মানিকগঞ্জ পৌর এলাকায় নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ করার দাবিতে বিক্ষোভরত এলাকাবাসীকে লাঠিপেটা করেছে পুলিশ। পুলিশের ফাঁকা গুলি, টিয়ার গ্যাসের শেল ও লাঠিপেটায় অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন পৌর মেয়র মো. রমজান আলী। এ ঘটনার প্রতিবাদে জেলায় আগামীকাল সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডাকা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বেলা সোয়া ১১টা থেকে দুইটা পর্যন্ত খালপাড়া এলাকায় দফায় দফায় বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের লাঠিপেটা, ফাঁকা গুলি, টিয়ার গ্যাসের শেল ছোড়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের কয়েক দফা পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে আগামীকাল বুধবার মানিকগঞ্জে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করেছে মানিকগঞ্জ পৌর নাগরিক সমাজ। নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি আজাহারুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশের লাঠিপেটা ও টিয়ার গ্যাসের শেলে অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। এর প্রতিবাদে এই হরতাল আহ্বান করা হয়েছে।’
প্রত্যক্ষদর্শী ও বিক্ষোভরত পৌর এলাকার বাসিন্দাদের ভাষ্য, গ্যাসের দাবিতে মানিকগঞ্জের পৌর মেয়র মো. রমজান আলী বেলা পৌনে ১১টার দিকে পৌরবাসীদের সঙ্গে নিয়ে সমাবেশ করেন। মানিকগঞ্জ সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে (বিজয়মেলা) ওই সমাবেশ হয়। বেলা সোয়া ১১টার দিকে সমাবেশস্থল থেকে প্রায় এক হাজার এলাকাবাসী মানিকগঞ্জে তিতাস গ্যাস কার্যালয় ঘেরাও করার জন্য রওনা হন। সমাবেশ থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করারও ঘোষণা দেওয়া হয়।
তাঁরা আরও জানান, শহরের খালপাড় এলাকায় যাওয়ার পরে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভরত এলাকাবাসীর বাগবিতণ্ডা চলে। দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। একপর্যায়ে উত্তেজিত এলাকাবাসী আশপাশের বেশ কয়েকটি ইজিবাইকে ভাঙচুর চালান। এ সময় পুলিশ আবার লাঠিপেটা করে।
কিছুক্ষণ পরে পৌর মেয়রের নেতৃত্বে বিক্ষোভরত এলাকাবাসী আবারও বাসট্যান্ডের দিকে যান। মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে শহীদ সরণি সড়কে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে তাঁদের আবার বাধা দেয়। পুলিশ এ সময় ফাঁকা গুলি ও বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ার গ্যাসের শেল ছোড়ে।
পৌর মেয়র রমজান আলীর ভাষ্য, পুলিশের লাঠিপেটা, টিয়ার গ্যাসের শেলের আঘাতে প্রায় অধর্শত লোক আহত হন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে নয়জনকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে যাচ্ছিলাম। এ সময় পুলিশ বাধা দেয়। উত্তেজিত জনতা কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে। পুলিশ এমন আচরণ না করলেও পারত।’
মানিকগঞ্জ সদর সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম বেলা একটার দিকে বলেন, পরিস্থিতি এখনো শান্ত হয়নি। নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। তবে বেলা আড়াইটার দিকে পরিস্থিতি অনেকটা শান্ত বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুর রহমানের ভাষ্য, বিক্ষোভকারীদের ছোড়া ইটপাটকেলে ১৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে