রিপোর্টঃ‘অরণ্য সাবা’ –
স্বামী বা স্ত্রীকে যা বলবেন বা বলবেননা
আপনার সঙ্গীকে কী বলবেন আর কী বলবেন না সে সম্পর্কে খেয়াল করুন।যে কথাই বলুননা কেন- তা শ্রোতার মনে পক্ষে বা বিপক্ষে ছাপ ফেলে।নির্ধারণ করে আপনাদের সম্পর্কে ও গতিবিধি।
আপনার সঙ্গীর প্রতি সব সময় সুন্দরওশ্রদ্ধাপূর্ণ বাক্য ব্যবহার করুন।গীবত, ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ ও কটূক্তি এড়িয়ে চলুন।
আপনার জীবনসঙ্গী/ সঙ্গিনীকে বিয়ের প্রথম দিন থেকেই দিনে অন্তত একবারবলুন, “আমিতোমাকেভালবাসি”।ও-তো জানেই বা আমি তো আচরণে দেখাচ্ছিই এটা মনে করে এই বলা থেকে বিরত থাকবেননা।
আপনারস্বামী/ স্ত্রীর যোগ্যতার প্রশংসা করুন।পরিবারে তার প্রতিটি অবদানকে অকপটে স্বীকার করুন।
স্বামী/স্ত্রীর ব্যাপারে অহেতুক খুঁতখুঁতে হবেন না।কঠোর ভাষায় কখনো তার ভুল ধরিয়ে দেবেননা।ভুল গুলোকে সময়, সুযোগমতো সুন্দরভাবে বুঝিয়ে দিন।
সঙ্গিনীর গুণাবলি ও তার ভালো দিক গুলো তুলে ধরুন।এতে তিনি ভুল সংশোধনে উদ্বুদ্ধ হতে পারেন।
অন্যের কাছে স্বামী/ স্ত্রীকে ছোট করবেন না বা বদনাম করবেননা।
স্বামী/ স্ত্রীরমা-বাবা বা আত্মীয়দের নিয়ে তাকে খোঁটা দেবেননা।
সম্পর্কের জটিলতায় সব সময় সরাসরি কথা বলুন।কাউকে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করবেননা।নেতিবাচক আবেগে মন তিক্ত হওয়ার আগেই সুযোগ বুঝে সরাসরিকথা বলুন।সম্পর্ক যত সরাসরি হবে, ভুল বোঝাবুঝি তত কমবে।
স্ত্রীর যে কোনো অভিযোগ মনোযোগ দিয়ে শুনুন।কোনো প্রস্তাব বা কথায় প্রথমেই‘না’ বলা থেকে বিরত থাকুন।
“আমি তোমাকে ভালোবাসি”- প্রতিদিন একবার হলেও বলুন
একবারই কেন বলতে হবে? আসলে শুনতে খুব কম মনে হলেও এমন কজন দম্পতি আছেন যারা ক’বছর পরও সংসারে‘ভালোবাসা’টাকে টিকিয়ে রাখতে পারেন? প্রায় সবার জন্যেই ব্যাপারটা অভ্যেসে দাঁড়িয়ে যায়, সংসার পরিণতহয়‘বোঝা’য়।এর পেছনে বহু হাজার কারণ থাকলেও সমাধানের সূত্র কিন্তু কেবল কয়েকটাই:
প্রথমত, প্রত্যাশাকে যুক্তিসঙ্গত রাখুন।‘অতঃপর তাহারা সুখে-শান্তিতে থাকতে লাগলো’ অথবা হিন্দি-সিরিয়ালের মতন চূড়ান্ত ভালোবাসা-বাসি, কেউকাউকে ছেড়ে থাকতে পারেনা–এমন তরয দিভেবে থাকেন তাহলে বলতে হবে আপনার আশা কখনও পূর্ণ হবেনা।কারণ বাস্তবে কক্ষণও এমন হয়না।আবার আপনি যদি ভাবেন যে প্রেম করার সময় যেমন ছিলো আপনার স্বামী/ স্ত্রী এখনো তেমন আচরণ করবে তাহলে ভুল করছেন।কারণ খোঁজ নিয়ে দেখবেন- প্রেমিক পুরুষ আর বিবাহিত স্বামী–এদুয়ে আকাশ-পাতাল তফাত।মেয়েদের বেলায়ও তাই।কারণ প্রেমিকা যত সহজে সব কষ্ট মুখবুজে সহ্য করে- স্ত্রী কিন্তু মোটেও তেমন নন; নাস্তায় একটা বাড়তি পদ চাইলেই তার মেঘ গর্জন শুনতেহয়! তাই অন্যের সীমাবদ্ধতাকে মেনে নিয়ে বাস্তব সম্মত প্রত্যাশা করুন।
আর শুনতে খুব খারাপ শোনালে ও আর্থিক ব্যাপারটা কিন্তু খুব বেশি জরুরি।ঐ যে বলেনা- অভাব যখন সদর দরজা দিয়ে ঢুকে, প্রেম তখন খিড়কি দিয়ে পালিয়ে যায়! একটা মজার ঘটনা ছেপেছিলো রিডার্স ডাইজেস্টে: এক তরুণ ব্যাংক ডাকাতি করতে গিয়ে ধরা পড়ে হাতেনাতে।পুলিশের ডান্ডা খেয়ে সে স্বীকার করে যে, তার প্রেমিকার একটা হীরের আংটির খুব শখ।কিন্তু গরিব বলে সে আংটির টাকা যোগাতে ডাকাতি করতে গিয়েছিলো! ভাগ্যের পরিহাস হলো ঐ ঘটনা শুনে প্রেমিকা তাকে ছেড়ে চলে যায়! অতএব হীরের আবদার করার আগে স্বামীর অবস্থাটা বুঝে নেবেন।প্রত্যাশা যেন পকেটের সাথে মানিয়ে চলে সেখেয়াল রাখবেন।
আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো মনে ক্ষোভ চেপে রাখবেন না।‘ও আমাকে বুঝলোনা’ –এমনটা ভাবতে গেলে সারা জীবনেও আপনার মনো বাসনা পূর্ণ হবেনা।তাই‘ওবুঝবে’ এই আশায় না থেকে তাকে বুঝিয়ে দিন কেমনটা আপনি চাইছেন।
শেষ বেলায় বলি, দাম্পত্য সম্পর্ক কোনো গাণিতিক নিয়মে চলেনা; যেটা অন্য সব সম্পর্কের বেলায় ও সত্য।তাই সব কিছু যে সবার বেলায় খাটবে তেমনটা ভাবা ঠিক নয়।তবে একটা খাঁটি কথা হলো সব ঝামেলার পর ও যদি আপনার স্বামী/ স্ত্রী বোঝেন যে আপনি তাকে ভালোবাসেন তা হলে কোনো সমস্যাই আর বড় হয়ে দাঁড়াবেনা।কিন্তু এর জন্যে কেবল মনে মনে ভালোবাসলেই হবেনা, প্রকাশটাও খুব জরুরি।তাই একটা সহজ উপায় হলো দিনে অন্তত একবার উনাকে বলুন, “আমি তোমাকে ভালোবাসি”।