এন,এইচ,তুহিন / কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লা মহানগরীর শাসনগাছা এলাকায়প্রতিদিনই প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে লক্ষ-লক্ষ টাকার মাদক।রোজ সকাল থেকে গভীররাত পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার লোক মাদক সেবনে আসে এখানে । তবেআইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দৃষ্টি এদিকে নেই বললেই চলে। এখানে বিক্রেতাদেরঅসুবিধা না হলেও সময়-অসময়ে সেবনকারীদের দুর্ভোগের সম্মুখীন হতে হয়।আর লেনদেনে অনিয়ম হয়ে মাঝে মাঝে বিক্রেতারা ধরা পড়লেও বড় অংকের টাকায়দফারফা হয়ে যায়। এতে করে প্রতিদিনই এখানে বাড়ছে মাদক সেবীদের সংখ্যা এবং সেই সাথে দিন-দিন বেড়েই যাচ্ছেছিনতাই, চুরি সহ বিভিন্ন অসামাজিক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড।সরেজমিন ঘুরে বিভিন্ন সূত্রে এ তথ্যে জানা যায়, কুমিল্লা মহানগরীরশাসনগাছা এলাকাটি ৩ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত। দীর্ঘদিন থেকে এ এলাকায় মুচিসম্প্রদায়ের লোকদের বসবাস করার কারণে চোলাই মদ তৈরি হতো এখানে। পাশাপাশিসড়ক থেকে কিছুটা নিরাপদ স্থানে হওয়ায় দিন দিন এখানে মাদক ব্যবসার প্রসারঘটে।বর্তমানে শাসনগাছা রেল-গেট সংলগ্ন এলাকার রেলপথের দু’পাশে কমপক্ষে ৬০/৭০জন মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিকসূত্র জানায়, মূলত শাসনগাছা এলাকায় সব রকমের মাদকই সহজ লভ্য। হাত বাড়ালেএখানে যে সব মাদক পাওয়া যায় তার মধ্যে রয়েছে ইয়াবা, হেরোইন, ফেন্সিডিল, আফিম, পেথেড্রিন, গাঁজা, নেশা জাতীয় বিভিন্ন ট্যাবলেট, ভারতীয় হুইস্কি ওবাংলা মদ।এখানে মাদক ব্যবসায়ী মূলত পাঁচজনের সিন্ডিকেটের। কালি বেগম , দুলাল প্রকাশ (পেটলাদুলাল),মাপুন,ও মোসলেম এই পাঁচ জন হলও সিন্ডিকেটপ্রধান মাদক ব্যবসায়ী । এক সময়ের পরিবহন শ্রমিক দুলাল, আন্তঃজেলা বাস সার্ভিস তিশাপরিবহনের হেলপার মামুন কিংবা সামান্য আয়ের কর্মজীবী রক্কু মিয়ার মেয়ে কালিবেগম বা অর্থকষ্টে থাকা মোসলেম, নান্নু মিয়া সকলেই আজ মাদক ব্যবসা করেবিপুল অর্থের মালিক।প্রত্যেকেরই রয়েছে একাধিক বাড়ি, গাড়ি, প্লট সহ কোটি কোটি টাকার অন্যান্যব্যবসা।সুত্র জানায়, শাসনগাছা এলাকায় যাবতীয় মাদক তারাই বিভিন্ন স্থান থেকেএখানে জড়ো করে বিক্রির জন্য। পরে স্থানীয় ৬০/৭০ জনের একটি দল তাদের কাছথেকে এসব মাদক নিয়ে সেবনকারীদের কাছে বিক্রি করে। তাদের মধ্যে রয়েছে- মোহনীবেগম,মুক্তা বেগম,বিউটি,সালমা,হস্নেয়ারা,রেখা,জিরা বেগম,পাখি,সেলিম,জরিনা,খুকি,ঝুমুর,জামির,ভাঙ্গারী হুমায়ুন,ফারুক মিয়া,কাজল বেগম,কাঠ নুরু,রশিদ মিয়া,জাকির, শুক্কুর,নায়েব আলী,ফারুক মিয়া,দুলালীবেগম,মনা বেগম, কামাল মিয়া,খোদেজা বেগম,চিকা বেগম, দস্যূ রাণী,হারাধন বেগম,রেজ্জাক মিয়া,কাজল,শাহিদা,আনোয়ার মিয়া প্রমূখ।প্রতিদিন এখানে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত জেলার বিভিন্নস্থান থেকেবিভিন্ন শ্রেণীর লোকজন আসে মাদক সেবনে। পুলিশ কিংবা মাদক নিয়ন্ত্রণঅধিদপ্তরের লোকজন এক্ষেত্রে বিক্রেতাদের না ধরলেও প্রায়ই সেবনকারীদের আটকেমামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।মানসম্মানের ভয়ে তারা প্রতিবাদও করতে পারে না। এছাড়াও মাঝে মাঝেবিক্রেতাদের সাথে লেনদেনে অনিয়ম হলেই পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিভাগেরলোকজন তাদের আটক করে। এক্ষেত্রে অবশ্য থানা পর্যন্ত যেতে হয় হনা।স্থানীয়ভাবে পুলিশের দালাল বলে পরিচিত সেলিম, বাচ্চু ও খোরশেদ দু’পক্ষেররফাদফা করে।প্রকাশ্যে মাদক বিক্রির ফলে বর্তমানে এখানে ছিনতাই, চুরি সহ বিভিন্নঅপরাধ বেড়ে গেছে। এলাকার উঠতি বয়সী কিশোর-তরুণরা ঝুঁকে যাচ্ছে মাদক সেবন সহনানা অপরাধে।তাই এ ব্যাপারে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিকট আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছে স্থানীয় এলাকার সচেতন মহল।