রোজ রোজ কেবল বিউটি পারলারে ছুটতে হবে? ঘরেই পাবেন সৌন্দর্য চর্চার নানা উপকরণ, আর সৌন্দর্য চর্চার সরঞ্জাম কেনার পেছনে ঢালতে হবে এক গাদা টাকা? না, ব্যাপারটি মোটেও সে রকম নয়, বরং চাইলেই হাতের কাছে থাকা জিনিসপত্র দিয়ে আপনি আপনার রূপচর্চা ও রূপসজ্জার কাজটি সেরে নিতে পারেন অনায়াসে। সেই পরামর্শই দিয়েছেন রূপ বিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা ও আফরোজা পারভীন।
ত্বকের যত্নে
কমলা খাওয়ার পর তার খোসা ফেলে না দিয়ে শুকিয়ে গুঁড়া করে নিন। তার সঙ্গে অল্প দুধ, মধু ও বাইন্ডার হিসেবে আটা/ময়দা বা বেসন মিশিয়ে ১৫-২০ মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখুন। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বক কোমল ও দীপ্তিময় হবে।
লেবুর খোসা
লেবুর খোসা শুকিয়ে চালের গুঁড়ার সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। এটি ভালো ক্লেনজার ও স্ক্রাব হিসেবে কাজ করে।
ডিমের খোসা
ডিমের খোসা গুঁড়া করে তা বেসন অথবা মুলতানি মাটির সঙ্গে মিশিয়ে তাতে সামান্য পরিমাণ দুধ ও মধু দিয়ে মুখে লাগালে ত্বক সুন্দর হয়।
লবঙ্গ পেস্ট করে ব্রণের ওপর লাগিয়ে রাখলে ব্রণও দূর হয়।
জায়ফল পেস্ট
জায়ফল পেস্ট করে তার সঙ্গে দুধ ও ময়দা ভালোভাবে মিশিয়ে ত্বকের দাগে ব্যবহার করলে ভালো ফল পাবেন।
শসার বোঁটার কাছের অংশ
যাঁদের ত্বক তৈলাক্ত তাঁরা শসার বোঁটার কাছের অংশ (খোসাসহ) এবং কমলার খোসা একসঙ্গে ব্লেন্ড করে ব্যবহার করতে পারেন। তাতে ত্বকের ব্রণ কমবে ও উজ্জ্বলতা বাড়বে।
টমেটো ও গাজর
শুষ্ক ত্বকের অধিকারীরা টমেটো ও গাজর একসঙ্গে ব্লেন্ড করে মুখে লাগাতে পারেন। টমেটো ভালো ব্লিচিংয়ের কাজ করে, রোদে পোড়া ভাব দূর করে। গাজর ত্বককে কমনীয় ও উজ্জ্বল করে।
এছাড়াও শসার বিচি, লাল আটা অথবা বেসনের সঙ্গে মিশিয়ে কিছুক্ষণ লাগিয়ে রাখলেও ত্বক সজীব ও উজ্জ্বল হয়। আলু বেটে চোখের ওপর ১০-১৫ মিনিট রেখে দিন। এটি নিয়মিত ব্যবহার করলে চোখের কালি দূর হবে।
ব্যবহৃত টি-ব্যাগ ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে তা চোখের পাতার ওপর কিছুক্ষণ রেখে দিন। চোখের ফোলা ভাব এবং সারা দিনের ক্লান্তি দূর হবে। লেবুর রস চিপে নেওয়ার পরে খোসাটুকু কনুই ও হাঁটুতে ঘষলে অতিরিক্ত কালো ভাব দূর হয়।
পাকা পেঁপের সঙ্গে চিনির মিশ্রণ শরীরের জন্য দারুণ স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে চিনির দানা শক্ত বলে এটি মুখে লাগানো যাবে না।
মেকআপ তুলতে অলিভ অয়েল ব্যবহার করা যেতে পারে। ডালিমের দু-একটি দানা চটকে ঠোঁটে কিছুক্ষণ লাগিয়ে রাখলে ঠোঁটের কালো ভাব দূর হয়।
যাদের পানি নাড়াচাড়ার কাজ বেশি করতে হয়, তারা হাতের কাছে একটি বাটিতে অল্প হলুদের গুঁড়া, ময়দা বা বেসন রেখে দিন। এটি দিয়েই হাত ধুয়ে ফেলুন। এতে হাত নরম ও কোমল থাকবে।
চুলের যত্নে
গোসলের আগে টকদই ও কলা ব্লেন্ড করে কিছুক্ষণ চুলে লাগিয়ে রাখলে চুলের রুক্ষতা দূর হয়। চা বানানোর পর পাতিলে পড়ে থাকা চা-পাতা আরেকবার জ্বাল দিয়ে শ্যাম্পু করার পর ব্যবহার করলে চুল হয় ঝলমলে। কুসুম গরম পানিতে কফি আধা ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে সেই পানি ঠান্ডা করে চুলে ব্যবহার করলে প্রাকৃতিকভাবেই বাদামি চুল পেতে পারেন। লাউয়ের বিচি বেঁটে তা তেলের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করলেও চুল সুন্দর হয়।
রূপসজ্জায়
নেইল আর্টের সময় টুথপিক ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি চিকন তুলির কাজ করবে। চোখে এক পরত মাশকারা লাগানোর পর ব্রাশের সাহায্যে অল্প পরিমাণ বেবি পাউডার পুরো পাপড়িতে লাগিয়ে দিয়ে আরেক দফা মাশকারা লাগান। এতে আপনার পাপড়ি দেখাবে আরও ঘন ও লম্বা।