহ, যেহেতু নিকোলাস সারকোজিকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বার্নার্ড তাপেই সমর্থন দিয়েছিলেন তারই প্রতিদান হিসেবে তাকে ওই ক্ষতিপূরণ পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে। ওদিকে ২০১১ সালের জুলাইতে আইএমএফের পরিচালকের দায়িত্ব নেন ক্রিস্টিন লগার্ড। ব্যবসায়ী বার্নার্ড তাপেই-এর দীর্ঘদিনের মামলাটি তিনি বিচারকদের একটি প্যানেলে পাঠিয়েছিলেন। সেটাই ছিল তখনকার সময়ে সবচেয়ে ভাল সমাধান। যদিও তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তাতে তার বিচার হওয়া অত্যাবশ্যক নয়, তবুও আইএমএফের মতো প্রতিষ্ঠানে তার মেয়াদ পূর্ণ করা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। এখানে তার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ২০১৬ সালে। ক্রিস্টিন লগার্ড বলেছেন, তার আপাতত আইএমএফ থেকে পদত্যাগের ইচ্ছে নেই।