৩০টি টাইব্রেকার শটের অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটলো ক্যাপিটাল ওয়ান কাপে। আর এতে মিডলসব্রকে ১৪-১৩ পেনাল্টি গোলে হারিয়েছে লিভারপুল। অ্যানফিল্ডে ক্যাপিটাল ওয়ান কাপের চতুর্থ রাউন্ডের ম্যাচটি ৯০ মিনিটে ১-১ গোলে সমতা ছিল। অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও ২-২ গোলে শেষ হয় ম্যাচটি। ম্যাচের ফল নির্ধারণের জন্য টাইব্রেকারের আশ্রয় নেয়া হয়। আর সেখানেই ঘটে এমন অবিশ্বাস্য ঘটনা। টাইব্রেকারের নিয়ম অনুযায়ী প্রথমে দুই দলের পাঁচজন করে খেলোয়াড় শট নিয়ে থাকেন। তাতে নির্ধারিত না হলে চলতে থাকে শট নেয়া। কিন্তু মঙ্গলবার দুই দলের মধ্যকার টাইব্রেকার শট চলতে থাকে ম্যারাথনের রূপ নিয়ে। লিভারপুলের পক্ষে পাঁচ শটের প্রথমটি নির্ভুল নেন মারিও বালোতেলি। কিন্তু মিডলসব্র’র স্ট্রাইকার বামফোর্ড প্রথম শট বাইরে দিয়ে পাঠিয়ে দেন। অন্যদিকে লিভারপুলের পঞ্চম শটটি নিতে এসে ভুল করে বসেন রহিম স্টার্লিং। কিন্তু নিজেদের পঞ্চম শটটি লিভারপুলের জালে নির্ভুলভাবে পাঠিয়ে দেন মিডলসব্র’র ভসেন। লিভারপুলের প্রথম চারজন এবং মিডলসব্র’র শেষ চারজন কোন শট মিস করেননি। এতে দুই দলের ১০ শট শেষে ফলাফল দাঁড়ায় ৪-৪। এরপর আরও পাঁচটি করে শট নেয় দুই দলের খেলোয়াড়রা। এই পর্বও শেষ হয় ৫-৫ গোলে। তৃতীয়বরের মতো আবারও পাঁচটি করে শট নেয় দুই দল। লিভারপুল পাঁচটি শটই প্রতিপক্ষের জালে জড়িয়ে দেয়। মিডলসব্র’র খেলোয়াড়রাও প্রথম চারটি শট লিভারপুলের জালে জড়ায়। কিন্তু চরম স্নায়ুচাপের মধ্যে শেষ শটটি নিতে এসে গুলিয়ে ফেলেন অ্যালবার্ট অ্যাডোমাহ। তিনি শটটি মিস করলে লাফিয়ে উঠে পুরো অ্যানফিল্ড। লিভারপুল ১৪-১৩ পোল্টি শটে জয় নিশ্চিত করে। উল্লাসে ফেটে পড়ের লিভারপুলের খেলোয়াড়রা। ক্যাপিটাল ওয়ান কাপে সবচেয়ে বেশি পেনাল্টি শট নেয়ার রেকর্ড এখন এটি।
এর আগে মিডলসবরোর বিপক্ষে ম্যাচের ১০ মিনিটেই লিভারপুলকে এগিয়ে দেন জর্ডান রসিটার। অভিষেক মাচেই দলকে এগিয়ে দেন ১৭ বছর বয়সী ইংল্যান্ডের এ মিডফিল্ডার। তবে ৬২ মিনিটে মিডলসবরোকে সমতায় ফেরান অ্যাডাম রিচ। ৯০ মিনিটে ১-১ গোল সমতা থাকার পর অতিরিক্ত সময়ে ১০৯ মিনিটে লিভারপুলকে এগিয়ে দেন সুসো। তবে ম্যাচের একদম শেষ মুহূর্তে পেনাল্টি থেকে মিডলসব্রকে আবারও সমতায় ফেরান প্যাট্রিক ব্যামফোর্ড। এই ব্যামফোর্ডই মিডলসব্র’র হয়ে প্রথম টাইব্রেকার শট নিতে এসে এদিন মিস করেন।
টাইব্রেকারের যত রেকর্ড
* ক্যাপিটাল ওয়ান কাপে এটিই ( ৩০ শট ও ১৪-১৩ গোল) এখন পর্যন্ত সর্বাধিক টাইব্রেকার শট ও গোলের রেকর্ড। এর আগে টাইব্রেকারে সর্বোচ্চ ৯-৮ গোলের রেকর্ড আছে তিনবার। ২০০৪ সালে রদারহ্যামকে আর্সেনাল। আর ১৯৮২ সালে স্টোক সিটিকে ম্যানচেস্টার সিটি ও কলচেস্টারকে অ্যাস্টন ভিলা হারায় ৯-৮ ব্যবধানে।
* ইংলিশ এফএ কাপে সর্বোচ্চ ১১-১০ টাইব্রেকার গোলের রেকর্ড আছে। ২০০১ সালে টুর্নামেন্টের প্রথম রাউন্ডে ফরেস্ট গ্রীনকে এই ব্যবধানে হারায় ম্যাকলসফিল্ড।
* ইংল্যান্ডের যে কোন ফুটবলে টাইব্রেকারে সর্বোচ্চ ২৯ শট ও ১৫-১৪ গোলের রেকর্ড আছে। গত বছর হ্যাম্পশায়ার সিনিয়র কাপে ব্রোকেনহার্টস ১৫-১৪ টাইব্রেকার গোলে হারিয়েছিল অ্যান্ডোভারকে।
* বিশ্ব ফুটবলে সর্বাধিক টাইব্রেকার গোলের রেকর্ড ১৭-১৬। ২০০৫ সালে নামিবিয়ার কাপ ফাইনালে কেকে প্যালেস ১৭-১৬ গোলে হারিয়েছিল সিভিসকে। ম্যাচটি ২-২ গোল ড্র থাকার পর দুই দলের খেলোয়াড়রা টাইব্রেকারে ৪৮টি শট নিয়েছিল।