অতিরিক্তি যাত্রী বহনের কারণে লঞ্চটি হেলে পড়েছে একদিকে। তারপরও প্রায় তিনহাজার যাত্রীর জীবননাশের আশংঙ্কা নিয়ে ঢাকায় যাবেন মাস্টার (লঞ্চ চালক)। শেষ পর্যন্ত বরিশাল বন্দর কর্মকর্তারা লঞ্চটির পিছু নিয়ে সেটিকে ঘাটে আনেন। ঝালকাঠী প্রশাসনের নাকের ডগায় অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল এম ভি ফারহান-৭ নামের একটি লঞ্চ। কীর্তন খোলা নদীতে এসে কাত হয়ে যায় সেটি। আতঙ্কে পুরো লঞ্চ জুড়ে তৈরি হয় লংকাকান্ড। বন্দর কতৃপক্ষ লঞ্চের অবস্থা বেগতিক দেখে বরিশাল ঘাটে ভেড়ানোর নির্দেশ দিলেও তা অমান্য করে ঢাকার উদ্দেশ্যে সেটি চলতে থাকে। কিন্তু বেলতলা খেয়াঘাট পর্যন্ত গিয়ে এটি কাত হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত বন্দর কর্মকর্তারা লঞ্চে গিয়ে সেটি বরিশাল ঘাটে নিয়ে আসেন। অতিরিক্ত যাত্রী বহনের দায়ে লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে ৩০ হাজার এবং লঞ্চের মাস্টারকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এরপর যাত্রী কমিয়ে এটিকে ঢাকা যাবার অনুমিত দেয়া হয়। মঞ্জুর মোর্শেদ নামের এক কলেজ শিক্ষক যিনি ঢাকা যাচ্ছিলেন ঐ লঞ্চে করে। তিনি জানান, ধারণ ক্ষমতার প্রায় চারগুন যাত্রী নিয়ে রওনা হয় লঞ্চেটি। ঝালকাঠি ঘাটে প্রশাসনের কাউকে দেখা যায়নি। লঞ্চটি ছাড়ার পরপরই কয়েকবার কাত হয়। বরিশাল অতিক্রম করার সময় এটি এক দিকে হেলে পড়তে থাকে। এসময় যাত্রীরা আতঙ্কে চিৎকার চেচামেচি শুরু করে। নারী-শিশুরা কান্না জুড়ে দেয়। এসময় মাইকে যাত্রীদের সতর্কভাবে বসার এবং লঞ্চের পাশে না যাবার নির্দেশ দেয়া হয়। এতে আরও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বরিশাল লঞ্চ ঘাট অতিক্রমকালেই এটিতে অতিরিক্ত যাত্রী দেখে থামার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু লঞ্চের মাস্টার সে নির্দেশ উপেক্ষা করে চালাতে থাকে। এসময় বন্দর কতৃপক্ষ পুলিশ নিয়ে একটি স্পিড বোটে করে লঞ্চের পিছু নেয়। বেলতলা খেয়াঘাটের কাছে এসে এটি কাত হতে থাকে। শেষ পর্যন্ত বন্দর কতৃপক্ষ লঞ্চে উঠে সেটিকে বরিশাল ঘাটে নিয়ে আসে।
লঞ্চের মাষ্টার শেখ মো. আমির জানান, এভাবে এত যাত্রী নিয়ে তার পক্ষে পদ্মা মেঘনা পাড়ি দেয়া ছিল অসম্ভব। তিনি জানান, লঞ্চটি কাত হওয়া অবস্থায় বাধ্য হয়ে বরিশাল ঘাটে লঞ্চটি নিয়ে এসেছেন।
সংবাদ পেয়ে ছুটে আসেন পুলিশ প্রশাসন, মেজিস্ট্রেট ও বন্দর কর্মকর্তারা। অতিরিক্ত যাত্রী নামানোর নির্দেশ দেয়া হয়। ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বহন করার দায়ে মেজিস্ট্রেট দিপক কুমার রায় ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন লঞ্চ মালিককে। এছাড়াও কতৃপক্ষের নির্দেশ অমান্য করায় লঞ্চের মাস্টারকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এরপর যাত্রী কমিয়ে লঞ্চটিকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যেতে দেয়া হয়।