পশ্চিম আফ্রিকার পর ইউরোপ ও আমেরিকা এখন এবোলা আতঙ্কে। অন্য দেশগুলোও সংক্রমণ ঠেকাতে অতিরিক্ত সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে। তবে বাংলাদেশে এই ভাইরাস প্রবেশের কোনো আশঙ্কা নেই বলে দাবি করছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
তিনি বলেছেন, ‘আমি নিজেই এই বিষয়টি মনিটরিং করছি এবং আমাদের ২৫টি টিম রাত দিন কাজ করছে। পৃথিবীর উন্নত রাষ্ট্রগুলোতে এবোলা প্রবেশ করলেও বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারবে না। আমেরিকার ডালাসে একজন রোগী শনাক্ত হলে সে দেশেও এখন আতঙ্ক বিরাজ করছে। সেই সঙ্গে স্পেনসহ ইউরোপের দেশগুলোতে এবোলা প্রবেশ করছে। সে ক্ষেত্রে আমরা কিছুটা ভীত হলেও আতঙ্কে নেই।’
মন্ত্রী বলেন, ‘যে কোনো মূল্যেই হোক এই ভাইরাসকে বাংলাদেশে ঢুকতে দেয়া হবে না।’
এবোলা পরীক্ষা করার উন্নত কী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এবোলা পরীক্ষার জন্য উন্নতমানের থারমো স্ক্যান মেশিন ক্রয় করছি। খুব তাড়াতাড়ি আমরা এই মেশিন হাতে পাবো। আমরাসহ বেশ কিছু বিদেশি এনজিও কাজ করছে।’
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ লাইবেরিয়াসহ যেসব দেশে এবোলা আতঙ্ক রয়েছে সেসব দেশ থেকে প্রবাসীরা ফেরার পর কেন স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়নি জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘তারা দেশে এসেছে অনেক দিন হলো। তাদের কথা আমরাও শুনেছি। কমকর্তাদের নির্দেশ দেয়া আছে তারা মনিটরিং করছে।’ সেই সঙ্গে মন্ত্রী গণমাধ্যমকে সজাগ থাকতে অনুরোধ করেছেন।
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে যারা কাজ করছে তাদের বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমার সব সময়ের জন্য সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। তারা আমাকে আশস্ত করেছে তাদের কোনো ত্রুটি নেই। তারা ভালোভাবেই বিষয়টি মনিটরিং করছে।’
এদিকে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মাহমুদুর রহমান বাংলামেইলকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত প্রাণঘাতী এ রোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কোনো ওষুধ আবিষ্কার হয়নি। এ পর্যন্ত একশ থেকে দেড়শ জন যাত্রী বিমানবন্দর দিয়ে আক্রান্ত দেশ থেকে বাংলাদেশে এসেছেন। তাদের পরীক্ষা করার জন্য বাংলাদেশে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই।’
তিনি বলেন, ‘এবোলা দেশে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না- এ কথা শুধু মুখে বললে হবে না। এর জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’
উল্লেখ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) হিসাব অনুযায়ী, পশ্চিম আফ্রিকার দেশ সিয়েরালিওন ও লাইবেরিয়ায় এবোলা ভাইরাসে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্বব্যাপী বিশেষ জরুরি সতর্ক ব্যবস্থা জারি করেছে সংস্থাটি। যেহেতু এ রোগের প্রতিষেধক নেই সেক্ষেত্রে সব দেশকে কঠোরভাবে মনিটরিং করার পরামর্শ দিয়েছে তারা।
অন্য দিকে, সারাবিশ্বে মাত্র ৯টি দেশে ৯টি ল্যাবরেটরিতে এবোলা নিশ্চিত করার পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। এরমধ্যে বাংলাদেশে যদি কোনো লোকের এবোলা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাহলে তার নিশ্চিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টা সিডিসি পরীক্ষাগারে নমুনা পাঠানোর জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।